বিদু্যতে ভর্তুকির তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়ের জন্য চিঠি

২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব বাজেটের আওতায় অর্থ বিভাগ থেকে বাংলাদেশ বিদু্যৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো) কে বিদু্যৎ ক্রয়-বিক্রয়ের ঘাটতি বাবদ ভর্তুকির অর্থ ছাড়ের জন্য অর্থ বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে

প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
বিদু্যৎ খাতের ভর্তুকি পরিশোধে তিন হাজার কোটি টাকা ছাড় করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছে বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই টাকায় আদানি পাওয়ার (ঝাড়খন্ড) লিমিটেড এবং দেশীয় কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ কেন্দ্রের কয়লা আমদানির অপরিশোধিত বিল মেটানো হবে। বিদু্যৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সম্প্রতি বিদু্যৎ মন্ত্রণালয় থেকে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব বাজেটের আওতায় অর্থ বিভাগ থেকে বাংলাদেশ বিদু্যৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো) কে বিদু্যৎ ক্রয়-বিক্রয়ের ঘাটতি বাবদ ভর্তুকির অর্থ ছাড়ের জন্য অর্থ বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাবিউবো সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি বিদু্যৎ উৎপাদন কোম্পানিগুলোর স্থানীয় ঋণের বিপরীতে ১০ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা বন্ডের মাধ্যমে দেওয়ার পর ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি বিদু্যৎ উৎপাদন কোম্পানি এবং আদানিসহ ভারত থেকে বিদু্যৎ ক্রয় বাবদ মোট অপরিশোধিত বিলের পরিমাণ ৪২ হাজার ৭০৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এ ছাড়াও সরকারি বিদু্যৎ উৎপাদন কোম্পানি ও দেশীয় আমদানি নির্ভর কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদন কোম্পানির ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত অপরিশোধিত বিলের পরিমাণ ১৬ হাজার ৭৯৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সূত্র জানায়, আসন্ন পবিত্র রমজান, সেচ ও গ্রীষ্ম মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ সরবরাহের লক্ষ্যে জরুরিভিত্তিতে অপরিশোধিত বিল পরিশোধের জন্য ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের ভর্তুকির অবশিষ্ট অর্থ (৩৫,০০০-১৭,০০০) ১৭,৭০১ কোটি টাকা ছাড় করা প্রয়োজন বলে বিদু্যৎ বিভাগের চিঠিতে উলেস্নখ করা হয়েছে। সূত্র জানায়, জরুরিভিত্তিতে এই ১৭ হাজার ৭০১ কোটি টাকার মধ্যে আগামী মার্চ মাসের জন্য ৪,০০০ কোটি টাকা, এপ্রিল মাসের জন্য ৪,৫০০ কোটি টাকা, মে মাসের জন্য ৪,৫০০ কোটি টাকা এবং জুন মাসের জন্য ৪,৭০১ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের মার্চ মাসের জন্য ৪০০০.০০ কোটি টাকা চাহিদার বিপরীতে আদানি পাওয়ার (ঝাড়খন্ড) লিমিটেডের পাওনা পরিশোধ করতে ১৫০০ কোটি টাকা এবং দেশীয় কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎকেন্দ্রের কয়লা আমদানির অপরিশোধিত বিল পরিশোধের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা অর্থাৎ মোট ৩,০০০ কোটি টাকা জরুরিভিত্তিতে ভর্তুকি হিসাবে ছাড় করার জন্য চিঠিতে উলেস্নখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বিদু্যতের বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য ভর্তুকি হিসেবে ৩,০০০ কোটি টাকা ছাড়ের জন্য বিদু্যৎ বিভাগের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, বিদু্যৎ বিভাগের চিঠি পেয়েছি। এ বিষয়ে দ্রম্নত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দেশের বিদু্যৎ চাহিদা মেটাতে ভারতের আদানি গ্রম্নপের সঙ্গে ২০১৭ সালে বিদু্যৎ ক্রয় চুক্তি করে বিপিডিবি। চুক্তি অনুসারে কেন্দ্রটি থেকে ২৫ বছর বিদু্যৎ কিনবে বাংলাদেশ। নিয়ম অনুযায়ী কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের সিংক্রোনাইজিং থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক উৎপাদনে (সিওডি) যাওয়ার আগ পর্যন্ত বিদু্যৎ উৎপাদনের জ্বালানি ব্যয় বিপিডিবিকে দিতে হচ্ছে। তবে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরুর আগেই এ বিদু্যৎ কেন্দ্রের জন্য আমদানি করা কয়লার যে দাম ধরা হয়েছিল, তা নিয়ে আপত্তি তোলে বিপিডিবি। এ নিয়ে গত বছরের শুরুতেই আদানির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা হয়। পরবর্তী সময়ে আদানি পাওয়ারের পক্ষ থেকে বিপিডিবিকে জানানো হয়, পায়রা ও রামপাল কেন্দ্রের চেয়ে তাদের বিদু্যতের দাম কম হবে। বিদু্যৎ সরবরাহেও দেখা গেছে, বাংলাদেশে আদানি যে বিদু্যৎ সরবরাহ করেছে, তা স্থানীয় বৃহৎ বিদু্যৎ কেন্দ্রের চেয়ে ইউনিট প্রতি দাম কম পড়েছে।