বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ :আসন্ন নিবার্চনে অস্থির ইন্দোনেশিয়া

প্রকাশ | ০১ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চলতি বছরের বৈশ্বিক ও স্থানীয় অথর্নীতির উচ্চগতিশীলতা ২০১৮ সাল ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর প্রশাসনের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জিং বছরে পরিণত করেছে। তবে ঘরে-বাইরের এ অস্থিরতার মধ্যেও বেশকিছু খাতে পুনরুদ্ধারের আভাস দেখা গেছে। বাইরের দিক থেকে উন্নত অথর্নীতিগুলোর কঠোর মুদ্রানীতি গ্রহণের ফলে উদ্ভূত বৈশ্বিক অথৈর্নতিক অস্থিরতা, বিশ্বের শীষর্ দুই অথর্নীতির বাণিজ্যযুদ্ধ এবং তেল ও ভোগ্যপণ্য মূল্যের অস্থিতিশীলতা ইন্দোনেশিয়ার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অন্যদিকে স্থানীয়ভাবে রুপিয়াহর মান পুনরুদ্ধার হতে শুরু করলেও রাজনৈতিক উত্তেজনার ফলে অথর্নীতি ও বিনিয়োগ পরিবেশ নষ্ট হতে পারে বলে ব্যবসাগুলোর মধ্যে উদ্বেগ রয়ে গেছে। বিশেষ করে আগামী বছর দেশটিতে আসন্ন প্রেসিডেন্সিয়াল ও আইনসভার নিবার্চন এ উদ্বেগ তৈরি করেছে। এ উদ্বেগ ও উত্থান-পতন দিয়ে একটি বছর শেষ করল ইন্দোনেশিয়ার অথর্নীতি। সামষ্টিক অথর্নীতি: অন্যান্য উদীয়মান বাজারের মুদ্রার মতো ডলারের বিপরীতে রুপিয়াহর অবমূল্যায়ন ইন্দোনেশিয়ার অথর্নীতিতে চলতি বছরের সবচেয়ে বড় ঘটনা ছিল। বছরের শুরুতে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকলেও বৈশ্বিক অথর্নীতির অনিশ্চয়তায় তা নেতিবাচক দিকে মোড় নেয়। সেপ্টেম্বরের শুরুতে ১ ডলারের বিপরীতে রুপিয়াহর মান দঁাড়ায় ১৫ হাজার। রুপিয়াহর অবমূল্যায়নের কারণে মুদ্রার মান স্থিতিশীল করতে চলতি বছর ব্যাংক ইন্দোনেশিয়ার (বিআই) সাতদিন মেয়াদি রিভাসর্ রেপো রেট ছয় দফা বাড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভনর্র পেরি ওয়ারজিয়ো। অন্যদিকে অস্থিতিশীল রুপিয়াহ সত্তে¡ও ২০১৮ সালের রাষ্ট্রীয় বাজেট সংশোধন না করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। শেয়ারবাজার: ২০১৮ সালজুড়ে জাকাতার্ কম্পোজিট ইনডেক্সের (জেসিআই) পারফমর্্যান্সে উত্থান-পতন দেখা গেছে। এর অন্যতম কারণ ছিল চীন-যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত বাণিজ্য উত্তেজনা এবং ফেডারেল রিজাভের্র (ফেড) আগ্রাসী সুদহার বৃদ্ধি, যে কারণে ইন্দোনেশিয়াসহ উদীয়মান বাজারগুলো থেকে ব্যাপক বিনিয়োগ তুলে নেয়া হয়। এর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ইস্যুগুলো জেসিআইয়ের ওপর প্রভাব ফেলেছে। এর মধ্যে রপ্তানি পতন এবং রুপিয়াহর চাপের মুখে নভেম্বরে ২০৫ কোটি ডলারের বিস্তৃত বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, যা ২০১৩ সালের জুলাইয়ের পর সবোর্চ্চ বাণিজ্য ঘাটতি। এসব নেতিবাচক বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ মনোভাবের মধ্যে জেসিআই চলতি বছরের শুরুর প্রায় ৬ হাজার ৬০০ পয়েন্ট থেকে ৬ হাজার পয়েন্টে নেমে গেছে। বাণিজ্য: বাণিজ্য ঘাটতি এবং সে সঙ্গে শিল্প ও বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধির মন্থরতার ফলে অথর্নীতির ভালো অবস্থা বজায় রাখতে সংগ্রাম করে যেতে হয়েছে দেশটিকে। স্ট্যাটিস্টিকস ইন্দোনেশিয়ার পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৮ সালের শুরু থেকে নভেম্বর পযর্ন্ত বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দঁাড়িয়েছে ৭৫২ কোটি ডলার। যেখানে ২০১৫, ’১৬ এবং ’১৭ সালে দেশটির বাণিজ্য উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৭৮৩ কোটি, ৮৪৮ কোটি ও ১ হাজার ২০৮ কোটি ডলার। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাবে রপ্তানি চাহিদার পতন এবং অধিক পরিমাণে ক্রুড তেল, কঁাচামাল ও ভোগ্যপণ্য আমদানি এ ঘাটতির কারণ।