পোশাক খাতে বড় বিনিয়োগ আসছে না

য় ২০১৩ সালের পর সাব কন্ট্রাক্ট কাজের জন্য নতুন কারখানা স্থাপন হয়নি য় বড় বড় শিল্প গ্রæপ তাদের কারখানা সম্প্রসারণ করছে

প্রকাশ | ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ওবায়দুর রহমান
শতভাগ রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পে নতুন উদ্যোক্তা আসছেন না। কমর্পরিবেশ নিরাপদ করার শতর্ মেনে স্বল্প মূলধনে কারখানা স্থাপন কঠিন হয়ে পড়ায় নতুন উদ্যোক্তাদের ইচ্ছা থাকা সত্তে¡ও বড় বিনিয়োগে শিল্প স্থাপনে অনাগ্রহ তাদের। পোশাকখাত উদ্যোক্তারা জানান, তাজরিন ফ্যাশনের অগ্নিকাÐ এবং রানা প্লাজা ধসসহ বেশ কয়েকটি দুঘর্টনার পর বিদেশি ক্রেতা এবং ব্রান্ডের প্রতিনিধিরা ছোট কারখানায় ক্রয়াদেশ দিচ্ছেন না। অনিরাপদ কমর্পরিবেশের অভিযোগে এবং দুঘর্টনা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে তারা এ ধরনের কারখানায় ক্রয় আদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। জানতে চাইলে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, যদিও সাবকন্ট্রাক ব্যবসা তৈরি পোশাক শিল্পে নিষিদ্ধ হয়নি। তবে ওইসব কারখানার কমর্পরিবেশ অব্যশই নিরাপদ হতে হবে। নিরাপদ কমর্পরিবেশ নিশ্চিত করে একটি কারখানা স্থাপন অনেক ব্যয়সাপেক্ষ। যার কারণে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বড় বিনিয়োগ কঠিন হয়ে পড়েছে। সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বতর্মানে ছোট কারখানার অনিরাপদ কমর্পরিবেশের কারণে সাবকন্ট্রাকের কাজ তাদের দেয়া হচ্ছে না। শুধু ক্রেতা রাজি হলে বড় কারখানায় সাবকন্ট্রাকটিং কাজ হচ্ছে। রানা প্লাজা ধসের পর কোনো নতুন সাবকন্ট্রাকটিং ইউনিট তৈরি হয়নি। শুধু কমর্পরিবেশের দিক থেকে নিরাপদ বড় কারখানায় এ ধরনের কাজ হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূল কাযাের্দশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে এমন কাজ হচ্ছে। তিনি জানান, কেউ এখন ছোট আকারের কারখানা স্থাপন এবং বিজিএমইএ’র সদস্য হতে চাইলে তাকে কঠোর নিরীক্ষা এবং পরিদশের্নর মধ্যে দিয়ে আসতে হয়। এখন ক্রেতার শতর্ অনুযায়ী একটি কমপ্লাইন্স কারখানা স্থাপন খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কম মূলধন এবং স্বল্প পরিচালন ব্যয়ের কারণে সাবকন্ট্রাকটিং নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখে। তৈরি পোশাক শিল্পে বড় উদ্যোক্তা হওয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে অনেকেই সাবকন্ট্রাকটিং শুরু করেন। বিজিএমইএ সূত্রে জানা যায়, রানা প্লাজা ধসের পর ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কমর্পরিবেশ উন্নতি বা সংস্কার কাজ না করতে পারায় ১২০০ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ২০১০-১১ অথর্বছরে পঁাচ হাজার ১৫০টি সদস্য কারখানা ছিল। ২০১২-১৩ অথর্বছরে সেটি বেড়ে পঁাচ হাজার ৮৭৬টিতে দঁাড়িয়েছিল। কিন্তু রানা প্লাজা ধসের পর আমেরিকা এবং ইউরোপের ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্সে এবং অ্যাকডের্র পরিদশের্নর পর অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এদের মধ্যে সাবকন্ট্রাকটিং করত এমন কারখানার সংখ্যাই বেশি। মাত্র এক বছর পরেই বিজিএমএমইএ সদস্য সংখ্যা কমে দঁাড়ায় চার হাজার ২২২টিতে। তবে ২০১৭-১৮ অথর্বছরে বড় কিছু শিল্প গ্রæপ তৈরি পোশাক শিল্পে নতুন বিনিয়োগ করে এবং নতুন কারখানা স্থাপন করে। যার ফলে এ বছরে বিজিএমইএ সদস্য কারখানার সংখ্যা কিছুটা বেড়ে দঁাড়ায় চার হাজার ৫৬০টিতে। বাংলাদেশ পলিসি রিসাসর্ ইন্সটিটিউটের নিবার্হী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, সাবকন্ট্রাকটিং এর ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুই দিকই রয়েছে। প্রথমত এটি কাজের সময় কমিয়ে আনতে সহায়তা করে। দ্বিতীয়ত অদক্ষ এবং আধা দক্ষ শ্রমিকদের কমর্সংস্থানের সুযোগ তৈরি করে। অন্যদিকে, খারাপ দিকটি হলো কমর্পরিবেশ নিরাপদ করার জন্য এ ধরনের কারখানাগুলোর কোনো উদ্যোগ ছিল না। এটি এ শিল্পে বড় দুযোের্গর জন্য দায়ী। তিনি বলেন, সাব কন্ট্রাক্টিংয়ের বিষয়ে কোনো নিদেির্শকা না থাকয় কমর্পরিবেশ নিরাপদের বিষয়টি শুধু ক্রেতার চাহিদার উপর নিভর্র করে। তবে সাব কন্ট্রাক্টিং চালু না থাকলে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে না। শুধুমাত্র বড় কারখানা মালিকরাই তাদের ব্যবসা এবং বিনিয়োগ বাড়াবে।