এক দশকে প্রথম সংকুচিত জাপানের অর্থনীতি

প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মহামারীর প্রভাবে এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো সংকুচিত হলো জাপানের অর্থনীতি। অবশ্য বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের তুলনায় কমই সংকোচন হয়েছে। বিশেষ করে সরকারের ব্যাপক প্রণোদনা এবং বছরের শেষ নাগাদ রফতানিতে চাঙ্গা ভাব জাপানকে অনেকখানি বাঁচিয়ে দিয়েছে। খবর এএফপি। তবে বিশ্লেষকরা এখনো আশঙ্কা করছেন, নভেল করোনাভাইরাসের নতুন ঢেউ ঠেকাতে সরকারের আরোপিত আপাত কঠোর বিধিনিষেধের কারণে অভ্যন্তরীণ ভোক্তাব্যয় হ্রাস পাবে এবং নির্ধারিত সময়ের ছয় মাসেরও কম সময় আগে টোকিও গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক স্থগিত হয়ে যাওয়া এবং পর্যটকদের জন্য সীমান্ত বন্ধ রাখার কারণে চলতি বছরটি জাপানের অর্থনীতি ততটা মসৃণ হবে না। জাপানের সরকারি তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, গত বছর (২০২০ সাল) বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এ অর্থনীতি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের এই মহাদুর্যোগকালে ২০০৯ সালের পর এটিই সবচেয়ে বেশি বার্ষিক সংকোচন। অবশ্য বস্নুমবার্গের সমীক্ষায় গত বছর জাপানের অর্থনীতি এর চেয়েও বেশি সংকুচিত হওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। সেখানে অক্টোবর-ডিসেম্বর চাঙ্গা রফতানি বাজারের কল্যাণে জাপানের অর্থনীতি আগের প্রান্তিকের চেয়ে বরং ১২ দশমিক ৭ শতাংশ সম্প্রসারিত হয়েছে। এছাড়া মহামারীর শুরু থেকে সরকার নানা প্রণোদনামূলক কর্মসূচিতে প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। অর্থনীতিতে সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ সমর্থনের সুফল এখন দেখতে পাচ্ছে জাপান। এদিকে নতুন এই তথ্য প্রকাশের পর শেয়ারবাজারেও রেকর্ড উলস্নম্ফন দেখা গেছে। গতকাল টোকিওর নিক্কেই ২২৫ সূচক ১ শতাংশেরও বেশি বেড়ে তিন দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো ৩০ হাজারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। জাপানের অর্থনীতিতে এই ইতিবাচক প্রকৃতির বিষয়ে মুডি'স অ্যানালিটিকসের অর্থনীতিবিদ শাহানা মুখার্জি বলেন, চতুর্থ প্রান্তিকে ধারণার চেয়েও ভালো করার পেছনে রয়েছে জাপানের 'স্থিতিস্থাপক বাণিজ্য পরিস্থিতি'। যেখানে রফতানি উলেস্নখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে, সেই সঙ্গে ব্যক্তিখাতের ভোক্তাব্যয়েও সামান্য ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। তিনি বলেন, ২০২০ সালের শেষ কয়েক মাসে জাপানে করোনার তৃতীয় ঢেউ দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি কিছুটা দমিয়ে দিয়েছে। তবে রফতানি বাজারে পুনরুদ্ধার অব্যাহত ছিল এবং এখনো আছে, সেই সঙ্গে ফাইজারের ভ্যাকসিন অনুমোদন আগামী মাসগুলোয় আরো শক্তিশালীভাবে ফিরে আসার সম্ভাবনাই তৈরি করেছে। অন্যান্য দেশের মতো জাপানও ২০২০ সালের শুরুর দিকে ভয়ানক মন্দায় পর্যবসিত হয়। ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপে সরকার বাধ্য হওয়ায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে অত্যন্ত খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে দেশটির অর্থনীতি। এর মধ্যে যুক্ত হয় ২০১৯ সালের ভোক্তা কর। তবে দ্বিতীয়ার্ধে সংক্রমণ বিস্তারের গতি কিছুটা কমে এলে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রাণ ফিরে আসে।