মোবাইল ফোনসেট আমদানি নিভর্রতা কমছে

দেশে সংযোজিত ২৩ লাখ মোবাইল সেট বাজারে সৃষ্টি হয়েছে বিপুল কমর্সংস্থান উৎপাদিত ফোনসেট রপ্তানির সুযোগ

প্রকাশ | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ওবায়দুর রহমান
সরকারের দীঘের্ময়াদি নীতি সহায়তার কারণে দেশে মোবাইল ফোনসেটের আমদানি নিভর্রতা কমছে। এখন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে দেশি-বিদেশি নামি সব মোবাইল সেট। ২০১৮ সালে স্থানীয়ভাবে সংযোজন হয়েছে ২৩ লাখ মোবাইল ফোনসেট। যা এই খাতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বতর্মানে দেশে পঁাচটি মোবাইল সংযোজন কারখানা চালু হয়েছে। আমদানি নিরুৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে সরকারের কর কাঠামোয় পরিবতর্ন আনার ফলে দেশি ও বিদেশি কয়েকটি জনপ্রিয় ব্রান্ড নতুন কারখানা স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, এই উন্নয়ন বাংলাদেশের মযার্দা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ডিজিটাল পণ্য উৎপাদনকারী দেশ হওয়া। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। আমাদের শুরু ভালো হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোডর্ (এনবিআর) সূত্রে জানা যায়, বতর্মানে মোবাইল ফোনসেট আমদানিতে ৩২ শতাংশ কর দিতে হয়। সেখানে স্থানীয়ভাবে সংযোজন করলে কর দিতে হয় ১৮ শতাংশ। আর সম্পূণর্ বাংলাদেশে উৎপাদন করলে কর দিতে হয় মাত্র ১৩ শতাংশ। দেশীয় ব্রান্ড ওয়ালটন ২০১৭ সালের অক্টোবরে প্রথম মোবাইল সেট উৎপাদন শুরু করে। যারা গত বছর ১১ লাখ মোবাইল সেট বিক্রি করেছে। প্রথম দিকে সংযোজন লাইন খুবই ধীরে চলছিল। তবে পরের দিকে চাহিদা বাড়ায় সংযোজনও বাড়ে। যার ফলে গত বছরের জুলাই থেকে ওয়ালটন আর মোবাইল সেট আমদানি করছে না। ২০১৮ সালের প্রথম ছয় মাসে ওয়ালটন চীন থেকে সাত লাখ মোবাইল সেট আমদানি করে। ওয়ালটনের সেলুলার ফোন বিভাগের প্রধান আসিফুর রহমান খান বলেন, বতর্মানে আমরা সম্পূণর্ নিজেদের কারখানার উৎপাদনের ওপর নিভর্রশীল। স্যামসাং ব্রান্ডের মোবাইল সেট সংযোজন করছে ফেয়ার গ্রæপ। এই গ্রæপের চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহাবুব বলেন, নরসিংদীতে আমরা গত বছরের দ্বিতীয়াধের্ কারখানা স্থাপন করি। যেখানে সংযোজিত ৪জি সুবিধা আছে এমন প্রায় ৬ লাখ মোবাইল সেট বিক্রি করি। কারখানা খুবই ভালো করছে। এ বছর আমরা গত বছরের তুলনায় ৫-৬ গুণ বেশি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ করেছি। বতর্মানে কারখানায় মাসে তিন লাখ মোবাইল সেট উৎপাদন হচ্ছে। আমাদের আমদানি নিভর্রতা কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বাজারের শীষর্স্থানে অবস্থান করছে সেম্ফনি। তারাও সংযোজন কারখানা স্থাপন করেছে। যেখানে গত দুই মাস ধরে তাদের আমদানি পণ্যগুলো তৈরি হচ্ছে। সেম্ফনির মূল কোম্পানি এডিসন গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া শহিদ বলেন, তারা এই কারখানায় সংযোজিত ৩.৫ লাখ স্মাটের্ফান বিক্রি করেছেন। যা মোট বিক্রির অধের্ক। নতুন এই প্লান্ট বতর্মানে মাসে ২ লাখ মোবাইল সেট সংযোজন করছে। চীনা মোবাইল ফোনসেট প্রস্তুতকারী কোম্পানি ট্রান্সসেশন গাজীপুরে গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কারখানা স্থাপন করেছে। যেখানে উৎপাদিত আই-টেল ব্রান্ডের ৩ লাখ মোবাইল ফোনসেট বিক্রি করেছে। যার মধ্যে ১ লাখ ছিল স্মাটর্ ফোন। কোম্পানির প্রধান নিবার্হী কমর্কতার্ রেজানুল হক বলেন, আমাদের কারখানা নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন আছে। আমাদের প্রথম লক্ষ্য স্থানীয় বাজার দখল নেয়া। এর পর রপ্তানির পরিকল্পনাও রয়েছে। ট্রান্সসেশনের আরও একটি ব্রান্ড হলো টেকনো। এই ব্রান্ডেরও খুব দ্রæত সংযোজন শুরু হবে। স্থানীয় কোম্পানি আল আমীন ব্রাদাসর্ প্রায় দুই দশক ধরে মোবাইল ফোনসেট আমদানি করে। তারা সম্প্রতি গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে কারখানা স্থাপন করেছে। দুই মাস আগে তারা ৫ স্টার মোবাইল নামে হ্যান্ডসেট উৎপাদন শুরু করে। গত ডিসেম্বর থেকে বাজারজাত শুরু করেছে। প্রথম মাসেই বিভিন্ন মডেলের ৩৫ হাজার হ্যান্ডসেট বিক্রি হয়েছে।