বিটিআরসির সিদ্ধান্তে গ্রামীণফোন শেয়ারের দরপতন

প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
টেলিকম খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর একটি সিদ্ধান্তের তীব্র প্রভাব পড়েছে গ্রামীণফোন লিমিটেডের শেয়ারে। ওই সিদ্ধান্তের প্রভাবে গত দুই দিন ধরে টানা দর হারিয়েছে বøুচিপ এই কোম্পানিটির শেয়ার। দুই দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে ৪ শতাংশের বেশি। উল্লেখ্য, বিটিআরসি গত সপ্তাহে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনকে সিগনিফিকেন্ট মাকের্ট পাওয়ার বা তাৎপযর্পূণর্ বাজার ক্ষমতাসম্পন্ন পরিচালনাকারী (এসএমপি অপারেটর) হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়। রোববার গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে বিটিআরসি গ্রামীণফোনের করণীয় ও বজর্নীয় কাযর্ক্রম ঠিক করে দিতে পারবে। বাজারে প্রতিযোগিতা ও শৃঙ্খলা আনতে গ্রামীণফোনকে এসএমপি অপারেটর হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক। রোববার একটি জাতীয় দৈনিক এ বিষয়ে একটি রিপোটর্ প্রকাশ করলে বিষয়টি ব্যাপকভাবে জানাজানি হয়। গত বছরের নভেম্বর মাসে বিটিআরসি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের অধীনে ‘তাৎপযর্পূণর্ বাজার ক্ষমতা প্রবিধান মালা-২০১৮’ জারি করে। এতেই কোনো মোবাইল অপারেটর গ্রাহকসংখ্যা, রাজস্ব অথবা তরঙ্গ- এ তিন ক্ষেত্রের একটিতে ৪০ শতাংশের বেশি বাজার হিস্যাধারী হলে এসএমপি অপারেটর হিসেবে ঘোষণার ক্ষমতা দেয়া হয় বিটিআরসিকে। বিটিআরসির চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণফোন গ্রাহকসংখ্যা ও অজির্ত বাষির্ক রাজস্বের দিক দিয়ে ৪০ শতাংশ বাজার হিস্যাধারী। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, প্রতিযোগিতার অজুহাতে বিটিআরসি যদি এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে অন্য অপারেটররা বাড়তি সুবিধা পাবে, তাতে গ্রামীণফোনের গ্রাহক ও ব্যবসা কমে যেতে পারে। আর তাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে কোম্পানিটির মুনাফার ওপর। এই আশঙ্কার প্রভাবেই দু’দিন ধরে দর হারিয়েছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত রোববার গ্রামীণফোনের শেয়ারের ক্লোজিং মূল্য ছিল ৪০৬ টাকা ১০ পয়সা। পর দিন তা ৮ টাকা ৫০ পয়সা বা ২ শতাংশ কমে ৩৯৭ টাকা ৬০ পয়সায় নেমে আসে। মঙ্গলবার গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম আরেক দফা কমে ৩৮৮ টাকা ৬০ পয়সা হয়, যা আগের দিনের চেয়ে ৯ টাকা বা ২ দশমিক ২৬ শতাংশ কম। রেগুলেটরের একতরফা সিদ্ধান্তের কারণে শেয়ারবাজারে কোম্পানির মুনাফা ও শেয়ারের দামে বিপযর্য় এর আগেও ঘটেছে। ২০১৫ সালের শেষ ভাগে জ্বালানি-বিদ্যুত খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনাজির্ রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কারো সাথে পরামশর্ না করে তালিকাভুক্ত কোম্পানি তিতাস গ্যাসের গ্যাস সঞ্চালন ফি কমিয়ে দেয়। তাতে কোম্পানিটির মুনাফা ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশ তাদের কাছে থাকা তিতাস গ্যাসের শেয়ার বিক্রি করে দিতে থাকেন। তাতে বাজার অস্থির হয়ে উঠে। ওই সিদ্ধান্তের আগে পযর্ন্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে তিতাস গ্যাসের শেয়ারের বড় মজুদ ছিল। সঞ্চালন চাজর্ কমানোর সিদ্ধান্তে তাদের মধ্যে শুধু তিতাস গ্যাস নয়, সামগ্রিক বাজার সম্পকের্ হতাশা ও অনাস্থা তৈরি হয়।