দুগ্ধ খামারিদের স্বল্প সুদে ঋণ দেবে রূপালী ব্যাংক

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সম্প্রতি রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন এবং মিল্কভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপুর উপস্থিতিতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়েদ উলস্নাহ আল মাসুদ এবং মিল্ক ভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও যুগ্ম সচিব অমর চান বণিক নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন
প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত কৃষি-প্রণোদনার স্বল্প সুদে ঋণ দিচ্ছে রাষ্ট্রয়ত্ত রূপালী ব্যাংক। প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিশেষ করে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দুগ্ধ খামারিদের ৪ শতাংশ হারে ঋণ বিতরণ করছে ব্যাংকটি। এরই অংশ হিসেবে যুবক ও যুব-মহিলাদের আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে মিল্কভিটা ও রূপালী ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তিতে ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন এবং মিল্কভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপুর উপস্থিতিতে সম্প্রতি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়েদ উলস্নাহ আল মাসুদ এবং মিল্ক ভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও যুগ্ম সচিব অমর চান বণিক নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু বলেন, করোনা পরিস্থিতি শুরু হলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কৃষকদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করে গুঁড়া দুধ প্রস্তুত করছে মিল্কভিটা। এসব গুঁড়া দুধ ত্রাণ মন্ত্রণালয় কিনে নিচ্ছে। এর মাধ্যমে কৃষকরা এই দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে উপকৃত হচ্ছে। শেখ নাদির বলেন, খামারিদের দুঃসময়ে মিল্কভিটার পাশে দাঁড়িয়েছে রূপালী ব্যাংক। এই প্রতিষ্ঠানটি সরকারি সহায়তায় পরিচালিত হয়। কখনো ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হয়নি। তিনি বলেন, মিল্কভিটার জন্য গ্রাহক এখনও ৭০ টাকায় প্রতি লিটার দুধ কিনতে পারছেন। এ প্রতিষ্ঠান না থাকলে বেসরকারি কোম্পানিগুলো একচেটিয়া ব্যবসা করত এবং গ্রাহককে দেড়শ থেকে দুইশ টাকায় প্রতি লিটার দুধ কিনতে হতো। রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন বলেন, অতীতে অনেক সমবায় প্রকল্প এসেছে। কিন্তু অধিকাংশ প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে। মিল্কভিটা'ও পঁচাত্তর পরবর্তী সরকারগুলোর সময় অবহেলিত ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে মিল্কভিটার মাধ্যমে দুগ্ধ খাতের বিপস্নব হয়েছে। দেশের দুগ্ধ খাতের উন্নয়নে রূপালী ব্যাংক সবসময় সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করবে। তিনি মতিঝিল এলাকায় মিল্কভিটার আউটলেট খুলতে কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান। ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল বাছেত খান বলেন, দুধ ফেলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি আর যেন সৃষ্টি না হয় সেজন্য রূপালী ব্যাংক সব সময় কাজ করবে। রূপালী ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, কোভিড মহামারি আসার পর দুগ্ধ খামারিরা সমস্যায় পড়েন। তাদেরকে এই সমস্যা থেকে উত্তরণে রূপালী ব্যাংক এগিয়ে এসেছে। দেশকে দুগ্ধ খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে রূপালী ব্যাংক সবসময় পাশে থাকবে। অনুষ্ঠানে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়েদ উলস্নাহ আল মাসুদ বলেন, করোনাকালে খামারিরা দুধ বিক্রি করতে না পেরে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। তখন 'দুধ না ফেলে ঘি বানান, দুগ্ধ খাতে জাগুক প্রাণ'- এই স্স্নোগান সামনে রেখে আমরা দুগ্ধ চাষীদের পাশে দাঁড়ালাম। তিনি বলেন, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে আদা চাষে রেয়াতী সুদে ঋণ প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে রূপালী ব্যাংক। এছাড়া দেশে ক্রমবর্ধমান পেঁয়াজ সংকট মোকাবেলায় টিএমএসএস-এর সাথে যৌথ উদ্যোগে পেঁয়াজ উৎপাদনে ব্যাপক ভিত্তিতে ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রকার মৌসুমি ফল উৎপাদন, বিভিন্ন ফুল উৎপাদন, সবজি উৎপাদন, ডেইরি এবং পোল্ট্ররি খাতে উৎপাদন অব্যাহত রাখার এবং মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে প্রণোদনা সুবিধার আওতায় রূপালী ব্যাংকের সব শাখার মাধ্যমে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। টমেটো চাষিদেরও স্বল্প সুদে সহজ ঋণ দিয়ে যাচ্ছে রূপালী ব্যাংক। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মিল্কভিটার ঢাকা দুগ্ধ কারখানা, বাঘাবাড়ি দুগ্ধ কারখানা ও টেকেরহাট দুগ্ধ কারখানার তালিকাভুক্ত সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে ১ হাজার সদস্যকে ১০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করছে রূপালী ব্যাংক। মাত্র ৪ শতাংশ সুদে প্রতি সদস্যকে ১ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে। এসব ঋণের কর্পোরেট গ্যারান্টর মিল্কভিটা। মিল্কভিটা খামারিদের কাছ থেকে কিস্তির অর্থ সংগ্রহ করে ব্যাংকে জমা দেবে। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন পরিচালক অরিজিৎ চৌধুরী। রূপালী ব্যাংকের ডিএমডি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, খন্দকার আতাউর রহমান ও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, জিএম অশোক কুমার সিংহ রায়, মো. শফিকুল ইসলাম, গোলাম মর্তুজাসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কৃষি ও পলস্নী ঋণ বিভাগের জিএম মো. মজিবর রহমান।