টাওয়ার কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে রবির মুনাফা ২১৫ কোটি টাকা

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
২০১৮ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে ৯৬ কোটি টাকা লোকসান সত্ত্বেও বছর শেষে রবি'র মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২১৫ কোটি টাকায়। টাওয়ার কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করেই এ মুনাফা পেয়েছে অপারেটরটি। ২০১৬ সালে একীভূত হওয়ার পর একীভূত কোম্পানি হিসেবে এই প্রথম মুনাফার দেখা পেল রবি। ২০১৮ সালের শেষে রবির মোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৬৯ লাখে, যা দেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের ২৯ দশমিক ৯ শতাংশ। এদের মধ্যে ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ বা ২ কোটি ৮৩ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। চতুর্থ প্রান্তিকের ১ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকাসহ ২০১৮ সালে রবি'র মোট আয়ের পরিমাণ ৬ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা। তৃতীয় প্রান্তিক থেকে চতুর্থ প্রান্তিকে আয় বৃদ্ধির হার শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। ২০১৭ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় ২০১৮ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে রবি'র মোট আয় ৫ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। ২০১৮ সালে তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় চতুর্থ প্রান্তিকে ভয়েস কল থেকে রবির আয় ১ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। তবে ২০১৭ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় ২০১৮ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে ভয়েস থেকে আয় ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৪.৫জি নেটওয়ার্কের দ্রম্নত সম্প্রসারণের ফলে পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় ডেটা থেকে আয় ১৪ দশমকি ৯ শতাংশ এবং পূর্ববর্তী প্রান্তিকের তুলনায় আয় ৬ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে ২৮ দশমিক ১ শতাংশ মার্জিনসহ রবি'র ইবিআইটিডিএ দাঁড়িয়েছে ৪৯৬ কোটি টাকা, যা একই বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। পার্সেন্টেজ পয়েন্টের (পিপি) হিসাবে ২০১৮ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় চতুর্থ প্রান্তিকে ইবিআইটিডিএ ১ দশমিক ৩ পিপি এবং পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ পিপি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের ৬৭৫ কোটি টাকাসহ পুরো বছরে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে মোট ৩ হাজার ৭৯ কোটি টাকা জমা দিয়েছে রবি। এ নিয়ে ১৯৯৭ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে মোট জমার পরিমাণ ২৩ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা। নেটওয়ার্কের মান উন্নয়নে ২০১৮ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে রবির মূলধনী বিনিয়োগের পরিমাণ ৫৮৬ কোটি টাকা। এ খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ হওয়ায় ২০১৮ সালের মোট মুলধনী বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৮ কোটি টাকায়। ১৯৯৭ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ২৩ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা মূলধনী বিনিয়োগ করেছে রবি। একই সময়ে শেয়ার হোল্ডারদের পরিশোধ করেছে মাত্র ২৯০ কোটি টাকা। রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে, ৪.৫জি সেবায় ব্যাপক বিনিয়োগের ফলে ডেটা থেকে রাজস্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ওভার-দ্য-টপ মোবাইল অ্যাপিস্নকেশন ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে ভয়েস সেবা থেকে যে রাজস্ব কমছে ডেটা সেবায় মাত্রাতিরিক্ত প্রতিযোগিতা থাকায় সে ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই সরকারের কাছে আমাদের আবেদন তারা যেন টেলিযোগাযোগ খাতের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ডেটা সেবার ক্ষেত্রে একটি নূ্যনতম মূল্য নির্ধারণ করে দেন। তিনি আরও বলেন, বাজারে দুইটি ব্র্যান্ড একসাথে পরিচালনা করার যে কৌশল আমরা হাতে নিয়েছিলাম তা সফল হওয়ায় ব্র্যান্ডের অবস্থান নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। ৪.৫জি নেটওয়ার্কের দ্রম্নত সম্প্রসারণের ফলে যেসব এলাকায় আমরা ব্যবসায়িক অগ্রগতিতে কিছুটা পিছিয়ে ছিলাম সেসব এলাকাতেও লক্ষণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছি আমরা। ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সহজে কার্যক্রম পরিচালনা করায় ব্যয় ব্যবস্থাপনায়ও আমাদের তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি এসেছে। আমাদের এন্টারপ্রাইজ ও নতুন নতুন ডিজিটাল সেবা-ভিত্তিক ব্যবসা যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। দেশের একমাত্র অপারেটর হিসেবে ভোল্টি ও ৫জি সেবার পরীক্ষা চালিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের ডিজিটাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রবি।