প্রাথমিক শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন পেল রানার

প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডকে ১০০ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলনে প্রাথমিক শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত মঙ্গলবার ৬৬৩তম কমিশন সভা শেষে নিবার্হী পরিচালক মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসি জানায়, প্রায় ১০০ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলনের জন্য রানার অটোমোবাইলসকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৩০ হাজার ৩৪৮টি সাধারণ শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। প্রাথমিক শেয়ারগুলোর মধ্যে কোম্পানিটি ৮৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩৩টি শেয়ার ৭৫ টাকা দরে যোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের (ইআই) অনুকূলে ইস্যু করবে। বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় বিডিংয়ে প্রান্তসীমা মূল্য বা কাট অফ প্রাইস নিধার্রণ হয়েছিল ৭৫ টাকা। অবশিষ্ট মূলধন উত্তোলনে ১০ শতাংশ বাট্টায় ৬৭ টাকা দরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অনুকূলে ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ১৫টি শেয়ার ইস্যু করবে কোম্পানিটি। কমিশন আরো জানিয়েছে, উত্তোলিত মূলধন গবেষণা-উন্নয়ন, যন্ত্রপাতি ক্রয়, ব্যাংকঋণ পরিশোধ ও আইপিও প্রক্রিয়ার ব্যয় নিবাের্হ খরচ হবে। ২০১৭ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের আথির্ক বিবরণী অনুযায়ী, পুনমূর্ল্যায়নসহ রানার অটোমোবাইলসের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ৫৫ টাকা ৭০ পয়সা, পুনমূর্ল্যায়ন ছাড়া যা ৪১ টাকা ৯৪ পয়সা। শেয়ারপ্রতি মুনাফার (ইপিএস) পাঁচ বছরের ভারিত গড় ৩ টাকা ৩১ পয়সা। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস এবং রেজিস্ট্রার টু দ্য ইস্যু লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। নিরীক্ষক হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানি। প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে রানার অটোমোবাইলসের বিডিং সম্পন্ন হয়। বতর্মানে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বরাদ্দের প্রক্রিয়া শুরু করবে কোম্পানি কতৃর্পক্ষ। এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবরে বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানির সাবির্ক অবস্থা তুলে ধরতে রোড শো আয়োজন করে রানার অটোমোবাইলস। সেখানে কোম্পানির চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান জানান, নিজস্ব ইঞ্জিন নম্বর ও চেসিস নম্বর ব্যবহার করে দেশে রানারই প্রথম মোটরসাইকেল ম্যানুফ্যাকচার করে। ৮০ থেকে ১৫০ সিসি সেগমেন্টের বিভিন্ন মডেলের মোটরসাইকেল উৎপাদন ও বাজারজাত করছে তারা। এর মধ্যে ১০০ সিসির কম সক্ষমতার মোটরসাইকেলের বাজারে তাদের একক আধিপত্য। স্থানীয় ও আন্তজাির্তক বাজারের ক্রমবধর্মান চাহিদার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে নতুন মডেলের মোটরসাইকেল ও স্কুটার তৈরির পাশাপাশি বিদ্যমান মডেলগুলোর মান আরো বাড়াতে চায় রানার। প্রসঙ্গত, গত বছর থেকে নেপালের বাজারে মোটরসাইকেল রফতানি করেছে রানার। স¤প্রতি বাংলাদেশ সরকার শুধু রফতানি বাজারের জন্য ৫০০ সিসি মোটরসাইকেল উৎপাদনেরও অনুমোদন দিয়েছে কোম্পানিটিকে। দেশে ইউএম ব্র্যান্ডের বেশ কয়েকটি মডেলের মোটরসাইকেল উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইউনাইটেড মোটরসের সঙ্গে একটি চুক্তি রয়েছে রানার অটোমোবাইলসের। মোটরসাইকেল ব্যবসার বাইরে রানার গ্রুপের ফ্লাগশিপ কোম্পানিটি এখন দেশের বাজারে ভারতীয় বাজাজ অটোর থ্রি হুইলারের পরিবেশক হিসেবেও কাজ করছে। রানার অটোমোবাইলসের দুটি সাবসিডিয়ারি রয়েছে। এর মধ্যে রানার মোটরস লিমিটেডের ৬১ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ার এবং ফ্রিডম মোটরস লিমিটেডের ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার রানার অটোমোবাইলসের হাতে। রানার মোটরস বাংলাদেশে ভলভো-আইশারের বাণিজ্যিক যান বিপণন করছে, যে ব্যবসার বাষির্ক প্রবৃদ্ধি প্রায় ৩০ শতাংশ। ময়মনসিংহের ভালুকায় নিজস্ব কারখানা কমপ্লেক্সে ভলভো আইশারের বাণিজ্যিক যান সংযোজনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে কোম্পানিটি।নিভর্রযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরে রানার অটোমোবাইলসের অনিরীক্ষিত ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৯১ পয়সা। সাবসিডিয়ারিসহ হিসাব করলে ২০১৪-১৮ সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি গড়ে ২৭ দশমিক ১ শতাংশ হারে বেড়েছে। সদ্যসমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরে কোম্পানির সম্মিলিত বাষির্ক বিক্রি প্রায় ৫৭ শতাংশ বেড়ে হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। মূল প্রতিষ্ঠান রানার অটোর বাষির্ক বিক্রি ৭৪ শতাংশের বেশি বেড়ে ৪২০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।