২০২০-২১ মৌসুম

মহামারিতেও চাঙ্গা হতে পারে বৈশ্বিক শস্য উৎপাদন

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
করোনাকালে অন্যান্য অনেক খাতের মতো বিশ্বজুড়ে কৃষি খাতও বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। শ্রমিক সংকট, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করাসহ আরও নানা বিষয়ে সমস্যায় পড়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এরপরও ২০২০-২১ মৌসুমে বৈশ্বিক শস্য উৎপাদনে চাঙা ভাব বজায় থাকতে পারে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইনস কাউন্সিল (আইজিসি)। প্রতিষ্ঠানটির সাম্প্রতিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ১ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া ২০২০-২১ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ২২৩ কোটি ৭০ লাখ টন শস্য উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ হতে যাওয়া ২০১৯-২০ মৌসুমে বৈশ্বিক শস্য উৎপাদনের সম্মিলিত পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ২১৭ কোটি ৫০ লাখ টন। সেই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে শস্যের বৈশ্বিক উৎপাদন বাড়তে পারে ছয় কোটি টনের বেশি। খবর ওয়ার্ল্ডগ্রেইনডটকম ও এগ্রিমানি। আইজিসির পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২০-২১ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে চাল উৎপাদন আগের মৌসুমের তুলনায় ৪ শতাংশ বাড়তে পারে। এ সময় কৃষিপণ্যটির বৈশ্বিক উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ৫০ কোটি ৫০ লাখ টনে। বিদায়ী মৌসুমে চালের বৈশ্বিক উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ৪৯ কোটি ৬০ লাখ টনে। একই সঙ্গে ২০২০-২১ মৌসুমে চালের বৈশ্বিক ব্যবহার আগের মৌসুমের তুলনায় চাঙ্গা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখছে আইজিসি। আগের মৌসুমের তুলনায় কৃষিপণ্যটির বৈশ্বিক ব্যবহার বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৪৯ কোটি ১০ লাখ টনে। ফলে ২০২০-২১ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে চালের ব্যবহার ও উৎপাদনে উদ্বৃত্ত থাকতে পারে ৪০ লাখ টন। ২০২০-২১ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ভুট্টা উৎপাদন আগের মৌসুমের তুলনায় ৫ শতাংশ বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আইজিসি। এ সময় কৃষিপণ্যটির বৈশ্বিক উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ১১৭ কোটি ২০ লাখ টনে। একই সঙ্গে ২০২০-২১ মৌসুমে ভুট্টার বৈশ্বিক ব্যবহার আগের মৌসুমের তুলনায় ৩ শতাংশ চাঙ্গা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখছে আইজিসি। আগের মৌসুমের তুলনায় কৃষিপণ্যটির বৈশ্বিক ব্যবহার বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১১৭ কোটি ৫০ লাখ টনে। ফলে ২০২০-২১ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ভুট্টার ব্যবহার ও উৎপাদনে ঘাটতি থাকতে পারে ৩০ লাখ টন। উৎপাদন ও ব্যবহারের এ ঘাটতি আগের মৌসুমের মজুত করা ভুট্টা দিয়ে পূরণ করা হতে পারে। ফলে টান পড়তে পারে কৃষিপণ্যটির বৈশ্বিক মজুতে। আইজিসির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২০-২১ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ভুট্টার মজুত আগের মৌসুমের তুলনায় ১ শতাংশ কমে আসতে পারে। কৃষিপণ্যটির বৈশ্বিক মজুত দাঁড়াতে পারে ২৯ কোটি ৬০ লাখ টনে। প্রতিষ্ঠানটির মতে, করোনা মহামারি যত দীর্ঘসময় ধরে অব্যাহত থাকবে, দেশে দেশে ভুট্টার চাহিদা ততই বাড়তির দিকে থাকবে। এ সময় সরবরাহে বড় ধরনের বিঘ্ন না ঘটলে মৌসুমজুড়ে চাঙ্গা থাকতে পারে কৃষিপণ্যটির বাজার পরিস্থিতি। সাম্প্রতিক পূর্বাভাসে আইজিসি জানিয়েছে, বিদায়ী মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ৭৬ কোটি ২০ লাখ টন গম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২০-২১ মৌসুমে কৃষিপণ্যটির বৈশ্বিক উৎপাদন ৬০ লাখ টন বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৭৬ কোটি ৮০ লাখ টনে। একই মৌসুমে বিশ্বজুড়ে গমের ব্যবহার দাঁড়াতে পারে ৭৫ কোটি ১০ লাখ টনে। অর্থাৎ, আসন্ন মৌসুমে গমের বৈশ্বিক উৎপাদন ও ব্যবহার বড় ধরনের উদ্বৃত্ত বজায় থাকতে পারে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে মৌসুমজুড়ে গমের দামও থাকতে পারে নাগালের মধ্যে।