চালের বৈশ্বিক রপ্তানি বাজার অর্ধেকই ভারতের দখলে

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দোকানে সাজানো বিভিন্ন ধরনের চাল - ফইল ছবি
২০২১ সালে বৈশ্বিক চাল রপ্তানি বাণিজ্যের ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাজার ধরতে পারে ভারত। চীনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ ধান উৎপাদক হলেও চাল রপ্তানিতে শীর্ষ স্থানে রয়েছে ভারত। এতে চলতি বছর দেশটি মোট ২ কোটি ২০ লাখ টন চাল জাহাজীকরণ করতে পারে। যা অন্য তিন শীর্ষ রপ্তানিকারক- থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও পাকিস্তানের সম্মিলিত রপ্তানির সমান। ভারতের প্রথম সারির চাল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ওলাম ইন্ডিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট নীতিন গুপ্ত এ তথ্য জানান। নীতিন বলেন, 'প্রচলিত ক্রেতাদের পাশাপাশি চীন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো ধান উৎপাদনে এগিয়ে থাকা দেশগুলোও এ বছর ভারত থেকে চাল কিনছে। ফলে রপ্তানির পরিমাণ অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বাড়তে পারে'। এর আগে ২০২০ সালে আগের বছরের তুলনায় ৪৯ শতাংশ বাড়ে ভারতীয় চালের রপ্তানি। এ সময় রেকর্ড পরিমাণ বা ১ কোটি ৪৭ লাখ টন রপ্তানি হয়, এর মধ্যে বাসমতি চাল রপ্তানি বাড়ে ৭৭ শতাংশ। ৯৭ লাখ টন রপ্তানির মাধ্যমে এ ক্ষেত্রেও হয় নতুন রেকর্ড। এ প্রেক্ষাপটে চলতি বছরে চালের বিশ্ববাজারে নেতৃত্ব দেওয়ার পথে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি। বন্দরের বাড়তি সক্ষমতা যার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। নীতিন গুপ্ত জানান, গেল বছরের তুলনায় ২০২১ সালে (নন-বাসমতি) সাধারণ চাল রপ্তানি এক কোটি ৮০ লাখ টন বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, একটু বেশি দামের বাসমতি চাল রপ্তানি ৪০ লাখ টন বাড়তে পারে। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিশ্বব্যাপী ৪ কোটি ৮৫ লাখ টন চাল রপ্তানি বাণিজ্যের আভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয়। এদিকে গত বছরের মার্চ থেকে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের তুলনায় ভারতীয় চালের দর ক্রমেই কমেছে। একই সময়ে বাড়তে থাকে খাদ্য পণ্যটির বৈশ্বিক চাহিদা। তবে বিপুল মূল্যছাড়ে ২০২০ সাল থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি অব্যাহত রেখেছে ভারত। তবে দেশটির চাল রপ্তানির প্রধান বন্দর কাকিনাদা অ্যাঙ্কোরেজে অবকাঠামো সীমাবদ্ধতার কারণে জাহাজ জটের সৃষ্টি হয় গত বছর। এ সময় অন্য সরবরাহ উৎসে চলে যায় অনেক ক্রেতা। ভারতীয় চাল ব্যবসায়ীরা জানান, ক্রেতা ধরে রাখতে অন্য প্রতিযোগী রপ্তানিকারকদের তুলনায় ভারত টনপ্রতি ১০০ ডলারের বিশাল ছাড় দিয়েছে। তবে আমদানিকারকরা সময়মতো চালান না পাওয়ায় তাদের বিপুল ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছে, যা মূল্যছাড়ের প্রায় পুরো লাভটাই শূন্যে নামিয়ে আনে। এদিকে জট কমাতে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ চলতি বছরের শুরু থেকে থেকে কাকিনাদা বন্দরের পার্শ্ববর্তী একটি গভীর সমুদ্র বন্দরকে চাল বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক তথ্যানুসারে, ২০২১ সালের প্রথম সাত মাসে প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ ৪০ হাজার টন চাল রপ্তানি করেছে ভারত। যা গেল বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৫ শতাংশ বেশি। দেখা গেছে ভারতের অধিকাংশ সাধারণ চাল রপ্তানি হয় এশিয়া ও আফ্রিকার দেশ। আর দামি বাসমতি চালের প্রধান ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো।