মার্চেন্ট ব্যাংক-ব্রোকারেজ হাউসের জন্য বিশেষ তহবিল চায় বিএসইসি

এই বিশেষ তহবিলের আকার হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এই তহবিল সংগ্রহের দায়িত্বে থাকবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য নেগেটিভ ইকুইটি থাকা মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিশেষ তহবিল চেয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই বিশেষ তহবিলের আকার হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এই তহবিল সংগ্রহের দায়িত্বে থাকবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। যেখান থেকে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য স্বল্পসুদে ঋণ নিতে পারবে। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যালয়ে গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে এ প্রস্তাব দেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কমিশনার অধ্যাপক শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ এবং নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম। বিএসইসির চেয়ারম্যানের দেওয়া প্রস্তাবগুলোর প্রতি নীতিগত সমর্থন জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম এসব তথ্য জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের নেগেটিভ ইকুইটি আছে। এই নেগেটিভ ইকুইটিকে সাপোর্ট করার জন্য এবং বিনিয়োগে হেল্প করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সফট ইন্টারেস্টে বিশেষ তহবিল চেয়েছি।' ব্রোকারেজ হাউস এবং মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর যে পরিমাণ নেগেটিভ ইকুইটি আছে, বিশেষ তহবিলের আকার সেই পরিমাণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে এই ফান্ডের আকার হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার মতো', বলেন বিএসইসির এই নির্বাহী পরিচালক। তিনি বলেন, 'এই বিশেষ তহবিল ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ ম্যানেজ করবে। মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো সেখান থেকে স্বল্পসুদে ঋণ হিসেবে নিতে পারবে।' শেয়ারবাজারে ভয়াবহ দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ফেব্রম্নয়ারিতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্রত্যেকটি ব্যাংকের জন্য ২০০ কোটি টাকার বিশেষ ফান্ড গঠনের সুযোগ দেয়। এরপর একে একে কয়েক মাস পার হয়ে গেলেও এই তহবিল গঠনে ব্যাংকগুলো তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বিএসইসির বৈঠকে এ বিষয়টিও উঠে আসে। ব্যাংকগুলো যাতে দ্রম্নত এই বিশেষ তহবিল গঠন করে সেজন্য বিএসইসির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়। সেই সঙ্গে আইনি সীমার মধ্যে থেকে ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। এ বিষয়ে মাহবুবুল আলম বলেন, 'পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোকে ২০০ কোটি টাকার ফান্ড করার নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। দেখা যাচ্ছে, অনেক ব্যাংক এই ফান্ড গঠন করেনি। ব্যাংকগুলো যাতে তহবিল গঠন করে বিনিয়োগ করতে পারে, সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে।' তিনি বলেন, 'দেশের বাইরে আমরা ব্রোকারেজ হাউসের অনলাইন আউটলেট খোলার চেষ্টা করছি। যাতে বিদেশে যেসব বাংলাদেশিরা আছেন তারা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন এবং দেশে রেমিট্যান্স আসে। এ ক্ষেত্রে ফরেন এক্সচেঞ্জ গাইডলাইনে কোনো বাধা থাকলে তা সমাধান করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।' তিনি আরও বলেন, 'পুঁজিবাজারে জেড গ্রম্নপের যেসব অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের রিস্ট্রাকচার (পুনর্গঠন) করা বা কীভাবে তারা 'জেড' গ্রুপ থেকে রিকভারি করতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া ইনডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরদের সংখ্যা নিয়ে করপোরেট গভর্নেন্স গাইডলাইন কোড এবং ব্যাংক কোম্পানি আইনে কিছু অসামঞ্জস্য আছে। এটা দূর করার আহ্‌বান জানানো হয়েছে।' বিএসইসির এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, 'প্রতিটি বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পজিটিভ এবং তারা নীতিগতভাবে আমাদের সমর্থন দিয়েছেন। বিষয়গুলো এখন তারা খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।'