বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরের ৪০০ টন বাঁধাকপি যাচ্ছে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

যশোর থেকে ৪০০ টন বাঁধাকপি বিদেশে রপ্তানি করা হবে। বাঁধাকপি বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যে চলতি বছর কন্ট্রাক ফার্মিংয়ের মাধ্যমে জেলা কৃষি বিভাগের তদারকিতে আন্তর্জাতিক মানের সবজি উৎপাদন শুরু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ অঞ্চলে বাঁধাকপির দাম কমে যাওয়ার মুহূর্তে বিদেশে রপ্তানি শুরু হয়েছে। এর সুফল পাচ্ছেন যশোর সদর উপজেলার শতাধিক কৃষক। অ্যাগ্রোবেজ প্রসেসিং প্রতিষ্ঠান যশোরের চুড়ামনকাটি এলাকায় ওয়ারহাউস ও ফ্যাক্টরি স্থাপন করে কৃষকদের সঙ্গে সমন্বয় করে বিদেশে বাঁধাকপি রপ্তানি কাজে সহযোগিতা করে চলেছে। বাঁধাকপিসহ সবজির গুণগত মান নিরূপণে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে জাহাজযোগে সবজি বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। দুই মাসে ৪০০ টন বাঁধাকপির চালান মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে যাচ্ছে।

কৃষি বিভাগ সূত্র আরও জানিয়েছে, জানুয়ারি মাস থেকে বিদেশে বাঁধাকপি রপ্তানি শুরু হয়েছে। চলতি ফেব্রম্নয়ারি মাসে যশোর থেকে বাঁধাকপির বেশ কয়েকটি চালান যাবে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে। ওই তিন দেশের সবজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকার অ্যাগ্রোবেজ প্রসেসিং লিমিটেড যশোর কৃষি বিভাগের মাধ্যমে কৃষকদের সঙ্গে চুক্তি করেছে। সলিডারিড্যাট নেটওয়ার্ক এশিয়া তাদের সফল নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে যশোর কৃষি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে রপ্তানির কাজ শুরু করেছে। জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন যশোরও এই রপ্তানি প্রক্রিয়ায় পার্টনারশিপ হিসেবে কাজ করছে। সবজি চাষের শুরুতেই সলিডারিড্যাট বাংলাদেশ ও জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন কৃষকদের গ্রম্নপ তৈরি করেছে। দু'মাসে কমপক্ষে ৪০০ টন বাঁধাকপি রপ্তানি করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষকদের পরিবহণ ও প্রসেসিং খরচ কমাতে সরাসরি মাঠে চলে যাচ্ছে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের গাড়ি। যশোর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের তৃণমূল পর্যায়ের কৃষকদের এই কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। চুড়ামনকাটি, হৈবৎপুর, লেবুতলা ও কাশিমনগর ইউনিয়নের দেড়শ' কৃষককে সুবিধাভোগীর আওতায় আনা হয়েছে।

কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উত্তম ব্যবস্থাপনা ও টেকনিক্যাল নানা ধরনের সাপোর্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বাঁধাকপি উৎপাদন করা হচ্ছে। একটি কপির ওজন কমপক্ষে দেড়কেজি, যা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মাফিক ওজন। পাঁচটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মাঠ পর্যায়ে বাঁধকপি সংগ্রহ করে রপ্তানি করবে। বাঁধাকপি ছাড়াও যশোর থেকে কচুরলতি, বেগুন ও অন্যান্য সবজি বিদেশে রপ্তানি করা হয়ে থাকে। পর্যায়ক্রমে টমেটো, শিম, করলা, উচ্ছে, পেঁপে, মাশরুম, মরিচ, কলা, লিচু, কুল, পেয়ারা, ভুট্টা, আমলকি, এলোভেরা, কালোমেঘ, চুইঝাল, নারকেলসহ ২০ প্রকার ফসল রপ্তানিতে প্রাধান্য পাবে বলেও সূত্রে জানা গেছে।

বিগত কয়েক বছরে কৃষি বিভাগের নানা সাফল্যকে ছাপিয়ে বড় সুখবর এনে দিয়েছে বাঁধাকপিতে। কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে উচ্চমূল্যের ফসলের মধ্যে বাঁধাকপি রপ্তানিতে সফলতা এসেছে গোটা কৃষি সেক্টরে। যশোরের কৃষকের ক্ষেতে উৎপাদিত বাঁধাকপি পৌঁছে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও তাইওয়ানের বাজারে। প্যাকেজিংয়ের আগে আব্দুলপুরের কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও বিপণন কেন্দ্রসহ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ফ্যাক্টরিতে নিয়ে বাছাই ও প্যাকেটজাত করা হচ্ছে।

যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, বিদেশে পাঠানোর জন্য মানসম্মত সবজি বাঁধাকপি উৎপাদনে সরাসরি মনিটরিং করছে উপজেলা কৃষি অফিস। স্বচ্ছতার সঙ্গে উত্তম ব্যবস্থাপনা ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট শতভাগ সফল হয়েছে। যশোর থেকে বিদেশে বাঁধাকপি রপ্তানিতে ভিন্নমাত্রা জুগিয়েছে। স্থানীয় বাজারে যখন বাঁধাকপির দাম কমে যাচ্ছে তখন রপ্তানি শুরু হওয়ায় কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে