সাইবার হামলার শঙ্কা

রাতে বন্ধ থাকবে 'ডিএসই মোবাইল' লেনদেন

প্রকাশ | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সাইবার হামলার আশঙ্কায় রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোবাইল অ্যাপভিত্তিক লেনদেন পস্নাটফর্ম 'ডিএসই মোবাইল' বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিএসই মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীরা শুধু লেনদেনের কার্যদিবসে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারবেন। স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের নেওয়া এ সিদ্ধান্ত রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, এক্সচেঞ্জ, বিনিয়োগকারী এবং জাতীয় বৃহৎ স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিনিয়োগকারীরা আবার ডিএসই মোবাইল অ্যাপ স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। এর আগে উত্তর কোরিয়ার একটি হ্যাকার গ্রম্নপ সাইবার হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করে সব ব্যাংকে চিঠিও পাঠানো হয়। \হকেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কতা জারির পর ব্যাংকগুলো অনলাইন ব্যাংকিং সীমিত ও তদারকি জোরদার করে। এরই অংশ হিসেবে রাতে ব্যাংকের এটিএম বুথ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সতর্কতা তুলে না নেওয়া পর্যন্ত এ ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে বলে ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। জানা যায়, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য আসে, 'বিগল বয়েজ' নামে উত্তর কোরিয়ার একটি হ্যাকার গ্রম্নপ ব্যাংকগুলোতে সাইবার হামলা চালাতে পারে। এর প্রেক্ষিতে ২৭ আগস্ট ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকতে চিঠি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আরোপ করা হয় বাড়তি সতর্কতা, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো ব্যাংক রাত ১০টা, কোনো ব্যাংক ১১টা আবার কোনো কোনো ব্যাংক রাত ১২টা থেকে সকাল ৭টা অথবা ৬টা পর্যন্ত এটিএম সেবা বন্ধ রাখছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলেও জানিয়েছে ব্যাংকগুলো। ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রম্নয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আট কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই অর্থ চুরিতেও উত্তর কোরিয়ার একটি চক্র জড়িত ছিল বলে এরই মধ্যে এফবিআইয়ের তদন্তে বেরিয়ে আসে। বিশ্বব্যাপী ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে লেনদেন করতে সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফিন্যানশিয়াল টেলিকমিউনিকেশন বা সুইফট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। বিশেষ ধরনের বার্তা প্রেরণের মাধ্যমে এই লেনদেন করা হয়। রিজার্ভ চুরির ক্ষেত্রে চক্রটি ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুইফট নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। জানা গেছে, করোনার কারণে সুইফট নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে মর্মে প্রকৃত কোম্পানির ছদ্মবেশ ধরে একই নাম, ওয়েবসাইট, ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহার করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করছে প্রতারকরা। গত এপ্রিলেও একটি বেসরকারি ব্যাংকে তাদের করেসপনডেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর অনুরোধ করে ভুয়া চিঠি পাঠানো হয়। তবে ব্যাংক সতর্ক থাকায় ভেরিফাই করে নিশ্চিত হয় যে চিঠি পাঠানোর বার্তা ছিল ভুয়া এবং সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউকে অবহিত করা হয়।