কয়লার বিকল্প এলএনজি নয়

নবায়নযোগ্য বিদু্যৎ উৎপাদনের তাগিদ সিপিডির

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সরকার কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদন থেকে সরে গিয়ে এলএনজিভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে উলেস্নখ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এলএনজিভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদনে গেলে কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদন থেকে সরে আসার যে উদ্দেশ্য তা বাস্তবায়ন হবে না। পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সরকারের এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নবায়নযোগ্য বিদু্যৎ উৎপাদনে যাওয়া। সোমবার 'বিদু্যৎ উৎপাদনে কয়লা বর্জন : সরকারি উদ্যোগ ও কতিপয় সুপারিশ' শীর্ষক এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ অভিমত দেওয়া হয়। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদন থেকে সরে এসে বিকল্প পদ্ধতি নেওয়ার জন্য একটি প্রস্তাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেছে। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২২টি কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এসব প্রকল্প থেকে ২৩ হাজার ২৩৬ মেগাওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা ছিল। এগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এগুলোতে নতুন করে বিনিয়োগে যাওয়া হবে না, এটি সরকারের অভ্যন্তরীণ অবস্থান। এ রকম একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে আমরা বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। 'সরকারের পুরো ব্যাপারটিকে সাধুবাদ জানাতে পারতাম, যদি কয়লা থেকে এটিকে পূর্ণভাবে ক্লিন এনার্জি যেটাকে আমরা বলি নবায়নযাগ্য জ্বালানিতে যাওয়ার ব্যাপারে নীতি সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো' বলেন খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, আমরা জানতে পারছি ভেতরে এলএনজিভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদনের পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে। এ জায়গাটাতে আমাদের যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে। আপত্তি থাকার কারণ, এর ফলে সরকারের পরিবেশ দূষণ থেকে সরে আসা অথবা ক্লিন এনার্জিতে যাওয়ার যে নীতিগত অবস্থান, সেটি এর মাধ্যমে প্রকাশ পায় না। সুতরাং সরকারের এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কয়লার বদলে কীভাবে সৌরভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদনে যাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, আমরা বিজ্ঞানী নই, তারপরও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, এলএনজির পরিবেশ দূষণের মাত্রা প্রায় কয়লার সমান। সুতরাং এটাকে পরিবেশ দূষণমুক্ত ভাবার সুযোগ নেই। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, প্রত্যাশিত বেসরকারি বিনিয়োগ না হওয়ার কারণে বিদু্যৎ উৎপাদন মাত্রাতিরিক্ত হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি বিনিয়োগের সহায়ক সরকারি যেসব বিনিয়োগ যেখানে বিদু্যতের চাহিদা সৃষ্টি হবে, সেটিও সময় ধরে শেষ করা যাচ্ছে না। সেটিও একটি বিষয়। তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারের নীতি অবস্থানকে গুরুত্ব দেন। যখন তারা দেখতে পান সরকারের মাস্টারপস্ন্যানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রাধিকারের জায়গায় নেই, ওরকম একটি নীতিকাঠামোতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কখনো উচ্চবিনিয়োগ প্রকল্প নিয়ে আসার বিষয়ে আগ্রহ দেখান না। কয়লাভিত্তিক প্রকল্প থেকে সরে এলে ইতোমধ্যে এ খাতে যে বিনিয়োগ হয়েছে তা অপব্যবহার হবে কি না? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রকল্পগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। অনেকগুলোতে জমি উন্নয়নের কাজ হয়েছে। আমরা মনে, করি জমির উন্নয়ন হয়ে গেলে সেখানে খুব সহজে নবায়নযোগ্য জ্বালানির কাজ করা যায়।