এডিপি বাস্তবায়নে পিছিয়ে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয়গুলো

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
২০২৩ অর্থ-বছরের প্রথমার্ধে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-র বাস্তবায়ন হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ কম। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, এ সময়ে এডিপির মাত্র ২৩.৫৩% অগ্রগতি হয়েছে; এর মধ্যে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বাস্তবায়ন হার সবচেয়ে কম। এর আগে জুলাই-ডিসেম্বরে সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন রেকর্ড করা হয়েছিল ২০১৬ অর্থ-বছরে। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থ-বছরের মোট এডিপি বরাদ্দের ৮৩ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মাত্র তিন মন্ত্রণালয় ৩০ শতাংশের বেশি এডিপি বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। এগুলো হলো সেতু বিভাগ, বিদু্যৎ বিভাগ এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে, অর্থ-বছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) সময়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়ন হার ২০ শতাংশের নিচে। সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এডিপি বাস্তবায়নের হার প্রভাব ফেলেছে সার্বিক এডিপি বাস্তবায়নে। আইএমইডির কর্মকর্তারা বলেন, সরকার এডিপি বাস্তবায়নে নানা ধরনের কৌশল দিলেও এখনো বাস্তবায়ন সক্ষমতা তৈরি হয়নি মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর। দরপত্র জটিলতা, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা, বৈদেশিক অর্থায়ন জটিলতা ছাড়াও বিভিন্ন কারণে অনেক প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন এবং সময় মতো প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দিতে পারার কারণে বাস্তবায়ন গতি পাচ্ছে পাচ্ছে না। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার বিভিন্ন প্রকল্পকে এ, বি এবং সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোকে সি ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে এবং তাদের জন্য তহবিল প্রকাশ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। বি-শ্রেণির প্রকল্পগুলোর জন্য তহবিলের ৭৫% রিলিজ করার বিধান রয়েছে এবং এ-শ্রেণির ক্ষেত্রে বরাদ্দকৃত তহবিলের ১০০% রিলিজ দেওয়া যেতে পারে। আইএমইডি'র তথ্য অনুযায়ী, অর্থ-বছরের প্রথম ছয় মাসে ২৮ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সরকার তহবিলের বরাদ্দের ২০% অর্থ ব্যয় করতে পারেনি। এর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। এদিকে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার চলতি অর্থ-বছরে বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের গুরুত্ব দিয়েছে। এরপরও ২০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বৈদেশিক সহায়তা ব্যয়ের হার ২০ শতাংশ কম। এর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে রয়েছে : সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। কমানো হচ্ছে বৈদেশিক সহায়তার বরাদ্দ এদিকে বাস্তবায়ন সক্ষমতা না বাড়ায় চলতি অর্থ-বছরে বৈদেশিক সহায়তার বরাদ্দ ১৫ হাজার কোটি টাকা কমানো হচ্ছে। গত মাসে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে সংশোধিত এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তা বরদ্দ কমানোর প্রস্তাব করেছে। চলতি অর্থ-বছরে সরকার বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দ থেকে ৯৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। সংশোধিত এডিপিতে তা কমিয়ে ৭৮ হাজার কোটি টাকা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।