অস্ট্রেলিয়ার গম উৎপাদনে চাঙা ভাব

২০২০ সাল শেষে অস্ট্রেলিয়ায় কৃষিপণ্যটির উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় বাড়তে পারে ৭১ শতাংশের বেশি। বাড়তি উৎপাদনের জের ধরে চলতি বছর দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটির রপ্তানিও আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৮৫ শতাংশ বাড়তে পারে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এমন সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে। খবর এগ্রিমানি ও বিজনেস রেকর্ডার।

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
পরপর তিন বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ার গম উৎপাদন খাতে মন্দাভাব বজায় ছিল। এবার তা কাটতে যাচ্ছে। তিন বছর পর অবশেষে প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরতে পারে দেশটির গম উৎপাদন খাত। ২০২০ সাল শেষে অস্ট্রেলিয়ায় কৃষিপণ্যটির উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় বাড়তে পারে ৭১ শতাংশের বেশি। বাড়তি উৎপাদনের জের ধরে চলতি বছর দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটির রপ্তানিও আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৮৫ শতাংশ বাড়তে পারে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এমন সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে। খবর এগ্রিমানি ও বিজনেস রেকর্ডার। গম উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান নবম। তবে কৃষিপণ্যটির শীর্ষ রপ্তানিকারকদের তালিকায় দেশটি ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। ইউএসডিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গম উৎপাদন হয়েছিল। ওই বছর দেশটিতে কৃষিপণ্যটির সম্মিলিত উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ১৮ লাখ ১৯ হাজার টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪২ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। সেই শেষবার অস্ট্রেলিয়ার গম উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির দেখা মিলেছে। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় সব মিলিয়ে ২ কোটি ৯ লাখ ৪১ হাজার টন গম উৎপাদন হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৪ দশমিক ১৯ শতাংশ কম। মন্দাভাবের ধারাবাহিকতায় পরের বছর দেশটিতে কৃষিপণ্যটির উৎপাদন আরও ১৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৯৮ হাজার টনে নেমে আসে। মূলত প্রতিকূল আবহাওয়ার জের ধরে এই দুই বছর অস্ট্রেলিয়ায় গম উৎপাদন কমেছে। গত বছর ভয়াবহ দাবানলের শিকার হয় অস্ট্রেলিয়ার কৃষি ও বনপ্রধান অঞ্চলগুলো। এর জের ধরে ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় গম উৎপাদন নেমে দাঁড়ায় ১ কোটি ৫২ লাখ টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ কম। ২০১৬ সালে যেখানে অস্ট্রেলিয়ায় ৩ কোটি ১৮ লাখ টনের বেশি গম উৎপাদন হয়েছিল, তিন বছরের ব্যবধানে ২০১৯ সালে দেশটিতে কৃষিপণ্যটির উৎপাদন কমে সাকুল্যে দেড় কোটি টনের কাছাকাছি নেমে এসেছে। তবে চলতি বছর অস্ট্রেলিয়ার কৃষিপ্রধান অঞ্চলগুলোর চমৎকার আবহাওয়া বজায় রয়েছে। বৃষ্টিও হয়েছে পর্যাপ্ত। এর জের ধরে চলতি বছর শেষে দেশটিতে ২ কোটি ৬০ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইউএসডিএ, যা আগের বছরের তুলনায় ৭১ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বেশি। সেই হিসাবে আগের বছরের তুলনায় ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় গম উৎপাদন বাড়তে পারে ১ কোটি ৮ লাখ টন। এর মধ্য দিয়ে টানা তিন বছরের মন্দাভাব কাটিয়ে প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরতে পারে অস্ট্রেলিয়ার গম উৎপাদন খাত। বাড়তি উৎপাদনের জের ধরে চলতি বছর অস্ট্রেলিয়া থেকে গম রপ্তানিতে রেকর্ড হতে পারে। ইউএসডিএর পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ১ কোটি ৭০ লাখ টন গম রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেশি। অস্ট্রেলিয়ার গম রপ্তানি খাতে এটা নতুন একটি রেকর্ড হবে। ২০১৯ সালে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৯২ লাখ টন গম রপ্তানি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউএসডিএ, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, এর আগে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে ২০১১ সালে সবচেয়ে বেশি গম রপ্তানির রেকর্ড হয়েছিল। ওই বছর দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ২ কোটি ৪৬ লাখ ৬১ হাজার টন গম রপ্তানি হয়েছিল। এবার অন্যতম শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ অস্ট্রেলিয়া থেকে রপ্তানি বাড়লে আগামী দিনগুলোয় আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম তুলনামূলক কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান খাতসংশিষ্টরা। তবে কৃষিপণ্যটির মূল্য নির্ধারণে অস্ট্রেরিয়ার তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও আর্জেন্টিনার রপ্তানি পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক বাজারে তুলনামূলক বেশি গুরুত্ব বহন করে।