ই-কমার্সের মাধ্যমে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে :বাণিজ্যমন্ত্রী

বর্তমানে ৫ থেকে ৬ লাখ টন পেঁয়াজ রয়েছে নতুন পেঁয়াজ ওঠা পর্যন্ত প্রায় চার লাখ টন আমদানি করতে হবে বর্ডারে আটকে থাকা পেঁয়াজ দু-এক দিনের মধ্যে প্রবেশ করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি -ফাইল ছবি
বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে ভারত। এমন খবরে হু হু করে দেশের বাজারে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। একদিনে এ নিত্যপণ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। এ পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করবে সরকার। এ পেঁয়াজ টিসিবির পাশাপাশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে কম দামে বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, বর্তমানে দেশে ৫ থেকে ৬ লাখ টন পেঁয়াজ রয়েছে। আগামী নতুন পেঁয়াজ ওঠা পর্যন্ত আমাদের আরও প্রায় চার লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে। ইতোমেধ্য টিসিবি টার্কি থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খুলে ফেলেছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আগামী ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত টিসিবির মাধ্যমে এক লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করব।' টিপু মুনশি বলেন, 'টিসিবি কখনও বছরে ১০ থেকে ১২ হাজার মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ আনে না। তিন/চার মাস তারা দুই হাজার তিন হাজার টন করে বিক্রি করে। এবার আমরা আগে থেকেই চিন্তা করেছিলাম ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন আনব। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা ভাবছি টিসিবির মধ্যমেই আমরা এক লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করব।' তিনি বলেন, 'জনবল সংকটে টিসিবি একা এসব পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারবে না। তাই আমরা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে পেঁয়াজ বিক্রি করব। আমরা খুব আশাবাদী যে, মাসে অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার টন পেঁয়াজ ই-কমার্সের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করতে পারব। গতবারও টিসিবির আমদানি করা পেঁয়াজ কিন্তু ডিসিদের মাধ্যমেও বিতরণ করেছি। এবার এসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।' বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, 'গতবার টিসিবির বাইরেও বড় বড় ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানি করে যে সহযোগিতা করেছিল সেসব পেঁয়াজও ভর্তুকি দিয়ে আমরা বিক্রি করেছিলাম। এক্ষেত্রে টিসিবির নিয়ম ভেঙে কিছু নতুন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও ওএমএসের ডিলারদের মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়েছিল। এবারও এসব পদ্ধতি অনুসরণ করে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। গতবারের অভিজ্ঞতা এবার আমাদের খুব কাজে লাগছে। এবার আমরা খুব সিরিয়াসলি কাজ করছি।' তিনি বলেন, 'অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রম্নপের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেছি। মেঘনা, সিটি এবং এস আলম গ্রম্নপ গত বছর পেঁয়াজের বিষয়ে সহযোগিতা করেছিল তাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। গতবারের মতো এবারও তারা সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।' এদিকে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় গত রোববার থেকে ৩০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি)। টিসিবির ট্রাক থেকে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ২ কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। তবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রি করা হলে কত টাকা কেজিতে বিক্রি করা হবে সেটা বলেননি বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, 'আমাদের একমাস কষ্ট সহ্য করতে হবে। বর্ডারে আটকে থাকা পেঁয়াজ দুই এক/দিনের মধ্যে প্রবেশ করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য জেল জরিমানা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমার থেকে ১২/১৩শ' টন পেঁয়াজ লোড হয়েছে। যা কিছুদিনের মধ্যে আসবে। একমাস আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে। এক মাসের মধ্যে সাপস্নাই চেইন ফুল করে দেব।'