হঠাৎ করেই টিআইএন নেওয়ার হিড়িক

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ ডেস্ক
হঠাৎ করেই কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) নেওয়া বেড়ে গেছে। গত আড়াই মাসে প্রায় ২১ লাখ টিআইএন নিয়েছেন করদাতারা। অর্থাৎ এ সময়ে প্রতিদিন গড়ে ২৮ হাজারের মতো টিআইএন নেওয়া হয়েছে। মূলত ৪৩ সেবায় টিআইএন গ্রহণ ও রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতার কারণে কয়েক মাস ধরেই টিআইএন নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার পর্যন্ত সারা দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫। আড়াই মাস আগেই গত ৮ ফেব্রম্নয়ারি প্রথমবারের মতো টিআইএনধারীর সংখ্যা এক কোটি ছাড়ায়। ওই দিন শেষে টিআইএনধারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১ কোটি ৩ হাজার ৮৪৪। ওই সময়ের পর টিআইএন নেওয়ার গতি আরও বেড়ে গেছে। এনবিআরের হিসাবে দেখা গেছে, গত দুই মাস প্রতিদিন গড়ে ২৮ হাজার ১৭৮ জন টিআইএন নিয়েছেন। গত নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি মাসেও দৈনিক ১০-১২ হাজার টিআইএন ইসু্য হতো বলে এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান। কর্মকর্তারা জানান, রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র (পিএসআর) ছাড়া এখন অনেক সরকারি-বেসরকারি সেবা পাওয়া যায় না। তাই করযোগ্য আয় না থাকা সত্ত্বেও এখন অনেককে বাধ্য হয়ে টিআইএন নিতে হচ্ছে। এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন্য ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, টিআইএনের সংখ্যা বৃদ্ধি ইতিবাচক। এতে করের আওতা বাড়ছে। তবে জনসংখ্যা ও অর্থনীতি সম্প্রসারণের তুলনায় এই সংখ্যা এখনো কম। কর দিতে পারেন, এমন যোগ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে কর নেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। করের ভার যেন ধনীদের ওপর বেশি পড়ে, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, এ অর্থবছরে ৩৫ লাখ ৪০ হাজার ৪০৬ জন করদাতা রিটার্ন দিয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় পাঁচ লাখের কিছুটা বেশি। এ বছর রিটার্ন বাবদ কর পাওয়া গেছে ৫ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা। গত রোববার আয়কর বিভাগের সঙ্গে রাজস্বসংক্রান্ত বৈঠক করেন এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। বৈঠকে এনবিআর সদস্য, বিভিন্ন কর কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বেশ কয়েকজন কমিশনার জানান, ৪৩ ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা গ্রহণে রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করার ফল মিলছে। বিপুলসংখ্যক মানুষ টিআইএন নিচ্ছেন। এটি ভালো উদ্যোগ। নতুন যাঁরা টিআইএন নিয়েছেন, তাঁরা রিটার্ন দিলে কর বাড়বে এবং এর পাশাপাশি রিটার্ন জমাকারীর সংখ্যাও বাড়বে।