ফ্রিজ, এসি ও কম্প্রেসর তৈরিতে দীঘের্ময়াদি নীতি সহায়তার দাবি

প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
দেশে ফ্রিজ, এসি ও কম্প্রেসর তৈরিতে দীঘের্ময়াদি নীতি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট খাতের উদ্যোক্তারা। চলতি অথর্বছরের শেষ নাগাদ দেশীয় শিল্পের জন্য সরকার প্রদেয় নীতি ও সহায়তা থাকবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। এ খাতের পূণার্ঙ্গ বিকাশে বিদ্যমান সুবিধা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা। এদিকে দেশে তৈরি কম্প্রেসরের ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট ও শুল্ক বৈষম্য এ শিল্পকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। স্থানীয়ভাবে কম্প্রেসর উৎপাদনে বিদ্যমান ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার এবং কাঁচামাল আমদানিতে ভারসাম্যমূলক শুল্ক আরোপের দাবি জানিয়েছেন তারা। সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে ফ্রিজ এবং এসি উৎপাদন খাত আশানুরূপ উন্নতি সাধন করেছে। মোট চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশ যোগান দিচ্ছেন স্থানীয় উৎপাদকরা। ফ্রিজ এসি উৎপাদনে দেশ প্রায় স্বয়সম্পূণর্; আমদানি না করলেও চলে। এমনকি এসব পণ্য এবং আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ রপ্তানিও হচ্ছে। ২০২০ সাল নাগাদ ১০০ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানির টাগের্ট রয়েছে। তারা আরও জানান, ভ্যাট অব্যাহতি এবং অন্যান্য শুল্ক সহায়তা এ খাতকে বিকশিত করছে। তবে পূণার্ঙ্গ বিকাশে দরকার বিনিয়োগ বাড়ানো। কিন্তু আগামী জুনের পর এ সহায়তা নাও থাকতে পারে। কারণ সবের্শষ দুই বছরের জন্য প্রদেয় সুবিধা আগামী জুনেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। দ্রæত বিকাশমান এ খাতকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করাতে হলে সরকারের এই সহায়তা অব্যাহত রাখার জোর দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। উদ্যোক্তাদের মতে, একসময় ফ্রিজ ও এসির বাজার ছিল পুরোটাই আমদানি নিভর্র। এখন দেশেই এসব পণ্য তৈরি করছে ওয়ালটন, মিনিস্টার, প্রাণ, যমুনার মত কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান। দেশের চাহিদা মিটিয়ে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ফ্রিজ, এসি রপ্তানি হচ্ছে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সম্প্রতি, স্যামসাং এলজিসহ কিছু বহুজাতিক ব্র্যান্ড এদেশে ফ্রিজ, এসি কারাখানা স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ রেফ্রিজারেটর ম্যানুফ্যাকচারাসর্ অ্যান্ড এক্সপোটার্সর্ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, স্থানীয় ফ্রিজ ও এসি উৎপাদন খাতের বিকাশ চলমান রাখতে বিদ্যমান শুল্ক সুবিধা অব্যাহত রাখা জরুরি। শিল্পবান্ধব শুল্ক ও নীতি সহায়তায় আকৃষ্ট হয়েই দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করেছেন। পূণার্ঙ্গ বিকাশের লক্ষ্যে নতুন প্রোডাকশন লাইন স্থাপন, লেটেস্ট প্রযুক্তি সংযোজন, পণ্য গবেষণা ও উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণসহ এ শিল্পের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ আরো বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু, বিদ্যমান শুল্ক সহায়তা অব্যাহত না থাকলে এক্ষেত্রে বিনিয়োগ আসবে না। উদ্যোক্তারা দ্বিধায় রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় পযাের্য় গড়ে উঠা ফ্রিজ ও এসি উৎপাদন শিল্পে আগামি জুন পযর্ন্ত ১৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা রয়েছে। উদ্যোক্তারা চাইছেন, এ শিল্পে দীঘের্ময়াদী সুবিধা ঘোষণা করুক সরকার। তা হলে বিনিয়োগ বাড়বে, রপ্তানিবাজার বাড়বে। দেশের কম্প্রেসর উৎপাদকরা জানান, বিদেশ থেকে সম্পূণর্ তৈরি কম্প্রেসর আমদানিতে সবর্সাকুল্যে ৫ শতাংশ শুল্ক এবং অনেক ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে। অথচ, দেশে যারা কম্প্রেসর উৎপাদন করছেন তাদের দিতে হচ্ছে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। আবার কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক দিতে হচ্ছে ৫ থেকে ২৫ শতাংশ পযর্ন্ত। তার মানে, সম্পূণর্ তৈরি কম্প্রেসর আমদানি শুল্কের চেয়ে দেশীয় উৎপাদিত কম্প্রেসরে শুল্কের পরিমাণ বেশি। অথার্ৎ উৎপাদনের চেয়ে আমদানি লাভজনক। এই অসম ভ্যাট ও শুল্ক কাঠামোকে স্থানীয় কম্প্রেসার উৎপাদন শিল্প বিকাশের পথে বড় বাঁধা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাদের দাবি, স্থানীয় উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হোক এবং ভারসাম্যমূলক শুল্ক আরোপ করা হোক।