দেশে পস্নাস্টিকের বাজার ৪০ হাজার কোটি টাকার

অভ্যন্তরীণভাবে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পস্নাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণন হচ্ছে। এই সেক্টর সরকারের কোষাগারে প্রতি বছর আনুমানিক প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব দিয়ে থাকে। রপ্তানি হয় প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলারের মতো।

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
দেশে পস্নাস্টিকের বাজার ৪০ হাজার কোটির, রপ্তানি ১.২ বিলিয়ন ডলার পস্নাস্টিক খাতে বর্তমানে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ৩০ এর অধিক মাইক্রো, ক্ষুদ্র, মাঝারি, বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাচ্ছে। অভ্যন্তরীণভাবে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পস্নাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণন হচ্ছে। এই সেক্টর সরকারের কোষাগারে প্রতি বছর আনুমানিক প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব দিয়ে থাকে। রপ্তানি হয় প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলারের মতো। মঙ্গলবার বিপিজিএমইএ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ২২-২৫ ফেব্রম্নয়ারি চার দিনব্যাপী ১৫তম ইন্টারন্যাশনাল পস্নাস্টিক ফেয়ার-২০২৩ এর আয়োজন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিপিজিএমইএ সভাপতি সামিম আহমেদ আরও বলেন, পস্নাস্টিক সেক্টরের সামগ্রিক চিত্র বিশ্ব বাজারে টেক্সটাইল এবং অ্যাপারেলস পণ্যের মতো বড় খাত হচ্ছে পস্নাস্টিক ও পস্নাস্টিক জাত পণ্যের। হিসাবে দেখা যায়, পস্নাস্টিক পণ্যের সামগ্রিক গেস্নাবাল মার্কেট সাইজের পরিমাণ ৫৭০ বিলিয়ন ইউএস ডলার, যেখানে টেক্সটাইল এবং অ্যাপারেলস সেক্টরের অবস্থান হচ্ছে ৭৭২ বিলিয়ন ইএস ডলার। এর মধ্যে শুধু অ্যাপারেলস সেক্টরের অবদান ৪০৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার। কাঁচামাল, মধ্যবর্তী পণ্য, তৈরি পণ্য এবং তাদের আমদানির ক্ষেত্রে বিশ্বে পস্নাস্টিক মার্কেট ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পস্নাস্টিক খাতের ভূমিকা বেড়েছে। দেশে প্রতিবছর পস্নাস্টিকের নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। বাড়ছে এর কর্মপরিধি। এই খাতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বেড়েছে। পস্নাস্টিক পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। অন্যদিকে নতুন নতুন মডেল ও উন্নত মানসম্মত পণ্য বাজারে আসছে এবং বিশ্ব পরিমন্ডলে পস্নাস্টিক এখন অপরিহার্য পণ্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পস্নাস্টিক খাতে বর্তমানে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ৩০ এর অধিক মাইক্রো, ক্ষুদ্র, মাঝারি, বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাচ্ছে। অভ্যন্তরীণভাবে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পস্নাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণন হচ্ছে। এই সেক্টর সরকারের কোষাগারে প্রতি বছর আনুমানিক প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব দিয়ে থাকে। রপ্তানি হয় প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলারের মতো। পস্নাস্টিক সেক্টরে ইতোমধ্যে প্রায় ১২ লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। বর্তমানে অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সংখ্যা ২ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে। বর্তমান টালমাটাল বিশ্ব পরিস্থিতির মধ্যেও এ সেক্টরের রপ্তানি প্রবৃদ্ধিসহ অগ্রযাত্রা অব্যাহত আছে। সামিম আহমেদ জানান, বর্তমানে রপ্তানিতে পস্নাস্টিক পণ্যের অবস্থান ১২তম। কিন্তু প্রচ্ছন্ন রপ্তানির (যার মধ্যে গার্মেন্টস এক্সেসরিজ উলেস্নখযোগ্য) হিসাব এর সঙ্গে যুক্ত হলে রপ্তানিতে পস্নাস্টিক পণ্যের অবস্থান হবে ষষ্ঠ। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিগত ২০১০-১১ অর্থবছরে মোট পস্নাস্টিক রপ্তানি ছিল ৬৮.৭৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার। আর ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এসে রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ১৬৬.২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। (সূত্র : রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরো)। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে রপ্তানি টার্গেট ছিল ১২৭.০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার আর অর্জিত হয়েছে ১৬৬.২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। অর্থাৎ ৪৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। পস্নাস্টিকের খেলনা, ওভেন ব্যাগ এবং ক্রোকারিজ আইটেমের ব্যাপক রপ্তানি সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে উন্নতমানের খেলনা আইটেম তৈরি হচ্ছে। দেশে ইতোমধ্যে পিপিওভেন খাতে ৭০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার ওপরে। কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় এক লাখ মানুষের। এই ওভেন খাত ইতোমধ্যে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করছে। পস্নাস্টিক খেলনা আইটেম বিভিন্ন দেশে রপ্তানি শুরু হয়েছে। এ খাতের সম্ভাবনাও ব্যাপক। পস্নাস্টিক পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশসহ সমগ্র ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশ যেমন চীন, ভারত, নেপালসহ ১২৬টি দেশে রপ্তানি হয়ে আসছে। পস্নাস্টিক খাতের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এ সময় বিপিজিএমইএ সাবেক সভাপতি মো. ইউসুফ আশরাফ, ফেরদৌস ওয়াহেদ ও শাহেদুল ইসলাম হেলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।