বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করায় এমএল ডায়িংকে জরিমানা

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
প্রণোদনা সুবিধায় আনা কঁাচামাল অবৈধভাবে অপসারণ করে রাজস্ব ফঁাকি দিয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এমএল ডায়িং লিমিটেড। ঢাকা বন্ড কমিশনারেটের অনুসন্ধানে রাজস্ব ফঁাকি প্রমাণ হওয়ায় জরিমানাসহ কোম্পানিটির কাছে প্রায় ২ কোটি টাকা দাবি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোডর্ (এনবিআর)। ১৫ কাযির্দবসের মধ্যে এ অথর্ পরিশোধ না করলে কাস্টমস আইন অনুযায়ী শাস্তির কথা জানিয়ে এরই মধ্যে এমএল ডায়িংকে চিঠিও দিয়েছে সংস্থাটি। এনবিআরের কমর্কতার্রা বলছেন, স্থানীয় শিল্প বিকাশে প্রণোদনা হিসেবে রপ্তানির শতের্ কঁাচামাল আমদানিতে বিশেষ বন্ড সুবিধা দিয়ে আসছে সরকার। এ সুবিধায় শুল্কমুক্তভাবে কঁাচামাল আমদানি করে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। তবে কোম্পানিকে এনবিআরের অনুমতি নিয়ে কঁাচামাল ব্যবহার ও পণ্য রপ্তানি করতে হয়। এমএল ডায়িংয়ের বিরুদ্ধে এ বন্ড সুবিধা নিয়ে তা অপব্যবহারের অভিযোগে আসে এনবিআরে। অভিযোগের ভিত্তিতে কোম্পানিটির কারখানা ও প্রধান কাযার্লয়ে অভিযান চালিয়ে কঁাচামাল অবৈধভাবে অপসারণের প্রমাণ পাওয়া যায়। ৪ কোটি ৯ লাখ টাকার কঁাচামাল অবৈধভাবে অপসারণ করার অভিযোগে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরবতীের্ত শুনানি শেষে কোম্পানিটিকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা ও অবৈধ অপসারণকৃত কঁাচামালের বিপরীতে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা শুল্ক দাবি করা হয়েছে। ১৫ কাযির্দবসের মধ্যে তা পরিশোধ না করলে কাস্টমস আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এনবিআরের কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের একজন কমর্কতার্ বলেন, বন্ড কমিশনারেটের প্রিভেন্টিভ টিমের অনুসন্ধানে এমএল ডায়িংয়ের বিরুদ্ধে কঁাচামাল আমদানি করে ওয়্যারহাউজে রাখার ক্ষেত্রে অনিয়ম ও অবৈধভাব অপসারণের অভিযোগ ওঠে। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকার রাজস্ব ফঁাকির অভিযোগে ২০১৮ সালের ফেব্রæয়ারিতে মামলা করা হয়। পরবতীের্ত কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট কমর্কতাের্দর শুনানি শেষে অভিযোগটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়। ফলে তাদের বিরুদ্ধে ১৯৬৯ সালের কাস্টমস আইনের ১৫৬(১) ধারার ক্লজ ৯০-এর ক্ষমতা বলে আরও ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে জরিমানাসহ ফঁাকি দেয়া রাজস্ব পরিশোধে ৩ জানুয়ারি কোম্পানিটিকে চূড়ান্ত আদেশপত্র দেয়া হয়েছে। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, মেসাসর্ এমএল ডায়িং ময়মনসিংহের ভালুকায় অবস্থিত একটি তৈরি পোশাক কারখানা। কোম্পানিটি ২০০২ সালে এনবিআর থেকে বন্ড লাইসেন্স নেয়, যার নিবন্ধন নম্বর ১৬৫ ও মূসক নম্বর ১৮০৬১০০১৯২৪। গত বছরের ১০ ফেব্রæয়ারি এমএল ডায়িং কারখানায় অনুসন্ধানে যায় ঢাকা বন্ড কমিশনারেটের প্রিভেন্টিভ টিম। সরেজমিন তদন্ত করে কোম্পানিটির কারখানায় আমদানিকৃত কঁাচামালের মধ্যে ইয়ানর্ ৬ হাজার ১৪৫ কেজি, ডাইস ৬ হাজার ২০০ কেজি, লবণ ২৪ হাজার ৯৫০ কেজি, কস্টিক সোডা ৩ হাজার কেজি, লাইম পাউডার ৬ হাজার ৪০০ কেজি ও অন্যান্য কেমিক্যাল ৫৫ হাজার ৭১৫ কেজি কম পাওয়া যায়। এছাড়া কোম্পানিটির কারখানায় বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীণর্ কঁাচামাল জব্দ করে প্রিভেন্টিভ টিম। পরবতীের্ত এনবিআরের অ্যাসাইকুডা ওয়াল্ডর্ সফটওয়্যারের সঙ্গে কোম্পানির আমদানি তথ্য যাছাই করে তাদের বিরুদ্ধে বন্ড সুবিধার ৪ কোটি ৯ লাখ টাকার শুল্কায়নযোগ্য কঁাচামাল অবৈধভাবে অপসারণের প্রমাণ পাওয়া যায়।