গ্রামীণ চাহিদা বাড়ায় ফ্রিজ বিক্রি বাড়ছে

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার কারণে গত পঁাচ বছরে দেশে ফ্রিজ বিক্রি প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। এই সময়ে প্রায় ২৩ লাখ ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে। একই সঙ্গে সরকারের দেশীয় পণ্য উৎপাদনে কর ছাড়ের মনোভাবের কারণেও অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বেড়েছে। চলতি অথর্বছর শেষে ফ্রিজের বাজার ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৭ লাখ ইউনিট বিক্রি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রিফ্রিজেরেটর উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতি। সমিতির সেক্রেটারি জেনারেল সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘অল্প সময়ের ব্যবধানে গ্রাম ও শহরতলিতে দ্রæত ফ্রিজের বাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অন্যতম কারণ হল নতুন নতুন কোম্পানি বাংলাদেশে নিজস্ব কারখানা স্থাপন করেছে। তারা ফ্রিজের পাশাপাশি নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্তদের লক্ষ করে গৃহস্থালি সামগ্রী নিজস্ব ব্রান্ডে বিক্রি করছে। যার কারণে বিক্রি বাড়ছে।’ সাহাবউদ্দিন বলেন, ‘দেশীয় উৎপাদকরা ফ্রিজের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখছে। ফ্রিজের বাজার দ্রæত প্রসার লাভের পেছনে এটা অন্যতম কারণ। গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরহ বাড়া, ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কিস্তির মাধ্যমে ফ্রিজ কেনার সুযোগ বাজার বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।’সরকারি হিসেবে ২০০৯ সালের তুলনায় বিদুৎ উৎপাদন তিন গুণের বেশি বেডেছে। ২০০৯ সালে ছিল তিন হাজার ২৬৮ মেগাওয়াট সেখানে গত বুধবার পযর্ন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন দঁাড়িয়েছে ১১ হাজার ৬২৩ মেগাওয়াট। ২০০৯ সালে ৪৭ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ ব্যবহার করত। এখন সেই সুবিধা পাচ্ছে ৮৪ শতাংশ মানুষ। সবোর্পরি গ্রামের মানুষ এখন তাদের দোরগোড়ায় এসব পণ্য পেয়ে যাচ্ছে। বিক্রি বাড়ার এটাও একটা কারণ হতে পারে। বতর্মানে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ফ্রিজের বাজার ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ট্রান্সকম ইলেকট্রনিক্সের মাকেির্টং ম্যানেজার নাহিদ হাসান বলেন, ‘আগামী দুই বা তিন বছর বাজার বাড়বে। কয়েক বছর আগেও যে মানুষ ফ্রিজ কেনার বিষয়ে চিন্তাও করতো না তারাও এখন কিনছে। এটা সম্ভাব হয়েছে দেশীয় কোম্পানির উৎপাদিত ফ্রিজের দাম কমা, ক্রয়ক্ষমতা বাড়া এবং উন্নত প্রযুক্তির কারণে।’ ২০০৯-১০ অথর্বছরের তুলনায় ২০১৭-১৮ অথর্বছরে মাথাপিছু আয় দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ৮৪৩ মাকির্ন ডলার থেকে বেড়ে এখন মাথাপিছু আয় দঁাড়িয়েছে ১৭৫১ মাকির্ন ডলার। তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ সমাজে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্তদের কাছে ফ্রিজ এখন জীবন ধারণের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। একটা সময় ছিল যখন কেউ একটি ফ্রিজ কিনতো দীঘর্ সময় ব্যবহারের জন্য। আর এখন মাঝে মাঝেই তারা ফ্রিজের মডেল পরিবতর্ন করছে।’ অভ্যন্তরীণ মোট চাহিদার ৯০ শতাংশ পূরণ করছে দেশীয় কোম্পানি বাকি ১০ শতাংশ পূরণ করছে বাকিরা। অভ্যন্তরীণ বাজারে ওয়ালটন, যমুনা, মাসের্ল, মিনিস্টারসহ প্রায় এক ডজন কোম্পানি বতর্মানে ফ্রিজ উৎপাদন ও বিক্রি করছে। জাতীয় রাজস্ব বোডর্ (এনবিআর) বিভিন্ন কর ছাড় দেয়ার পরই অভ্যন্তরীণ ফ্রিজ উৎপাদন ও বাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। এনবিআর দেশীয় এয়ারকন্ডিশনার উৎপাদনের ক্ষেত্রেও একই সুবিধা দিচ্ছে। এই সুবিধার মেয়াদ আগামী বছরের ৩০ জুন শেষ হচ্ছে। তবে আগামী পঁাচ বছর এই সুবিধা দেয়া না হলে এই খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নাহিদ হাসান বলেন, ‘একটি কমেপ্রেসার আমদানি করতে ৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। অথচ যারা এখানে উৎপাদন করতে চাই তাদের কঁাচামাল আমদানিতে ২৫ শতাশ শুল্ক দিতে হয়। দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে এই বৈষম্য দুর করতে হবে। উৎপাদন সহায়তা অব্যহত থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও এক লাখ কমর্সংস্থান সৃষ্টি হবে এ খাতে। একই সঙ্গে রপ্তানিরও সুযোগও বাড়বে।’