করোনার প্রভাবে আস্থার সংকট বাড়ছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে: সমীক্ষা

করোনার প্রভাবে গত ছয় মাসে দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি ধস নামে। এর প্রভাবে পোশাক, টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত শিল্পে সবচেয়ে বেশি হারে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা

প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের প্রভাবে ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের মাঝে মারাত্মকভাবে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই এর সবচেয়ে নেতিবাচক প্রভাব আসে বেসরকারি খাতে। ফলে ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় আস্থা সূচক মাইনাস ১৯ দশমিক ২৭ পয়েন্টে নেমে আসে। অথচ ২০১৮ সালের একই সময়ে বেসরকারি খাতে এই সূচক ছিল পস্নাস ৪৩ পয়েন্ট। বিশেষত এই সময়ে চীন থেকে পোশাকশিল্পসহ রপ্তানিমুখী বিভিন্নখাতের পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় চাহিদা অনুযায়ী কাঁচামাল সরবরাহ কমে যাওয়ায় উদ্যোক্তাদের মাঝে এই আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লাইট ক্যাসল পার্টনার্স (এলসিপি)-এর এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই তথ্য। 'বিজনেস কনফিডেন্স ইনডেক্স-২০১৯-২০' শিরোনামে এই সমীক্ষার প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার অনলাইন পস্নাটফর্মে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে বলা হয়, গত মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ৫৯টি খ্যাতনামা ব্যবসা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে সমীক্ষাটি তৈরি করা হয়। মূল প্রবন্ধে লাইট ক্যাসল পার্টনার্সের পরিচালক জাহিদুল আমিন বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে চলমান অর্থনৈতিক ধাক্কায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে। আলোচনায় অংশ নিয়ে নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের এখন অর্থনীতির নির্দিষ্ট খাতের পরিবর্তে প্রতিটি খাতকে গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা করার সময় এসেছে। তাহলেই আমরা পদ্ধতিগতভাবে সামগ্রিক উন্নয়নের দিকে যেতে পারব। সমীক্ষায় সাক্ষাৎকার প্রদানকারীদের মধ্যে ৮০ শতাংশই মনে করেন, করোনার প্রভাবে গত ছয় মাসে দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি ধস নামে। ৪০ শতাংশ ধারণা করছেন, এর প্রভাবে পোশাক, টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত শিল্পে সবচেয়ে বেশি হারে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা রয়েছে। আলোচনায় এই সংকট কাটিয়ে উঠতে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের কথা উলেস্নখ করা হয়। এগুলো হচ্ছে ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা, বেসরকারি খাতে নিম্নতর ঋণপ্রবাহ, সরকারি সঞ্চয় স্কিমে সুদের হার কমে যাওয়া ইত্যাদি। অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাশরুর রেজা, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এমএসসিআই) সভাপতি নিহাদ কবির, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন লাইট ক্যাসল পার্টনার্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন ইসলাম।