গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরেনি

কাযর্কর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নিরাপদ সড়কের দাবিতে খুদে শিক্ষাথীের্দর আন্দোলনের মুখে গণপরিবহনে নৈরাজ্য ঠেকাতে দিন দশকের সঁাড়াশি অভিযান ও সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নিÑ এমন বিষয় সামনে আসছে, যা নিঃসন্দেহেই উদ্বেগজনক বলেই প্রতীয়মান হয়। তথ্যমতে জানা যায়, গণপরিবহন খাতের অরাজকতাকারীরা ফের আগের মতোই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। চলছে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী ওঠানামা। এরই ধারাবাহিকতায় গণপরিবহন যাত্রীদের ভোগান্তি-হয়রানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল দ্রæত দীঘর্ হচ্ছে। আমরা বলতে চাই যে, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে যত দ্রæত সম্ভব প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী পরিবারের পাশাপাশি সবর্স্তরের মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বাড়ছে। যার প্রভাব আগামী দিনের ভোটের রাজনীতিতে পড়বে বলেও মনে করেন রাজনৈতিক পযের্বক্ষকরা। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, নিরাপদ সড়কের দাবিতে জুলাইয়ের শেষভাগের উত্তাল আন্দোলন সরকার নানা কৌশলে ধামাচাপা দিতে সক্ষম হলেও এ ইস্যুটিই আগামী নিবার্চনে বুমেরাং হয়ে দঁাড়াবে। আমরা বলতে চাই, একটি দেশে একের পর এক সড়ক দুঘর্টনায় তরতাজা প্রাণ ঝরে যাবে, কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করবে, কেউ আবার পরিবারের উপাযর্নক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে সবর্স্বান্ত হয়ে যাবে এটা হতে পারে না। শিক্ষাথীের্দর নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক পযের্বক্ষক ও সুধীজন প্রতিনিধিদের ভাষ্য, গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নৈরাজ্যে সাধারণ মানুষ কতটা ক্ষুব্ধ তা সড়ক আন্দোলনে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফ‚তর্ অংশগ্রহণ ও জোরালো সমথের্ন স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে গণপরিবহনে যে কোনো ধরনের নৈরাজ্য পরিস্থিতি নিরসনে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা উল্লেখ করতে চাই যে, গত ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় ১৪ দলের এক বৈঠকে ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, দীঘির্দন ধরে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য চলে আসছে, নিজেদের খেয়াল খুশিমতো চলছে। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ফেলেছে। তাই সাধারণ ছাত্ররা যে প্রতিবাদ করেছে, তা যৌক্তিক। এ ছাড়া বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আমাদের স্বীকার করতে লজ্জা নেই, আমাদের সরকারের আমলে কিছু অব্যবস্থাপনার কারণে এ পরিবহন সেক্টরে যারা কাজ করে, যারা শ্রমিকদের নেতৃত্ব দেয়Ñ তারা কিন্তু দল-মত নিবিের্শষে একই স্বাথের্ কাজ করে। বাম বলেন, ডান বলেন, এ শ্রমিক পরিবহনের নেতৃত্বে যারা আছে তাদের সরকারি দল, বিরোধী দল বলে কিছু নেই। তারা দীঘর্ কয়েক যুগ ধরে বাংলাদেশের পরিবহন সেক্টরকে এমন এক জায়গায় নিয়ে গেছে যেখানে মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। এখান থেকে আমাদের পরিত্রাণ পেতে হবে।’ আমরা বলতে চাই, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা থাকবে না, সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়বেÑ এমনটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। একদিকে লাশের মিছিল দীঘর্ হতে থাকবে, অন্যদিকে পরিবহন খাতের নৈরাজ্য নিয়ে বাড়তে থাকবে নিত্য-নতুন উৎকণ্ঠা, এমনটি কাম্য হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ করতে হবে এবং পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করার পাশাপাশি নিরসনের উদ্যোগী হতে হবে। ভুলে যাওয়া যাবে না যে, রাস্তাঘাট তথা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন তখনই ফলপ্রসূ হবে, যখন মানুষ নিবিের্ঘœ যাতায়াত করতে পারবে। গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে যত দ্রæত সম্ভব কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।