মহামারিতে কোরিয়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায় ঘোর আকাল

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
নোভেল করোনাভাইরাস দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পথে বসিয়েছে। মহামারিজনিত অর্থনৈতিক স্থবিরতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশটির ক্ষুদ্র রিটেইলার, আতিথেয়তা ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা। করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ মোকাবিলায় আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে কোরিয়ার রাজধানী সিউলে আরোপ করা হয় কঠোর লকডাউন। এ বিধিনিষেধের কারণে রিটেইল শপগুলোয় ক্রেতাদের আনাগোনায় ধস নামে। গ্রাহক-খরায় ভুগতে শুরু করে একসময়ের জমজমাট ক্যাফেগুলো। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দশা এতটাই রুগ্‌ণ হয়ে পড়েছে যে শেষ পর্যন্ত ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। আসলে কোরিয়ায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রফিট মার্জিন করোনার আগে থেকেই কমতে শুরু করেছিল। দেশটির ক্ষুদ্র আতিথেয়তা খাত আগে থেকেই অতিমাত্রায় সম্পৃক্ত অবস্থায় রয়েছে। অর্থাৎ সেখানে চাহিদার তুলনায় এ খাতে সেবাদানকারীর সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে পড়েছে। এ কারণে কয়েক বছর ধরে সরকারের পক্ষ থেকে কোরীয়দের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে, যেন তারা নতুন করে আর কোনো ফ্রায়েড চিকেন শপ অথবা ক্যাফে না খোলেন। সংকট আগে থেকেই ছিল, কিন্তু তাও তো ব্যবসা কোনোমতে চলছিল। করোনা প্রতিরোধে মধ্য আগস্ট থেকে সিউলে খাবারের দোকানগুলোয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করায় সে ব্যবসাও গেছে। সেখানে রাত ৯টার পর রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কফি ও বেকারি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সেবায়ও বিধিনিষেধের খড়্‌গ নেমে এসেছে। নতুন স্টার্টআপগুলোর জন্য এতসব বিধিনিষেধ মেনে ব্যবসা করাটা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। সবার ব্যবসায় যখন মন্দা, তখন সিউলের দক্ষিণের শহর সুউনের ৫৪ বছর বয়সী 'লিকুইডেশন স্পেশালিস্ট' ইউ ইয়ং-সিকের ব্যবসার রীতিমতো রমরমা অবস্থা। অবশ্য এখনকার সফল ব্যবসায়ী ইউকেও একসময় চরম দুর্দিনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। সসেজ কারখানা ও পুরনো ফার্নিচারের দোকানের ব্যবসায় মার খেয়ে তখন তার জেরবার দশা। কিন্তু সেই ব্যর্থতাকে পুঁজি করেই নতুন এক ব্যবসায় নামলেন তিনি। শুরু করলেন লিকুইডেশন ব্যবসা। অর্থাৎ যারা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে চান তাদের কাছ থেকে পুরনো মালামাল কিনে নেন তিনি। ইউ জানান, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন তার ব্যস্ততা অনেক বেশি। ১০ বছর ধরে এ ব্যবসায় রয়েছেন তিনি। অন্যান্য সময়ের চেয়ে করোনাকালে তার সেবার জন্য কলের সংখ্যা বেড়েছে চার থেকে পাঁচ গুণ। ইউয়ের ভাষ্যমতে, হেয়ার ড্রেসার, বারবিকিউ বুফে ও অন্যান্য ব্যবসা, যেগুলো মূলত পুরোপুরি হিউম্যান কন্টাক্টনির্ভর, করোনার কারণে সেগুলোর দশা সবচেয়ে করুণ। বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্ষুদ্র রিটেইল শপগুলো থেকে যে চেয়ার-টেবিল সংগ্রহ করেন ইউ, সেগুলো তিনি বিক্রি করেন রিসাইকেলড কিচেনওয়্যার শপে।