পুঁজিবাজারে বড় উত্থান

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

ম অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বৈঠকের পর বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়েছে। এ দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক একশ পয়েন্টের ওপরে বেড়ে যায়। শুরুর এ বড় উত্থান লেনদেনের পুরো সময়জুড়েই অব্যাহত থাকে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেরও (সিএসই) সবকটি সূচকের বড় উত্থান হয়। এক দিনেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ১৪৩ পয়েন্ট। আর সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক বেড়েছে ৩৮৩ পয়েন্ট। এর আগে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হয়। টানা আট দিনের দরপতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৩৮৮ পয়েন্ট পড়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বৈঠকে বসে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বৈঠক শেষে বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের নিয়ে কিছু আইনগত অস্পষ্টতা রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিএসইসি-বাংলাদেশ ব্যাংক উভয়পক্ষ এ বিষয়ে আন্তরিক। তাদের কারও সঙ্গে কারও কোনো মতবিরোধ নেই। তিনি বলেন, বৈঠকে তার মনে হয়েছে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক খুবই আন্তরিক। যে কারণে তারা বন্ডে বিনিয়োগকে বিনিয়োগসীমার বাইরে রাখার অঙ্গীকার করেছেন। এছাড়া বিনিয়োগসীমা গণনায় বাজারদরের পরিবর্তে কস্ট প্রাইসকে বিবেচনায় নেওয়ার যে দীর্ঘদিনের চাহিদা রয়েছে, সেটাও তারা সমাধান করবে। এ জন্য যা করণীয় তারা তাই করবেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আপনারা বাজার নিয়ে হতাশ হবেন না। বাজার ভালো করার জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমরা উভয় রেগুলেটরি বডি ভালো বাজারের জন্য যা যা করা দরকার তা করে যাব।' পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে এমন বক্তব্য আসার পর বুধবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স একশ পয়েন্টের ওপরে বেড়ে যায়। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সূচকের এ বড় উত্থান প্রবণতা অব্যাহত থাকে। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৪৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৮৪৭ পয়েন্টে ওঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৭৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৫৮৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্‌ সূচক ৩২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৩৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। দিনভার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৯৩ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৫টির। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১০২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ১৪৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৪৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১২২ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওয়ান ব্যাংকের ১১৩ কোটি ১১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ডেল্টা লাইফ ইন্সু্যরেন্স, একমি পেস্টিসাইড, আইএফআইসি ব্যাংক, জিনেক্স ইনফোসিস, ওরিয়ন ফার্মা, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল এবং ফরচুন সুজ। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৮৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৬৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৬টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।