দেড় মাসে পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগকারী ৪২ হাজার

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দীর্ঘ মন্দা কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার। দুই মাসের বেশি সময় ধরেই বাড়ছে মূল্য সূচক। সেই সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ। ৫০ কোটি টাকায় নেমে যাওয়া লেনদেন এখন হাজার কোটি টাকায় উঠে এসেছে। বাজারের এমন পরিস্থিতিতে ছুটে আসছেন নতুন বিনিয়োগকারীরা। গত দেড় মাসে পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগকারী এসেছেন প্রায় ৪২ হাজার। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ আগস্ট বিও হিসাব ছিল ২২ লাখ ৯৯ হাজার ১৪০টি। যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখ ৪১ হাজার ১৫৯টিতে। অর্থাৎ গত দেড় মাসে বিও হিসাব বেড়েছে ৪১ হাজার ৯০৮টি। এর মধ্যে চলতি সেপ্টেম্বর মাসেই নতুন বিও হিসাব বেড়েছে ২৪ হাজার ১৬৩টি। নতুন যে বিও হিসাব বেড়েছে তার মধ্যে ৪১ হাজার ৭৮৯টিই ব্যক্তি বিনিয়োগকারী। বাকিগুলোর মধ্যে ২২৯টি প্রাতিষ্ঠানিক বিও হিসাব। আর একটি অমনিবাস হিসাব। বর্তমানে ব্যক্তি বিও হিসাব আছে ২৩ লাখ ২৭ হাজার ৭৫৭টি। এর মধ্যে একক বিও হিসাব ১৫ লাখ পাঁচ হাজার ৮৪১টি এবং যৌথ হিসাব আট লাখ ২১ হাজার ৯১৬টি। গত ৩ আগস্ট ব্যক্তি বিও হিসাব ছিল ২২ লাখ ৮৫ হাজার ৯৬৮টি। যার মধ্যে একক বিও হিসাব ১৪ লাখ ৮০ হাজার ৩০৯টি এবং যৌথ হিসাব আট লাখ পাঁচ হাজার ৬৫৯টি। সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে যে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব আছে তার মধ্যে ১৭ লাখ ১৮ হাজার ৭০০টি পুরুষ। বিপরীতে নারীদের বিও হিসাব ছয় লাখ ৯ হাজার ৫৭টি। গত ৩ আগস্ট পুরুষ বিও হিসাব ছিল ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫৬টি এবং নারী বিও হিসাব ছিল ছয় লাখ এক হাজার ৩১২টি। এ হিসাবে পরুষ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩৪ হাজার ৪৪ জন এবং নারী বিনিয়োগকারী বেড়েছে সাত হাজার ৭৪৫ জন। এদিকে, টানা ঊর্ধ্বমুখী ধারা দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। গত সপ্তাহজুড়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা থাকায় টানা ১৩ সপ্তাহ শেয়ারবাজারে উত্থান হয়েছে। শেয়ারবাজারের এমন উত্থান প্রবণতার মধ্যে গত সপ্তাহে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে একচেটিয়া দাপট দেখিয়েছে বিমা খাত। গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় এ খাতেরই রয়েছে ৭টি কোম্পানি। বাকি তিনটির মধ্যে পচা বা 'জেড' গ্রম্নপের প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২টি। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে জেড গ্রম্নপের প্রতিষ্ঠান সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বেড়েছে এক টাকা ২০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা ৯০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ২ টাকা ৭০ পয়সা। হঠাৎ শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও কোম্পানিটির লভ্যাংশের ইতিহাস খুব একটা ভালো না। সর্বশেষ ২০১৬ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয়। এরপর কোম্পানিটি থেকে বিনিয়োগকারীরা আর কোনো লভ্যাংশ পায়নি। এদিকে, পরিচালকদের শেয়ার ধারণের চিত্র দেখে বোঝা যাচ্ছে, কোম্পানিটির প্রতি তাদের খুব একটা দরদ নেই। আইন অনুযায়ী, পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে কমপক্ষে কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হয়। কিন্তু সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলের পরিচালকদের কাছে কোম্পানিটির ২২ দশমিক ১৪ শতাংশ শেয়ার আছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছেই আছে ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ। অবশিষ্ট ১৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। দাম বাড়ার দ্বিতীয় স্থানটি দখল করেছে বিমা খাতের কোম্পানি প্রভাতী ইন্সু্যরেন্স। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ১৫ টাকা ২০ পয়সা বা ৪১ দশমিক ৩০ শতাংশ। পরের স্থানটি দখল করেছে জেড গ্রম্নপের আরেক কোম্পানি ইউনাইটেড এয়ার। পুঁজিবাজারের বহুল আলোচিত এই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এর পরের ছয়টি স্থানই বিমা খাতের দখলে। এর মধ্যে নিটল ইন্সু্যরেন্সের ৩১ দশমিক ৫৯ শতাংশ, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্সু্যরেন্সের ২৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ, এশিয়া ইন্সু্যরেন্সের ২৫ দশমিক ৩১ শতাংশ, জনতা ইন্সু্যরেন্সের ২৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, পিপলস ইন্সু্যরেন্সের ২২ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং গেস্নাবাল ইন্সু্যরেন্সের ২২ দশমিক ৬৪ শতাংশ দাম বেড়েছে। দাম বাড়ার শীর্ষ ১০-এ থাকা অপর প্রতিষ্ঠান মুন্নু সিরামিকের শেয়ার দাম বেড়েছে ২২ দশমিক ১৬ শতাংশ।