বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিএসইসির নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ ২৪ কোম্পানি

ম যাযাদি রিপোর্ট
  ২০ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ২৪ কোম্পানি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে।

৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য ২৫ কোম্পানিকে সময় বেঁধে দিয়েছিল বিএসইসি। কিন্তু এই বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে মাত্র একটি কোম্পানি ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে। বাকি ২৪ কোম্পানিই কমিশনের নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে।

বিএসইসির নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় ২৪ কোম্পানির বিরুদ্ধে পরবর্তী করণীয় বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এই ক্ষেত্রে যেসব কোম্পানি ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য ইচ্ছুক, তাদের বিএসইসি থেকে সহায়তা করা হবে। আর যারা ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে কোনো আগ্রহই নেই, তাদের বিষয়ে ভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের চিন্তাভাবনা করছে বিএসইসি।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২৫ কোম্পানির মধ্যে কেবল ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অ্যাডভেন্ট ফার্মার উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা পরিপালন করেছে। বাকি ২৪ কোম্পানির মধ্যে ১১ কোম্পানি এই নির্দেশনা পরিপালনে আগ্রহী বলে জানিয়েছে। এ নির্দেশনা পরিপালনের জন্য তারা বিভিন্ন মেয়াদে বিএসইসির কাছে সময় চেয়ে আবেদন জানিয়েছে। আর ৫ কোম্পানি নির্দেশনা পরিপালন না করার কারণ এবং তাদের পরিকল্পনার কথা বিএসইসিকে জানিয়েছে। এ ছাড়া বাকি ৮ কোম্পানি নির্দেশনা পরিপালন না করার কারণ বা সময় চেয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত বিএসইসিতে কোনো চিঠি পাঠায়নি।

বিএসইসির মতে, যেসব কোম্পানির কিছুসংখ্যক মালিক রয়েছে, তাদের সহায়তা করা হবে। বিশেষ করে কোম্পানির অন্য যেসব শেয়ারহোল্ডার রয়েছে, তাদের মধ্যে কেউ আগ্রহী হলে তাকে পরিচালনা পর্ষদে সংযুক্ত করা হবে। সেসব কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য কোম্পানিকে বেশি দামে শেয়ার কিনতে হচ্ছে। ফলে অনেক কোম্পানির ওই দামে শেয়ার কিনতে পারছে না বলে বিএসইসিকে অবহিত করেছে। কোম্পানিগুলোর আগ্রহ বিবেচনায় তাদের সহায়তা করা হবে। যেসব কোম্পানি ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করার বিষয়ে চেষ্টা করছে না, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। প্রকৃত কারণ ছাড়া কোম্পানিগুলোর ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থতার জন্য আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে যেসব কোম্পানি সম্মিলিতভাবে শেয়ার ধারণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তাদের জন্য আবার সময় বাড়ানো হবে কি-না সে বিষয়টি নিয়ে ভাবছে কমিশন।

৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য সময়ের চেয়ে আবেদন করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালস, অগ্নি সিস্টেমস, আলহাজ টেক্সটাইল মিলস, অ্যাপোলো ইস্পাত কমপেস্নক্স, আজিজ পাইপস, ডেল্টা স্পিনার্স, ফু-ওয়াং সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ফু-ওয়াং ফুডস, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, ফার্মা এইডস ও সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ।

শেয়ার ধারণের পরিকল্পনার কথা জানানো কোম্পানিগুলো হলো- ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফাইন ফুডস, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, কাট্টালি টেক্সটাইল ও সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ।

শেয়ার ধারণের কোনো তথ্য প্রদান না করা কোম্পানিগুলো হলো- সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলস, ফ্যামিলিটেক্স বিডি, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স ও রতনপুর স্টিল রি-লোরিং মিলস (আরএসআরএম)।

তথ্যমতে, ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রত্যেক পরিচালককে নূ্যনতম ২ শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ বাধ্যতামূলক করে নির্দেশনা দেয় বিদায়ী চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন বিএসইসি। সংস্থাটির আইনের '২সিসি' ধারার ক্ষমতাবলে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের এই নির্দেশনা জারি করা হয়। শুরুতে এ নির্দেশনাটি নিয়ে কয়েকটি কোম্পানির পরিচালক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে বিএসইসির নির্দেশনার পক্ষে রায় দেন হাইকোর্ট।

এরই ধারাবাহিকতায় বিএসইসি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানিকে উদ্যোক্তা ও পরিচালক সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের জন্য নির্দেশনা দেয়। ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএসইসির বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে এই ২৫ কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালক সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে সার্বিক দিক বিবেচনা করে কোম্পানিগুলোকে আরও এক মাস অর্থাৎ চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছিল বিএসইসি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে