নভেল করোনাভাইরাসের ধাক্কা

৪ হাজার ৩০০ কর্মী ছাঁটাই সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের

প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কোভিড-১৯ মহামারির জেরে সংস্থার আয় তলানিতে এসে ঠেকায় একসঙ্গে ৪ হাজার ৩০০ কর্মীকে ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করল সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স। এটা উড়োজাহাজ সংস্থাটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ কর্মী ছাঁটাই। খবর রয়টার্স। নভেল করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন বিভিন্ন শিল্প সংস্থা। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো। ধাক্কা সামলাতে না পেরে বেশ কয়েকটি উড়োজাহাজ এরই মধ্যে ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। বেশির ভাগই সীমিত ক্ষমতায় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া কর্মী সংকোচনের কথা ঘোষণা করেছে আরও একাধিক সংস্থা। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের নাম। এক ধাক্কায় ৪ হাজার ৩০০ কর্মীকে ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করেছে তারা, যা সংস্থাটির মোট কর্মী বহরের প্রায় ২০ শতাংশ। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ইতিহাসে এর আগে কখনো একসঙ্গে এত কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়নি। বর্তমানে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স মোট সক্ষমতার ৮ শতাংশ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০২১ সালের ৩১ মার্চ শেষ হওয়া অর্থবর্ষের আগে কোনো অবস্থাতেই সেই সংখ্যাটা ৫০ শতাংশের গন্ডি পার করবে না বলে এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে এই সিঙ্গাপুরভিত্তিক উড়োজাহাজ সংস্থাটি। সিঙ্গাপুরের অভ্যন্তরীণ রুটেও এখনো ফ্লাইট শুরু হয়নি। মহামারির ধকল কাটিয়ে যে দেশগুলো তাদের আকাশসীমা খুলে দিয়েছে, বর্তমানে শুধু সে দেশগুলোয় ফ্লাইট পরিচালনা করছে সিঙ্গাপুর এয়ারলসন্স। এই অনিশ্চিত চ্যালেঞ্জিং সময়ে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে নিজেদের বিমানের বহর ছোট করতে পারে সিঙ্গাপুরের এই বিমান সংস্থা। পাশাপাশি পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিজেদের নেটওয়ার্কও কাটছাঁট করতে পারে তারা। নভেল করোনাভাইরাস মহামারির পর থেকে তীব্র আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে এয়ারলাইন্সটি। তবুও এতদিন পর্যন্ত একজন কর্মীকেও ছাঁটাই করেনি তারা। তবে মহামারির করাল গ্রাস যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে, ততই জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি। উড়োজাহাজ সংস্থাটির ঋণের পরিমাণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অন্যদিকে সংকুচিত হচ্ছে মূলধন। প্রতিকূলতার মধ্যে দাঁড়িয়ে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে বাজার থেকে ১ হাজার ১০০ কোটি সিঙ্গাপুর ডলার সংগ্রহ করেছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স। গত মার্চে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের জন্য ১ হাজার ৩৩০ কোটি ডলারের উদ্ধার প্যাকেজ গ্রহণ করেছিল রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বিনিয়োগ সংস্থা টেমাসেক হোল্ডিংসসহ অন্যান্য ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান। কর্মী ছাঁটাই প্রসঙ্গে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের চিফ এক্সিকিউটিভ এক বিবৃতিতে বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহ এসআইএ গ্রম্নপের জন্য সবচেয়ে কঠিন সময় হতে চলেছে। কারণ আর কয়েক দিন পরে কয়েকজন বন্ধু ও সহকর্মী আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন। তিনি আরও বলেন, যারা চাকরি থেকে ছাঁটাই হতে চলেছেন, তাদের কর্মক্ষমতা ও দক্ষতা কম- এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। কোভিড-১৯ মহামারির জেরে বিশ্বজুড়ে আকস্মিকভাবে এক সংকট দেখা দিয়েছে। যার ধাক্কা এসে লেগেছে আকাশসেবা শিল্পে। ফলে আমাদের বন্ধু ও সহকর্মীদের চাকরির ওপরে কোপ পড়েছে।