বিতর্কিত ম্যালপাসই বিশ্ব ব্যাংকের শীর্ষ পদে

প্রকাশ | ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ডেভিড ম্যালপাস
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ডেভিড ম্যালপাস বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পেলেন। বিশ্ব ব্যাংকের নির্বাহী পর্ষদের সদস্যরা শুক্রবার সর্বসম্মতিক্রমে ১৩তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাকে মেনে নেন। আগামী মঙ্গলবার থেকে পাঁচ বছরের জন্য বিশ্ব ব্যাংক গ্রম্নপের নেতৃত্ব দেবেন ম্যালপাস। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুগত ম্যালপাস ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় ট্রাম্পের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। ট্রাম্প গত ফেব্রম্নয়ারিতে ম্যালপাসকে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়নের ঘোষণা দিলে বিতর্কের জন্ম হয়। বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফের সমালোচনা করে আসা এই মার্কিন অর্থনীতিবিদ বিশ্ব ব্যাংকের ভূমিকা খর্ব করতে পারেন বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অনেকে। বিশ্ব ব্যাংক 'অনেক বড়' বলে মনে করেন ডেভিড ম্যালপাস। চীনের মতো মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে কম ঋণ দেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এই দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী বলে যুক্তি দেন ম্যালপাস। বিবিসি বলছে, অর্থনীতির 'গেস্নাবাল অর্ডারকেই' চ্যালেঞ্জ করেছিলেন ম্যালপাস। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক থিংক ট্যাংক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, 'বহুপক্ষীয়তা প্রকৃত অর্থে অনেক বিস্তৃত হয়েছে-এই জায়গা থেকে তা যুক্তরাষ্ট্র ও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করছে।' এখানেই শেষ নয় বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম যখন বিশ্ব ব্যাংকের অংশীদারদের কাছে তহবিল যোগানের আহ্বান জানিয়েছিলেন, সে সময় ব্যাংকে সংস্কারের বিনিময়ে তার বন্দোবস্ত করতে এগিয়ে আসেন ডেভিড ম্যালপাস। ম্যালপাস এখন বিশ্ব ব্যাংকে যেসব পরিবর্তন আনতে পারেন তার মধ্যে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে দরিদ্র দেশগুলোর প্রতি যে গুরুত্ব থাকে, তা সীমিত হতে পারে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। চীনকে ঋণ দেওয়া ঠেকাতে বিশ্ব ব্যাংককে চাপ প্রয়োগকারী ম্যালপাস গত বছর সংস্থার ঋণ বিতরণ পদ্ধতির সংস্কার আলোচনায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। সে সময় যেসব সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয় তার মধ্যে মধ্য আয়ের দেশগুলোকে আরও বেসরকারি খাতের দিকে ঝোঁকানো এবং বিশ্ব ব্যাংক কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি সীমিত করার বিষয় রয়েছে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়। তহবিলের সবচেয়ে বড় যোগানদাতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রই সব সময় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বেছে দিয়ে আসছে, যদিও এ বিষয়ে কোনো লিখিত চুক্তি নেই। বিশ্ব ব্যাংকের ২৫ সদস্যের নির্বাহী পর্ষদের সবাই প্রেসিডেন্ট পদে ম্যালপাসকে সমর্থন জানিয়েছেন। এখানে চীনের প্রতিনিধি সংখ্যা তৃতীয় সর্বোচ্চ হলেও তারাও আপত্তি করেননি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিলানোভা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টোফার কিলবি বিবিসিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রার্থীকে পরাজিত করা যাবে না বুঝতে পেরেই চীন ও অন্যান্য অংশীদাররা ম্যালপাসের বিপক্ষে যাননি বলেই তার ধারণা। 'যেহেতু তারা দেখেছে যে, কেউ ট্রাম্পের বিরোধিতা করলে তিনি তাকে শাস্তি দেন, তাই তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে লড়তে চায়নি।'