বছরে ৭৩ হাজার কোটি টাকার সোনা চোরাচালান হয় : বাজুস

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
প্রতিদিন সারাদেশে কমপক্ষে প্রায় ২শ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলঙ্কার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে আসছে। জল, স্থল ও আকাশ পথে এসব সোনা আসছে। যার পরিমাণ বছরে শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা। দেশে চলমান ডলার সংকটে এই ৭৩ হাজার কোটি টাকার অর্থ পাচার ও চোরাচালান বন্ধে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাজুস। শনিবার সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্ট চেয়ারম্যান এনামুল হক খান দোলন লিখিত বক্তব্যে এসব কথা জানান। তিনি বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি পুরো বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছে। এরই প্রভাব পড়েছে সোনার বিশ্ববাজারে। এমন পরিস্থিতিতে সোনার বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে দিয়েছে চোরাকারবারিদের দেশি-বিদেশি সিন্ডিকেট। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রতিনিয়ত স্থানীয় পোদ্দার বা বুলিয়ন বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হচ্ছে। পোদ্দারদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সোনার পাইকারি বাজার। পোদ্দারদের সঙ্গে চোরাকারবারিদের সিন্ডিকেটের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, মূলত এই চোরাকারবারিদের একাধিক সিন্ডিকেট বিদেশে সোনা পাচারের সঙ্গে জড়িত। দেশে চলমান ডলার সংকট ও অর্থ পাচারের সঙ্গে সোনা চোরাচালানের সিন্ডিকেটগুলোর সম্পর্ক রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সোনার বাজারে অস্থিরতার নেপথ্যে জড়িত চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে কাস্টমসসহ দেশের সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জোরালো অভিযান দরকার। সোনার বাজারে শৃঙ্খলা আনতে কঠোর অভিযানের বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, 'বাজুস মনে করে- আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে আসছে। অনেক চোরাকারবারিকে আইনের মুখোমুখি করা হয়েছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ছে। অবৈধ উপায়ে কোনো চোরাকারবারি যেন সোনা বা অলংকার দেশে আনতে এবং বিদেশে পাচার করতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা সরকারের সব সংস্থাকে প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করছি।' সংবাদ সম্মেলনে বাজুসের প্রস্তাবনায় বলা হয়: সোনা চোরাকারবারিদের চিহ্নিত করতে বাজুসকে সম্পৃক্ত করে পৃথকভাবে সরকারি মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। পাশাপাশি চোরাকারবারিদের দমনে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে আরও কঠোর আইন করতে হবে। এছাড়াও ব্যাগেজ রুলের আওতায় সোনার বার ও অলংকার আনার সুবিধা অপব্যবহারের কারণে ডলার সংকট ও চোরাচালানে কী প্রভাব পড়ছে তা জানতে বাজুসকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে সমীক্ষা পরিচালনা করতে হবে। চোরাচালান প্রতিরোধ করতে গিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের সদস্যদের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া সোনার মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ সংস্থাসমূহের সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদান করতে হবে। এ ছাড়া জুয়েলারি শিল্পের চলমান সংকট মোকাবিলায় সোনার গহনার মান উন্নয়নে হলমার্ক নীতিমালা ও ডায়মন্ড নীতিমালা প্রণয়নে সরকারের কাছে দাবি জানায় বাজুস।