চতুর্থ শিল্পবিপস্নব প্রেক্ষাপট

মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধির তাগিদ

ডিসিসিআইর ওয়েবিনার

প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
চতুর্থ শিল্পবিপস্নবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য সহায়ক দীর্ঘমেয়াদি নীতিমালা প্রণয়ন, শিক্ষা ব্যবসার যুগোপযোগীকরণ, অবকাঠামো ও মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, শিল্প-শিক্ষার সমন্বয়সহ এ খাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক প্রণোদনা প্রয়োজন। গতকাল এক ওয়েবিনারে এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত 'কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে চতুর্থ শিল্পবিপস্নব :বাংলাদেশ প্রেক্ষিত' শীর্ষক এ ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এছাড়া সম্মানিত অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পরাগ। স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপস্নব নতুন নতুন ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচনার দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যার মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হবে। তবে এ সুবিধা গ্রহণ করতে বাংলাদেশকে সমন্বিত নীতিমালা গ্রহণ এবং তার যথাযথ বাস্তবায়ন একান্ত জরুরি। মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশে চতুর্থ শিল্পবিপস্নব কীভাবে কাজ করবে এবং কীভাবে দেশের মানুষের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়, তার ওপর নির্ভর করে এ বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের শহরাঞ্চলগুলোয় ফাইভজি সুবিধা প্রদান করা যাবে এবং দেশের উদ্যোক্তাদের সহায়তার লক্ষ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোয় ফাইভজি সুবিধা প্রদান করা হবে। এছাড়া তিনি দেশের শিক্ষা কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়ানোর ওপর জোরারোপ করেন। আয়োজিত ওয়েবিনার ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) সহযোগী অধ্যাপক সাজিদ আমিত। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপস্নবের প্রভাব সারা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে পড়ছে এবং শিল্প খাতে বিশেষ করে পণ্য উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও গভর্ন্যান্সের ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন সাধন করেছে। তিনি উলেস্নখ করেন, চতুর্থ শিল্পবিপস্নবের প্রধান বিষয়গুলো হলো, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, ক্লাউড কম্পিউটিং, সাইবার সিকিউরিটি, রোবোটিকস, বিগ ডাটা অ্যান্ড অ্যানালিটিকস, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রভৃতি। চতুর্থ শিল্পবিপস্নবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য দক্ষ মানবসম্পদের কোনো বিকল্প নেই উলেস্নখ করে তিনি আরও বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার আমূল সংস্কার, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উদ্যোক্তা তৈরি ও বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন একান্ত আবশ্যক। ওয়েবিনারে নির্ধারিত আলোচনায় পাঠাওয়ের সভাপতি এবং চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার ফাহিম আহমেদ, এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. সিরাজুল হায়দার, বিজিএমইএর পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড লিডারশিপ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রাশেদুর রহমান, বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ আনোয়ারুল ফাতাহ এবং ইউনিডোর বাংলাদেশস্থ আবাসিক প্রতিনিধি জাকি উজ্জ জামান প্রমুখ যোগদান করেন। ফাহিম আহমেদ বলেন, ৬০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে পাঠাও অ্যাপের মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করছে এবং ঢাকা শহরের পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এ সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। তিনি জানান, গত পাঁচ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ এসেছে এবং এ খাতে বিনিয়োগ আরও বাড়ানোর জন্য মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করতে হবে। মো. সিরাজুল হায়দার বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অ্যাকশন পস্ন্যান প্রণয়নের অংশ হিসেবে উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের লক্ষ্যে 'অনলাইন মার্কেট পেস্নস' তৈরির কাজ করছে এসএমই ফাউন্ডেশন। অধ্যাপক মো. রাশেদুর রহমান বলেন, চতুর্থশিল্পকে ইতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এটা নিয়ে ভয়ের কোনো সুযোগ নেই। তিনি এ শিল্পবিপস্নবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানান। রাশেদুর রহমান বলেন, শিল্প খাতের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রমের আধুনিকীকরণ ও যুগোপযোগীকরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে।