পযের্বক্ষণ কমিটি গঠন

করদাতাদের বাড়তি অথর্ ফেরত দেবে এনবিআর

প্রকাশ | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
কর কতৃর্পক্ষের ওপর আস্থা বাড়ানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোডর্ (এনবিআর) আয় করদাতাদের কাছ থেকে নেয়া অতিরিক্ত অথর্ নগদ আকারে ফেরত দেয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনবিআরের কমর্কতার্রা জানিয়েছেন, প্রক্রিয়াটিকে দ্রæত করার জন্য প্রাথমিকভাবে অল্প পরিমাণ টাকা বেশি করদাতাদের ফেরত দেয়া হবে। এনবিআরের আয়কর বিভাগ ইতোমধ্যে সদস্য (আয়কর নীতি) কানন কুমার রায়কে প্রধান করে কর ফেরত পযের্বক্ষণ কমিটি পুনগর্ঠন করা হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের ১৩ তারিখে এই কমিটি পুনগর্ঠন করা হয়। কমিটি প্রথমে ক্ষুদ্র পরিসরে আয়কর দিয়েছে এমন ব্যক্তিদের অতিরিক্ত অথর্ ফেরতের বিষয়ে সুপারিশ করবে। এর মধ্যে চাকরিজীবী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থাকবে। আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ অনুযায়ী, একজন করদাতা যদি অতিরিক্ত কর দেন তবে তা তিনি ফেরত পাবেন। অনেক করদাতা তার দেয়া করের পরিমাণ রাজস্ব বছর শেষে পাওনার চেয়ে বেশি দিয়ে থাকেন। কারণ কর কমর্কতার্রা সারা বছর আমদানি, পেমেন্ট, বিল এবং সুদের আয়ের মতো আয়গুলোতে অগ্রিম আয়কর কাটেন। অনেকে ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীর জন্য ট্যাক্স রিবেট দাবি করার পরে করদাতার কর দায় প্রদেয় করের চেয়ে কম হয়ে যায়। কর আইন অনুযায়ী, করদাতারা আগামী অথর্বছরে প্রযোজ্য ট্যাক্সের সঙ্গে ফেরতযোগ্য অথর্ সমন্বয় করতে পারে অথবা তারা নগদ অথর্ ফেরত দাবি করতে পারেন। উল্লেখ্য, এনবিআর ২০১২ সালে চাকরিজীবীদের করের অতিরিক্ত অথর্ ফেরত দেয়ার বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করে। সম্প্রতি এনবিআর এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের যৌথ একটি বৈঠকে এই কমিটি পুনগর্ঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক নীতি সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, বতর্মানে নগদ অথর্ ফেরত দেয়ার পদ্ধতিগত নানা জটিলতা এবং কর কমর্কতাের্দর নেতিবাচক মানসিকতার কারণে করদাতারা অতিরিক্ত অথর্ ফেরত পাচ্ছেন না। তারা বলছেন, এনবিআর বতর্মানে প্রতিরক্ষা খাতের কমর্রত করদাতা এবং কিছু বড় ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত আয়করের টাকা ফেরত দিয়ে থাকে। এনবিআরের কমর্কতার্রা বলছেন অতিরিক্ত অথর্ ফেরত প্রক্রিয়াটি খুব জটিল এবং লম্বা ছিল। প্রক্রিয়া অনুসারে, করদাতার অতিরিক্ত অথর্ ফেরত পাওয়ার জন্য আয় কর বিভাগের ডেপুটি কমিশনার বরাবর আবেদন করতে হয়। আবেদনকারীর ট্যাক্স কতৃর্পক্ষের কাছে কোনো দেনা আছে কি না তা নিশ্চিত করার জন্য আবেদনকারীর আয়কর, পূবর্বতীর্ বছর রেকডর্ এবং অন্য দলিলগুলো চেক করার পর কেবলমাত্র ৫,০০০ টাকা বা তার কম পরিমাণে অথর্ থাকলে ডেপুটি কমিশনার ফেরত আবেদন অনুমোদন করতে পারে। ডেপুটি কমিশনার ফেরত সম্পকের্ নিশ্চিত হলে আবেদনকারীর পক্ষে রিফান্ড ফাউচার অনুমোদন করেন। রিফান্ড ভাউচারটি কন্ট্রোলার জেনারেল অফ অ্যাকাউন্ট দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে। এরপর, করদাতাকে ভাউচারটি ভাঙানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারি শাখায় যেতে হয়। যদি বাংলাদেশ ব্যাংক ভাউচার অনুমোদন করে তবে তিনি নগদ টাকা ফেরত পাবেন। আয়কর কমিশনার যিনি এনবিআরের মাঠ অফিসের প্রধান। তিনি ৫ লাখ টাকার নিচে আবেদন গ্রহণ করতে পারেন। ৫ লাখ টাকার বেশি আবেদন রাজস্ব বোডর্ গ্রহণ করবে। এনবিআর সূত্রে জানা যায়, পুনগির্ঠত কমিটি নগদ অথর্ ফেরতের বিষয়টি পযের্বক্ষণ করবে এবং মাঠ পযার্য় থেকে থেকে অথর্ ফেরত সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে। কমিটি প্রয়োজনে মাঠ পযাের্য়রর অফিসগুলোতে পরিদশের্ন যাবে। তাদের কাজের অগ্রগতি মূল্যায়ন এবং স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে। আয়কর কমিশনাররা তাদের অফিসে অতিরিক্ত অথর্ ফেরত সম্পকির্ত কাযর্ক্রম পযের্বক্ষণ করবেন। এনবিআর গড়ে প্রতি বছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ফেরত দেয়। কমর্কতার্রা জানান, এবার ফেরতযোগ্য অথের্র পরিমাণ আরও বেশি হবে। কারণ ৫৭টি নতুন উৎস থেকে এনবিআর আয়ের ক্ষেত্রে এনবিআর রিবেট সুবিধা দিয়েছে। তবে কর কতৃর্পক্ষের কাছে এ বছর কি পরিমাণ করদাতাদের অতিরিক্ত অথর্ ফেরত দিতে হবে সে বিষয়ে কোনো পরিসংখ্যান নেই।