পুঁজিবাজারে আসতে ভালো কোম্পানির আগ্রহ কম

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
দেশে অনেক সরকারি-বেসরকারি এবং বহুজাতিক কোম্পানি রয়েছে। এসব কোম্পানি ভালো ব্যবসা করলেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। এর আগে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলেও তা কাজে আসেনি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে কর রেয়াতসহ নানা সুবিধা থাকলেও মূলত জবাবদিহিতা বৃদ্ধির আশঙ্কা থেকেই অনেকে বাজারে আসতে চায় না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে অথর্ মন্ত্রণালয়ে পরিবতর্ন আসায় বাজার সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন নতুন অথর্মন্ত্রী এসব বিষয়ে নজর দেবেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাচের্ন্ট ব্যাংকাসর্ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এ হাফিজ বলেন, নতুন বছর, নতুন সরকার, নতুন অথর্মন্ত্রী এবং সরকারের আগামী পঁাচ বছরের ইশতেহারে অথৈর্নতিক উন্নয়নে অনেক প্রতিশ্রæতি রয়েছে অথার্ৎ এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে পুঁজিবাজার ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে। সামনে এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে মনে করি। তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজার একটি স্পশর্কাতর জায়গা এবং এটি তার নিজস্ব গতিতে চলে। পুঁজিবাজার ওঠা-নামা করবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সম্পকের্ সচেতন হতে হবে। কখন কোন কোম্পানির শেয়ার কিনতে হবে এবং বিক্রি করতে হবে। অথার্ৎ বেচা বা কেনা সম্পকের্ সচেতন না থাকলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। দেশের পুঁজিবাজারে এ সমস্যাটা বেশি দেখা যায়। আবার দেশের প্রতিটা খাতে সুশাসনের অভাব রয়েছে। বিশেষ করে ব্যাংক, আথির্ক প্রতিষ্ঠান ও পুঁজিবাজারে সুশাসন খুবই প্রয়োজন। কারণ এখানে জনগণের টাকা জড়িত। সরকার যদি জনগণের টাকার নিরাপত্তা বিধান করতে না পারে তাহলে ব্যাংক ও পুঁজিবাজারের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হবে। ২০১৯-২০২০ সালে বা সামনের বছরগুলোতে পুঁজিবাজার ভালো অবস্থানে যাবে বলে মনে করি। দেশের অথর্নীতি উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ও সামনের দিকে আরও এগিয়ে যাবে। এর সঙ্গে সঙ্গে দেশের পুঁজিবাজার এগিয়ে যাবে। তবে পুঁজিবাজারে আরও ভালো মানের কোম্পানি অন্তভুর্ক্ত করতে হবে। এদিকে, ২০১৮ সালের নভেম্বরে পুঁজিবাজারের স্বল্পমূলধনি কোম্পানিগুলোর জন্য আলাদা বোডর্ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অথার্ৎ অনেক বিচার-বিশ্লেষণ করেই স্বল্পমূলধনি কোম্পানির জন্য আলাদা বোডর্ করা হয়েছে এবং চলতি বছরের মাঝামাঝিতে এর কাযর্প্রণালি চালু হতে পারে। এটি পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক হবে। এর ফলে স্বল্পমূলধনি কোম্পানিগুলোতে বিভিন্ন ধরনের কারসাজি ও অস্বস্তিকর যেসব প্রতিযোগিতা রয়েছে তা বন্ধ হবে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন অনেকে। কনসালটেশন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ বিপ্লব, নিবার্চনের পর পুঁজিবাজারের সূচক, প্রতিদিনের গড় লেনদেন, বাজার মূলধন এবং শেয়ারের দাম ইতিবাচক দেখা যাচ্ছে। এখন মূল কাজ হচ্ছে পুঁজিবাজারে ভালো মানের কোম্পানি অন্তভুর্ক্ত করা। কারণ সত্যিকার অথের্ পুঁজিবাজারের গ্রোথ যদি না থাকে সেটিকে পুঁজিবাজার বলা যায় না। দেশে অনেক সরকারি, বেসরকারি এবং বহুজাতিক কোম্পানি রয়েছে। এসব কোম্পানি দিব্যি ব্যবসা করে যাচ্ছে কিন্তু পুঁজিবাজারে অন্তভুর্ক্ত হচ্ছে না। যেহেতু অথর্ মন্ত্রণালয়ে পরিবতর্ন হয়েছে। অথার্ৎ যিনি অথর্ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব আসছেন তার পুঁজিবাজার সম্পকের্ ভালো ধারণা রয়েছে। তাই এসব বিষয় তিনি নজরদারিতে রাখবেন বলে আশা করি। কারণ দেশের অথৈর্নতিক উন্নয়নের পুঁজিবাজার গুরুত্বপূণর্ ভূমিকা রাখে। ডিএসইর সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, দেশের অথর্নীতি ধীরে ধীরে উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এশিয়ার বৃহত্তম ২৩তম অথৈর্নতিক দেশ হবে। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে হবে। এখন কথা হচ্ছে ব্যাংক হচ্ছে স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগের জায়গা আর পুঁজিবাজার হচ্ছে দীঘের্ময়াদি বিনিয়োগের জায়গা। দীঘের্ময়াদি অথৈর্নতিক উন্নয়নের জন্য ব্যাংকনিভর্র না হয়ে পুঁজিবাজারনিভর্র অথৈর্নতিক উন্নয়নে যাওয়া উচিত। এতে দেশের যেমন অথৈর্নতিক উন্নয়ন হবে তেমনি পুঁজিবাজার স¤প্রসারিত হবে। কারণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে নিদির্ষ্ট সময় অনুযায়ী সুদ দিতে হয়। আর পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলন করলে কোনো সুদ দিতে হয় না। শুধু বছর শেষে লভ্যাংশ দিতে হয়। তিনি আরও বলেন, ২০১০ সালে ধসের পর পুঁজিবাজার সংক্রান্ত অনেক পলিসিগত পরিবতর্ন হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন হয়েছে। আবার স্বল্পমূলধনি কোম্পানির জন্য আলাদা বোডর্ হতে যাচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহ পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক হবে।