করোনা-পরবর্তী বিশ্ববাণিজ্যের সুবিধার জন্য এফটিএ স্বাক্ষর হচ্ছে

প্রকাশ | ২৪ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্য বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশও তা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। তবে কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্ববাণিজ্যের সুযোগ কাজে লাগাতে আগামী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম এফটিএ স্বাক্ষর করবে ভুটানের সাথে। এরপর পর্যায়ক্রমে বেশ কিছু দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর হবে। ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা অনেক এগিয়েছে। বৃহস্পতিবার যৌথভাবে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম এবং রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইনটিগ্রেশন ফর ডেভলপমেন্টর্(যাপিড়) আয়োজিত 'কোভিড-১৯ অ্যান্ড বাংলাদেশ ইকোনমি' শীর্ষক ভার্চুয়াল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেনর্ যাপিডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক। বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার বিল্ডের চেয়ারম্যান আবুল কাশের খান এবং ডিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট সামস মাহমুদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ওর্ যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আবু ইউসুফ। টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে দ্রম্নত এগিয়ে যাচ্ছিল। বাংলাদেশ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কোভিড-১৯ শেষ হওয়ার পর আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াব, আমরা সেটা পারব। সামনে আমাদের জন্য শুভদিন অপেক্ষা করছে। কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্ববাণিজ্যের সুযোগ কাজে লাগানোর সময় এসেছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, করোনায় পরিবর্তিত এবং প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে অনেক কিছু হবে। চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। জাপান চীন থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। নিজেদের সক্ষমতা ও যোগ্যতা দিয়ে বিশ্ববাণিজ্যে জায়গা করে নেওয়ার সময় এসেছে। সময় নষ্ট না করে দ্রম্নত এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এবং পরবর্তী সময়ে দ্রম্নত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্ব একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এ টাস্কফোর্স কাজ করে যাচ্ছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম এফটিএ স্বাক্ষর করবে ভুটানের সঙ্গে। এরপর পর্যায়ক্রমে ৪২টি দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করব। ইন্দোনেশিয়াসহ ১১টি দেশের সঙ্গে আলোচনা অনেক এগিয়ে গেছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য তৈরি পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। রপ্তানি বাজারে শুধু তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভর করে থাকলে আমাদের চলবে না। দেশের আইটি, ঔষধ, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, সিরামিক, বৈদু্যতিকসামগ্রী রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে, সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতিসম্প্রতি এক্সপোর্ট কম্পেটেটিভনেস ফর জবস ইসিফোরজে প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের মিরসরাই ইকোনমিক জোনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে বেজার ১০ একর জমির ওপর এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে ৫ একর জমির ওপর দুটি টেকনোলজি সেন্টার গড়ে তোলার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ টেকনোলজি সেন্টারে আধুনিক ডিজাইন ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা সম্ভব হবে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তিনি আরও বলেন, আশা করা যায় এ বছরের শেষে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। \হপরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সুযোগ আসতে পারে। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশ সরকার সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে।