ঊর্ধ্বমুখী দেশের পুঁজিবাজার

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ধারাবাহিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। মূল্যসূচক ও লেনদেন বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস পাড় করেছে দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন লেনদেন শুরু হতেই বেড়ে যায় মূল্যসূচক। মাত্র ১০ মিনিটে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শত কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়। শুরুর এই চাঙাভাব অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ফলে লেনদেন ছাড়িয়ে যায় হাজার কোটি টাকা। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে প্রায় ২০০ পয়েন্ট। লেনদেনে অংশ নেয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। এতে একদিনেই প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার ওপরে বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছে ডিএসই। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বেশিকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। বেশ কয়েকটি দুর্বল কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বাতিল করে দেয়া হয়েছে। অনিয়ম করার বেশকিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন ভূমিকার কারণে বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। বাজারে এখন এসবের ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসছে। যার ইতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারে দেখা যাচ্ছে। এ আস্থা ফেরার ক্ষেত্রে বিএসইসির সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো ভূমিকা রেখেছে। বেশিকিছু কোম্পানির আইপিও বাতিল করা হয়েছে। তা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এর সঙ্গে করোনার প্রকোপও কিছুটা কমে এসেছে। ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হচ্ছে। এসব কিছু মিলেই বাজার ঊর্ধ্বমুখী। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা, যা রোববারের লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ একদিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। মূলধন বাড়ার অর্থ হলো তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে। বড় অঙ্কের বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮০ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৫৪৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারির পর সূচকটির সব থেকে বড় উত্থান হলো। ওইদিন ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ২৩২ পয়েন্ট। এদিকে প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে ডিএসইর অপর দুই সূচকের। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৬৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৫৪০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৫৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সূচক বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। এতে দফায় দফায় দাম বাড়িয়েও অনেক কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারেননি কিছু বিনিয়োগকারী। দাম বাড়ার সীমার সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছাকাছি চলে যায় দুই ডজনের বেশি কোম্পানি। এদিন এক শতাংশের ওপরে দাম বেড়েছে ২৭৭টি কোম্পানির। এর মধ্যে ২৫০টির দাম বেড়েছে ২ শতাংশের ওপরে। ৪ শতাংশের ওপরে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ১৫৪টি। ৯৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশের ওপরে। ৯ শতাংশের ওপরে দাম বেড়েছে ২৬টির। এদিকে সূচকের বড় উত্থানের দিনে হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে ডিএসইর লেনদেন। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১২৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৮৩৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৯২ কোটি ১১ লাখ টাকা।