শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কমিশনের নজরদারিতে এক্সপ্রেস ইন্সু্যরেন্স

যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর এক মাস না পেরোতেই ২০১৯ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিমা খাতের কোম্পানি এক্সপ্রেস ইন্সু্যরেন্সের পর্ষদ। কোম্পানিটির এমন ঘোষণায় বিনিয়োগকারী, স্টেকহোল্ডার এমনকি খোদ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) বিস্মিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় কোম্পানিটির কার্যক্রম নিবিড়ভাবে নজরদারি করছে বিএসইসি।

এ বছরের ২৪ আগস্ট ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল এক্সপ্রেস ইন্সু্যরেন্স লিমিটেড। গত সোমবার কোম্পানিটির ডিজিটাল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর এক মাস না যেতেই কোম্পানিটির এ ধরনের সিদ্ধান্তের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। বিশেষ করে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও গত মাস থেকেই পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় কোম্পানিটির এমন সিদ্ধান্তের ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার কোম্পানিটির কোম্পানিটির কর্মকর্তাদের বিএসইসিতে ডেকেছিল কমিশন। সেখানে কোম্পানিটির কর্মকর্তারা লভ্যাংশ ঘোষণা না করার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তবে কমিশনের পক্ষ থেকে কোম্পানিটির এমন সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি কিভাবে আইনের মধ্যে থেকেই বিনিয়োগকারীদের সন্তুষ্ট করা যায় সে পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

সভা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কমিশনের কাছে কোম্পানিটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন তাদের পর্ষদ সদস্যরা আইপিওতে আসার পরপরই নো ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে পুঁজিবাজারে কি বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে সেটি অনুধাবন করতে পারেননি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আর্থিক বিবরণীর ভিত্তিতে নগদ লভ্যাংশ দেয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। এজন্য তারা নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানও নিয়োগ দেবে বলে কমিশনকে জানিয়েছে।

বিএসইসির একজন কর্মকর্তা জানান, কোম্পানির কর্মকর্তারা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় পদক্ষেপ নেবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। এসময় আমরা তাদের জানিয়েছি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় কোম্পানিটির পর্ষদে কমিশনের পক্ষ থেকে দুজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা হবে। পাশাপাশি কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম কমিশনের নজরদারিতে থাকবে বলেও জানান তিনি।

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য কোনো লভ্যাংশের সুপারিশ করেনি এক্সপ্রেস ইন্সু্যরেন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৩১ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ টাকা ১২ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকা ৪ পয়সা, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১৮ টাকা ৭২ পয়সা।

সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, লভ্যাংশসহ অন্যান্য এজেন্ডা পর্যালোচনা ও অনুমোদনের জন্য আগামী ১৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় ডিজিটাল পস্নাটফর্মে এক্সপ্রেস ইন্সু্যরেন্সের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ অক্টোবর।

সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) এক্সপ্রেস ইন্সু্যরেন্সের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১ কোটি ৭৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ছিল ৮০ লাখ টাকা। এ হিসাবে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৯৪ লাখ ১০ হাজার টাকা বা ১১৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে এক্সপ্রেস ইন্সু্যরেন্সের ইপিএস হয়েছে ৪৫ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২০ পয়সা। আইপিও পরবর্তী শেয়ার হিসাব করলে কোম্পানিটির ইপিএস দাঁড়ায় ২৭ পয়সা।

হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ৩ কোটি ২৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির ইপিএস হয়েছে ৮৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৭৪ পয়সা। আইপিও শেয়ার হিসাবে নিলে প্রথমার্ধে কোম্পানিটির ইপিএস দাঁড়ায় ৫০ পয়সা।

আইপিও-পূর্ববর্তী পেইড-আপ শেয়ার বিবেচনায় নিলে ৩০ জুন এক্সপ্রেস ইন্সু্যরেন্সের এনএভিপিএস দাঁড়ায় ১৮ টাকা ৪৬ পয়সা, আইপিও-পরবর্তী শেয়ার বিবেচনায় যা ১৫ টাকা ৮ পয়সা।

৩০ জুন পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, কোম্পানিটির আইপিও-পূর্ববর্তী শেয়ারের সংখ্যা ৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৪৬৪। আর আইপিওর পর শেয়ারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৫১ লাখ ৯৭ হাজার ৪৬৪।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<112287 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1