নতুন দফা মাকির্ন শুল্কের ‘পাল্টা জবাবের’ হুঁশিয়ারি চীনের

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চীনের ২০ হাজার কোটি ডলারের পণ্যে ওয়াশিংটন যদি নতুন করে শুল্ক আরোপ করে, তাহলে পাল্টা জবাব দেবে বেইজিং। এদিকে নতুন করে চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপ বন্ধ করতে ট্রাম্পের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীষর্স্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। খবর গাডির্য়ান ও বøুমবাগর্। গত ৬ জুলাই থেকে ৫ হাজার কোটি ডলার মূল্যের চীনা পণ্যে বহাল ২৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে চলতি সপ্তাহে আরও ২০ হাজার কোটি ডলার পণ্যে শুল্ক আরোপের কথা চলছিল। গত সপ্তাহে বøুমবাগের্র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারেও চীনা পণ্যে নতুন করে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প তার দীঘির্দনের অভিযোগগুলো পুনবর্্যক্ত করেছেন। তিনি মনে করেন, চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া সুযোগের অপব্যবহার করেছে। তিনি বলেন, ‘এখন সময় এসেছে, সেটি বন্ধ করার। আমরা এমনটি চলতে দিতে পারি না।’ ট্রাম্প প্রশাসন কবে নাগাদ এ শুল্ক আরোপ করতে পারে তা নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকেই কানাঘুষা চলছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, গতকালই সেটি আরোপ হতে পারে। কিন্তু সবের্শষ খবর অনুযায়ী, বেইজিংয়ের স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর নাগাদ শুল্ক আরোপ করেনি ওয়াশিংটন। নতুন করে চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের বিষয়ে কানাঘুষার মধ্যে ওই পদক্ষেপ গ্রহণে বিরত থাকার জন্য আবেদন-নিবেদন করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি। বৃহস্পতিবার মাকির্ন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবাটর্ লাইটহাইজারের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে সিসকো সিস্টেমস ইনকরপোরেশন, হিউলেট-প্যাকাডর্ এন্টারপ্রাইজসহ অন্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। তারা আরেক দফা শুল্ক আরোপের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন। প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো মনে করছে, টেলিকমিউনিকেশনস নেটওয়াকির্ং খাতে শুল্ক বাড়ানো হলে ইন্টারনেট ব্যবহার ব্যয়বহুল ঠেকবে এবং পরবতীর্ প্রজন্মের তারবিহীন প্রযুক্তির অগ্রগতি ব্যাহত হবে। লাইটহাইজারের কাছে পাঠানো পৃথক একটি চিঠিতে দেশটির ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশন ও ১৫০টি প্রতিষ্ঠানের একটি জোট অনুযোগ করেছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ম্যানুফ্যাকচারার প্রতিষ্ঠানগুলো মাকির্ন পদক্ষেপ সহজে খাপ খেতে পারছে না। তাছাড়া শুল্ক আরোপ কোনো অথর্বহ সমঝোতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে না। জোটটি বলছে, ‘পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ একটি প্রতিক্রিয়াশীল আচরণ এবং এটি মাকির্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কৃষক, আমদানিকারক, রপ্তানিকারক ও ভোক্তাদের কেবল খরচ বাড়িয়েছে।’ নতুন দফা শুল্ক আরোপের ফলে প্রায় ২৫ হাজার কোটি ডলার মূল্যের চীনা পণ্য ওয়াশিংটনের শাস্তিমূলক শুল্কের আওতায় পড়বে। এতে গেল বছরে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া প্রায় অধের্ক চীনা পণ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদিকে ওয়াশিংটনের নতুন দফা শুল্ক আরোপের হুমকির মুখে বেইজিং বলছে, তারা ৬ হাজার কোটি ডলারের মাকির্ন পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গাও ফেং নিয়মিত হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছেন, নতুন দফা শুল্ক আরোপ হলে চীনও পাল্টা পদক্ষেপ নেবে। বৃহস্পতিবার নিয়মিত সংবাদ বিবৃতিতে এ হুঁশিয়ারি পুনবর্্যক্ত করেন ফেং। নতুন দফা শুল্ক আরোপ প্রসঙ্গে আলোচনার সময়সীমা বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। এর মানে দঁাড়াচ্ছে, যেকোনো মুহূতের্ ওই শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিতে পারবেন ট্রাম্প। প্রথম দফা মাকির্ন শুল্কে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মূলত অ্যারোস্পেস, তথ্যপ্রযুক্তি ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতি খাত। দ্বিতীয় দফা শুল্ক আরোপে ছয় হাজারেরও বেশি চীনা পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হুমকিতে রয়েছে ধাতব ও রাসায়নিক পণ্য থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য, যেমনÑ টয়লেট পেপার, ডিওডোর‌্যান্ট, শ্যাম্পু, আসবাবপত্র, মাছ ও মাংস। দ্বিতীয় দফা মাকির্ন শুল্কের হুমকির মুখে গেল আগস্টে নিজেদের সম্ভাব্য পাল্টা পদক্ষেপের পরিকল্পনা জানিয়েছিল চীন। প্রায় ৬ হাজার কোটি ডলার মূল্যের পাঁচ হাজারেরও বেশি মাকির্ন পণ্যে শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল চীন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা উড়োজাহাজ থেকে শুরু করে যেসব মাকির্ন পণ্য এ পদক্ষেপের শিকার হতে পারে, সেগুলো হচ্ছেÑ সয়াবিন তেল, স্মোকড বিফ, কফি ও ময়দা।