উদ্যোক্তাদের পণ্যের পসরা এসএমই মেলায়

প্রকাশ | ১৮ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসএমই উদ্যোক্তাদের বাহারি পণ্যের সপ্তাহব্যাপী মেলা শুরু হয়েছে গত শনিবার থেকে। আগামী ২২ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
নকশি কাঁথা, বেডশিট, থ্রিপিস, শোপিস, পাটের ব্যাগ, জুতা, জুয়েলারি সামগ্রী এমন অসংখ্য পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা (এসএমই)। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসএমই ফাউন্ডেশন আয়োজিত ৭ম জাতীয় এসএমই মেলায় গেলেই দেখা যাবে এসব পণ্যের সমাহার। সারাদেশর ২৮০ জন সফল উদ্যোক্তা তাদের প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্য নিয়ে এ মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে নারী উদ্যোক্তা আছেন ১৮৮ জন এবং বাকি ৯২ জন পুরুষ উদ্যোক্তা। এসব সফল উদ্যোক্তাদের বাহারি রঙ ও ডিজাইনে পণ্য দেখলে রুচিশিলদের সহজেই পছন্দ হবে। দামও তুলনামূলক কম। মেলায় বাহারি নকশি কাঁথা, বেডশিট, থ্রিপিস, টুপিস, ওয়ান পিসের পসরা সাজিয়ে বসেছেন যশোরের সফল নারী উদ্যোক্তা সালমা ইসলাম। তিনি জানান, তার স্টল থেকে ক্রেতারা ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে বেডশিট, ৪ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে নকশি কাঁথা, ২ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে শাড়ি, ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে থ্রিপিস, একই দামে টুপিস এবং ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে ওয়ান পিস কিনতে পারবেন। মেলায় স্ত্রীর তৈরি বিভিন্ন পাট পণ্যের সামগ্রী এবং হস্তশিল্প পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন নীলফামারীর মো. আব্দুল মতিন খান। তিনি বলেন, আমার স্ত্রীর কল্যাণে অভাবের সংসারে আজ সচ্ছলতা এসেছে। এক সময় আমার স্ত্রী নিজে সেলাইয়ের কাজ করতো। এখন আমার স্ত্রীর প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ৫২ জন কাজ করেন। অর্ডার বেশি হলে চুক্তিতে আরও লোক নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি বলেন, আমরা যাবতীয় হস্তশিল্প পণ্য তৈরি করি। এর মধ্যে রয়েছে- বাহারি ডিজাইনের নকশিকাঁথা, বেডশিট, থ্রিপিস, শোপিস, কুশন কাভার। এর পাশাপাশি পাট দিয়ে তৈরি পণ্যেও আছে। সাধারণত শোরুমে যে দামে এসব পণ্য বিক্রি হয় আমরা তার থেকে বেশ কম দামে বিক্রি করি। মৈলায় পাট দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ব্যাগের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফাইন ফেয়ার ক্রাফট। শাহানারা বেগম নামের এক নারী উদ্যোক্তা এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন। মেলা প্রাঙ্গণে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির স্টলে কথা হয় বিক্রয়কর্মী মো. রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের কাছ থেকে ক্রেতারা ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮৫০ টাকা দামের পাট দিয়ে তৈরি ব্যাগ কিনতে পারবেন। ১০০ টাকা দিয়ে পাওয়া যাবে পানির বোতল রাখার ব্যাগ। আর শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি স্কুলব্যাগ আছে ৬৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮৫০ টাকা দামের। ট্রাভেল ব্যাগ আছে ৩৫০ থেকে ৬৫০ টাকা দামের। তিনি আরও বলেন, আমাদের ব্যাগে বাহারি ডিজাইন করা। এসব ব্যাগ তৈরি করা হয় উন্নত মানের পাট দিয়ে। যে কারণে এসব ব্যাগ থেকে উলের মতো আঁশ উঠবে না। আবার ব্যাগে যে রঙ করা হয়েছে সেটাও উঠবে না। ফাইন ফেয়ার ক্রাফটের স্টলটি যেখানে রয়েছে তার পাশেই রয়েছে পাট দিয়ে তৈরি বাহারি জুতার একটি স্টল। স্টলটিতে পাট দিয়ে তৈরি জুতা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। এরপাশে থাকা আরও দুটি স্টলে একই দামে বিক্রি হচ্ছে পাট দিয়ে তৈরি বাহারি জুত। একটি স্টলের বিক্রিয়কর্মী রোহান বলেন, আমাদের এখানে যেসব জুতা আছে তার সবই উন্নত মানের পাট দিয়ে তৈরি। এসব জুতা দেখতে যেমন সুন্দর মানও তেমন ভালো। কিছু কিছু জুতা আছে, যেগুলো দেখে সহজে কেউ বুঝতে পারবে না এগুলো পাট দিয়ে তৈরি। খুব নিখুঁতভাবে না দেখলে মনে হবে এগুলো চামড়ার জুতা। সফল উদ্যোক্তাদের বাহারি পণ্যের সপ্তাহব্যাপী এই মেলা শুরু হয়েছে শনিবার থেকে। আগামী ২২ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের মেলায় প্রবেশ করতে কোনো টিকিট লাগবে না।