অফশোর ব্যাংকিং ঋণে বাড়তি সতকর্তার নিদের্শ

প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের তুলনায় আমদানিতে বেশি প্রবৃদ্ধির ফলে চাপে রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার। এর মধ্যে মূল ব্যাংক থেকে ডলার নিয়ে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে ঋণ দিচ্ছে কোনো কোনো ব্যাংক। তুলনামূলক কম সুদে এক খাতের নামে ঋণ নিয়ে তা অন্য খাতে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। এ রকম পরিস্থিতি ঠেকাতে ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকিং ঋণে বাড়তি সতকর্তা দেখাতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও অফশোর ব্যাংকিংয়ের ঋণ ধারাবাহিকভাবে বেড়ে গত মাচর্ শেষে ৫৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। সামগ্রিক ব্যাংক ব্যবস্থায় যেখানে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবের্শষ তথ্য অনুযায়ী, গত মাচর্ পযর্ন্ত ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকি ইউনিটের মোট ঋণের পরিমাণ দঁাড়িয়েছে ৫৪ হাজার ১১৩ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময় যা ছিল ৪১ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। এক বছরে ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। দেশে কাযর্রত ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ৩৫টির বতর্মানে অফশোর ব্যাংকিং কাযর্ক্রম রয়েছে। অফশোর ব্যাংকিং হলো বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দেয়ার জন্য গঠিত ব্যাংকের আলাদা ইউনিট। এই ইউনিট থেকে বিতরণ করা ঋণের সবোর্চ্চ ৬ শতাংশ নিতে পারে ব্যাংক। দেশের বাইরে থেকে তহবিল সংগ্রহ করে রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়ার লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে অফশোর ব্যাংকিংয়ের যাত্রা শুরু হয়। তবে অফশোর ব্যাংকিং পরিচালনায় সুনিদির্ষ্ট কোনো নীতিমালা না থাকায় অনেক ব্যাংক মূল ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা তহবিল থেকে অথর্ নিয়ে ঋণ দিচ্ছে। মূলত স্বল্প সুদের সুবিধা নিতেই প্রভাবশালীদের অনেকে অফশোর ইউনিট থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন। অফশোর ব্যাংকিং বিষয়ে একটি নীতিমালা করার উদ্যোগ প্রায় শেষপযাের্য় থাকলেও অদৃশ্য কারণে দীঘির্দন ধরে তা ঝুলে আছে। অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঋণের সবচেয়ে বড় অনিয়মের ঘটনা ধরা পড়ে বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংকে। ব্যাংকটির অফশোর ইউনিট থেকে ঋণের নামে বিদেশে নিবন্ধিত চারটি কোম্পানিকে পঁাচ কোটি ১০ লাখ ডলার সমপরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়। ঋণের সুবিধাভোগীরা ব্যাংকটির প্রভাবশালী পরিচালক বলে জানতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বেনামে দেয়া ঋণের পুরোটাই খেলাপি করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বতর্মানে ব্যাংকটির অফশোর ব্যাংকিংয়ে ২৮৫ কোটি টাকার ঋণখেলাপি রয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি খাতের প্রাইম ব্যাংকের ৮৪ কোটি টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংকের চার কোটি ৭৪ লাখ টাকা এবং বিদেশি উরি ব্যাংকের পঁাচ কোটি টাকার ঋণখেলাপি রয়েছে। সব মিলিয়ে অফশোর ব্যাংকিয়ে মোট খেলাপি রয়েছে ৩৮৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের দশমিক ৭২ শতাংশ।