প্রথম দিনেই বিক্রেতাশূন্য ওয়ালটন

প্রকাশ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
লেনদেনের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন শুরুর মাত্র পাঁচ মিনিটেই দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে ওয়ালটন হাইটেক পার্ক। এরপরও প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বিজয়ীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। ফলে ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতা উধাও অবস্থায় রয়েছে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া ওয়ালটন হাইটেক পার্কের শেয়ার গতকাল বুধবার থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে। এন গ্রম্নপের আওতায় লেনদেন শুরু হওয়া ওয়ালটন হাইটেক পার্কের ট্রেডিং কোড ধিষঃড়হযরষ এবং কোম্পানি কোড ১৩২৪৮। গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরুর দাম নির্ধারিত ছিল ২৫২ টাকা। তবে প্রথমেই ৩৭৩ টাকা করে ২ হাজার ১১০টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এ দামে কেউ শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর দফায় দফায় দাম বেড়ে এক পর্যায়ে দিনের সর্বোচ্চ দাম ৩৭৮ টাকা করে ১ কোটি ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ২টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। অথচ প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে কোম্পানিটি মাত্র ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩টি সাধারণ শেয়ার ইসু্য করেছে। অর্থাৎ বাজারে কোম্পানিটির যে শেয়ার আছে তার প্রায় চারগুণ বেশি শেয়ার কেনার প্রস্তাব এসেছে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। ওয়ালটনের শেয়ার কিনতে এমন হুমড়ি খেয়ে পড়লেও আইপিও বিজয়ীরা কেউ শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। ফলে ক্রেতা থাকলেও ওয়ালটনের শেয়ারের বিক্রেতা নেই। এদিকে ডিএসইর একটি সূত্র জানিয়েছে, ওয়েবসাইটে ১ কোটি ১৫ লাখ শেয়ার কেনার আদেশ দেখালেও আরও ১ কোটির ওপরে শেয়ার কেনার প্রস্তাব রয়েছে। কিন্তু সিস্টেমের কারণে তা দেখানো যাচ্ছে না। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী, লেনদেনের প্রথমদিন কোনো কোম্পানির শেয়ার দাম ৫০ শতাংশের ওপরে বাড়তে পারবে না। গত ২৩ জুন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশন সভায় কোম্পানিটিকে আইপিওতে শেয়ার ছাড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের ফলে বুক-বিল্ডিং পদ্ধতিতে ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩টি সাধারণ শেয়ার প্রাথমিক পণপ্রস্তাবের মাধ্যমে ইসু্য করছে ওয়ালটন। এর মধ্যে ১৩ লাখ ৭৯ হাজার ৩৬৭টি সাধারণ শেয়ার যোগ্য বিনিয়োগকারীরা বিডিংয়ে তাদের প্রস্তাব করা দামে কিনছেন। বাকি ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৬টি সাধারণ শেয়ার ২৫২ টাকা মূল্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীর (অনিবাসী বাংলাদেশিসহ) নিকট বিক্রির জন্য আইপিও আবেদন সংগ্রহ করা হয়। ৯ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার পেতে আইপিওতে আবেদন করেন বিনিয়োগকারীরা। অর্থাৎ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত ছিল ৩৯ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার। এই শেয়ার পেতে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩৭৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার আবেদন পড়ে। এ হিসাবে আইপিওতে আবেদন বেশি পড়ে ৯ দশমিক ৫৯ গুণ। যে কারণে আইপিও বিজয়ী নির্ধারণে লটারি করতে হয়। ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের খরচ মেটাতে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলনের জন্য গত ৭ জানুয়ারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে বিডিংয়ে অংশ নেওয়ার অনুমোদন দেয়। এ বিষয়ে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম বলেন, বিশ্ব ইলেকট্রনিক্সের বাজারে সেরা গেস্নাবাল ব্র্যান্ড হওয়ার টার্গেট নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ওয়ালটন। এই অগ্রযাত্রায় ওয়ালটন পরিবারের সঙ্গে শামিল হয়েছেন দেশের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তারা শুধু ওয়ালটনের শেয়ার হোল্ডারই নন; ভবিষ্যৎ কার্যক্রম এবং লক্ষ্য পূরণেরও অংশীদার হয়েছেন। তাই শেয়ার হোল্ডারদের পরামর্শকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। তিনি আশ্বস্ত করেন, ওয়ালটনের প্রতিটি হিসাবে স্বচ্ছতা রয়েছে, থাকবে। জানা গেছে, ওয়ালটনের আইপিও আবেদন গ্রহণ করা হয় ৯ থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত ৩৯ কোটি ৩ লাখ টাকার বিপরীতে ৩৭৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার আবেদন জমা পড়ে। যা ৯ দশমিক ৫৯ গুণ বেশি। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লটারি হয় গত ৬ সেপ্টেম্বর।