বাংলাদেশে বিনিয়োগ এখন সাশ্রয়ী ও নিরাপদ

বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে বক্তারা

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের একটি স্টল -যাযাদি
বাংলাদেশে বিনিয়োগ অনেক বেশি সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ। দেশে বিনিয়োগে রয়েছে প্রচুর সুযোগ-সুবিধা। ইতোমধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ চলছে, বিনিয়োগও আসতে শুরু করেছে। এসব দিক বিচেনায় বিশ্বের অন্যান্য দেশকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা। রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলমান বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে এ আহ্বান জানানো হয়। আন্তর্জাতিক এ বিজনেস সামিটের আয়োজন করেছে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। সামিটের দ্বিতীয় দিনে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে ৯টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে এপারেল ও টেক্সটাইল, কনজিউমার প্রোডাক্ট, ডিজিটাল ইকোনমি, কৃষি ও জাপান- বাংলাদেশ ব্যবসায়িক সম্ভাবনা বিষয়ক সেমিনার উলেস্নখযোগ্য। বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সরকার সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বিনিয়োগবান্ধব করে। চীন, কোরিয়া, জাপান ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজও এগিয়ে চলেছে। বিডা অলরেডি ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করেছে। নিয়মের মধ্যে এসেছে দেশের ই-কমার্স খাত। ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে কাজ করছে দেশ। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, দেশের শিল্প-কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ বেড়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শিল্প-কারখানায় গ্যাসের সংকট কেটে যাবে। কারখানাগুলোতে আগের চেয়ে আরও বেশি গ্যাসের চাপ পাওয়া যাবে। 'গার্মেন্টস খাত থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয় ও করণীয়' শীর্ষক সেশনে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, শিল্প-কারখানায় কয়েকদিনের মধ্যেই গ্যাসের সরবরাহ বাড়বে। সরকার এলএনজি আমদানি করছে। বিদু্যৎ আমদানি করছে। শিল্প-কারখানায় গ্যাস বিদু্যতের সংকট দ্রম্নতই কেটে যাবে। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমরা বিদু্যৎ-গ্যাসে ভর্তুকি দিচ্ছি। দেশে গ্যাস বিদু্যতের দাম বাড়ানো হলেও সরবরাহ ঠিক রাখা হয়েছে। ভর্তুকি কমাতে হয়েছে কারণ আমরা শ্রীলংকা হতে চাই না। মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসাবান্ধব। গার্মেন্টস খাতকে ব্যাপক সহযোগিতা দিয়েছেন। করোনায় যেখানে সারাবিশ্ব থমকে গিয়েছিল, সেখানে প্রধানমন্ত্রী এ খাতকে সচল রাখতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছিলেন। এভাবেই আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চেয়ে বাংলাদেশে সাশ্রয়ী ও নিরাপদ বিনিয়োগ পরিবেশ রয়েছে। এদেশে বিনিয়োগ করলে ৪৭ থেকে ৮৪ শতাংশ শ্রমিকখাতে সাশ্রয় হবে। ম্যানেজারস স্যালারিতে সাশ্রয় হবে ৪১ থেকে ৬৯ শতাংশ পর্যন্ত। এছাড়া ৬ থেকে ৮৯ শতাংশ সাশ্রয়ী হবে পানিতে। বিদু্যতে সাশ্রয় হবে ১০ থেকে ৫৫ শতাংশ। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আমাদের মেগা প্রজেক্টকে ঘিরে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু, টানেল, পায়রা সেতুসহ আরও অনেক উন্নয়ন হয়েছে বিনিয়োগ-ব্যবসাকে সহজ করতে। বিশ্বের মধ্যে সবুজ কারখানায় সবচেয়ে বেশি আমাদের দেশে। বিশ্বের সবচেয়ে ক্লিন সবুজ কারখানাটিও আমাদের দেশে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ রয়েছে আমাদের, আসুন আমাদের এখানে, সব সুবিধা রয়েছে, বিনিয়োগ করুন। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি হামীম গ্রম্নপের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ বলেন, বিশ্বে এখন ম্যানমেড ফাইবারের চাহিদা বাড়ছে। ক্রেতারা এখন ম্যানমেড ফাইবার পণ্য চায়। এ খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এফবিসিসিআইয়ের এমন উদ্যোগ থাকলে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আনা আরও সহজ হবে। আমাদের দেশে ভালো জব মার্কেট আছে, যেটা অন্য দেশের চেয়ে সাশ্রয়ী। ইকোনমিক জোনে ননস্টপ সার্ভিস শুরু হয়েছে। ১১ মার্চ তিন দিনব্যাপী এই শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি একইদিন সামিটের অন্যতম আকর্ষণ 'বেস্ট অব বাংলাদেশ এক্সপো'রও উদ্বোধন করেন তিনি। 'বেস্ট অব বাংলাদেশ এক্সপো'-তে দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি বিশ্বমানের পণ্য প্রদর্শনী করা হচ্ছে, যা সামিটে আগত বিদেশি উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের নজর কাড়ছে। এক্সপোতে বেঙ্গল গ্রম্নপ, মেঘনা গ্রম্নপ, আকিজ গ্রম্নপ, আবুল খায়ের গ্রম্নপ, ওয়ালটন, প্রাণ আরএফএল, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন, বিজিএমইএ, বিকেএমইএর প্যাভিলিয়নসহ প্রায় অর্ধশত স্টল রয়েছে। বিজনেস সামিটের দ্বিতীয় দিনে যুক্তরাজ্য, জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা অংশ নিয়েছেন। তারা বেস্ট অব বাংলাদেশ এক্সপোতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি পণ্য দেখে প্রশংসা করছেন।