শেয়ারবাজারের পালে হাওয়া

প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের পর থেকেই দেশের শেয়ারবাজারে উত্থান দেখা দিলেও মঙ্গলবার দশ মাসের মধ্যে সবোর্চ্চ উত্থান হয়েছে। ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স প্রায় সাড়ে ৯ মাস পর আবারও পঁাচ হাজার সাতশ পয়েন্ট অতিক্রম করেছে। শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বড় ধরনের রাজনৈতিক হানাহানি ছাড়াই জাতীয় সংসদ নিবার্চন অনুষ্ঠিত এবং সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকায় শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি অথর্মন্ত্রী পরিবতর্ন হওয়া শেয়ারবাজারের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখা দিয়েছে। বাজার পযাের্লাচনায় দেখা যায়, নিবার্চনের পর নতুন বছরে শেয়ারবাজারে ছয় কাযির্দবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে পঁাচ কাযির্দবসেই মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এতে নতুন বছরের প্রথম ছয় কাযির্দবসে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৩৮৫ পয়েন্ট। আর শেষ ১৩ কাযির্দবসে সূচকটি বেড়েছে ৫৫২ পয়েন্ট। অবশ্য টানা ১১ কাযির্দবস ঊধ্বর্মুখী থাকার পর গত সোমবার ডিএসই এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কিছুটা দরপতন হয়। তবে এ দরপতনের পরের কাযির্দবসেই দশ মাসের মধ্যে সবোর্চ্চ উত্থানের দেখা মিলে। সেই সঙ্গে ২০১৮ সালের ১ এপ্রিলের পর ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স একদিনেই একশ পয়েন্টের ওপরে বেড়েছে। মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি এদিন বাজারে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। দাম কমেছে ৮৫টির। আর ২৩টির দাম অপরিবতির্ত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১১৫ পয়েন্ট বেড়ে পঁাচ হাজার ৭৭০ পয়েন্টে দঁাড়িয়েছে। এর ফলে ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিলের পর সূচকটি আবারও পঁাচ হাজার সাতশ পয়েন্টের ঘরে পৌঁছেছে। ২০১৮ সালের এপ্রিলের শেষ কাযির্দবসে ডিএসইএক্স সূচকটি ছিল পঁাচ হাজার ৭৩৯ পয়েন্টে। প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে অপর দুটি মূল্যসূচকেও। এর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩০৮ পয়েন্টে দঁাড়িয়েছে। আর ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার এক পয়েন্টে অবস্থান করছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, নিবার্চনের মাধ্যমে সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা হওয়ায় শেয়ারবাজারে এমন উত্থান প্রতাশিত। এখন বাজার যে আচরণ করছে আমার দৃষ্টিতে তা খুবই ভালো। তবে বাজারে যাতে কেউ দুবর্ল কোম্পানির শেয়ার নিয়ে খেলা করতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে। এদিকে মূল্যসূচক ও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১০ কোটি তিন লাখ টাকা। আগের কাযির্দবসে লেনদেন হয় ৯৬৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কাযির্দবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৪৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে এদিন ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেএমআই সিরিঞ্জের ২০ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২০ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো। লেনদেনে এরপর রয়েছে- আলিফ মেনুফ্যাকচারিং, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, অ্যাকটিভ ফাইন, ইফাদ অটোস, বিবিএস কেবলস এবং ঢাকা ব্যাংক। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সাবির্ক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ২৪৭ পয়েন্ট বেড়ে ১০ হাজার ৬৮৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারে লেনদেন হয়েছে ৭১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৭৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮৩টির দাম বেড়েছে। কমেছে ৮০টির। আর অপরিবতির্ত রয়েছে ১৪টির দাম।