বিমানবন্দর যেন স্বর্ণ খনি!

প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিমানবন্দর নয়, এ যেন স্বর্ণের খনি। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়মিত বিরতিতেই পাওয়া যাচ্ছে স্বর্ণ আর স্বর্ণ। প্রতিবারই মিলছে শত শত স্বর্ণের বার। এসবের সিংহভাগ আসছে দুবাই থেকে পাচার হয়ে। স্বল্প আয়ের প্রবাসীদের মোটা অঙ্কের অর্থের লোভ দেখিয়ে ব্যবহার করা হয় বাহক হিসেবে। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বাংলাদেশ বিমান। নানা কৌশলে নিয়ে আসা স্বর্ণের সঙ্গে কখনো কখনো বাহককে পাওয়া গেলেও মূল কারবারিরা ধরা পড়ে না। ফলে স্বর্ণ চোরাচালান যেমন বন্ধ হচ্ছে না, তেমনি আইনের আওতায়ও আনা যাচ্ছে না সেই কারবারিদের। বাংলাদেশে কোনো স্বর্ণের খনি নেই এ কথা সবাই জানে। কিন্তু দেশে যে হারে শাহজালাল ও শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালান হচ্ছে এবং কিছু কিছু চালান মাঝে-মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে তাতে মনে হয় বাংলাদেশের এ দুটি বিমানবন্দরই এক একটি স্বর্ণের খনি। তা না হলে বিমানবন্দরগুলোতে এত স্বর্ণ আসে কোথা থেকে আবার যায়ই বা কোথায়, সাধারণ জনগণের এমন প্রশ্নের জবাব কে দেবে? বিভিন্ন সংস্থার কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও দেশি-বিদেশি চোরাচালান সিন্ডিকেটের সাহায্য-সহযোগিতায় হযরত শাহজালাল (রা.) ও চট্টগ্রাম শাহআমানত বিমানবন্দরকে চোরাকারবারিরা তাদের চোরাচালানের নিরাপদ ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। অবৈধভাবে অবাধে স্বর্ণ চোরাচালানের কারণে সরকার শত শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর এই সুযোগে রাতারাতি বিশাল সম্পদের মালিক বনে যাচ্ছেন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সিভিল এভিয়েশন, শুল্ক বিভাগ, শুল্ক গোয়েন্দা, এনবিআর ও এপিবিএনসহ বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সিন্ডিকেট সম্পর্কে সবাই জানলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের শুল্ক বিভাগের উপ-কমিশনার নুর উদ্দিন মিলনের বরাদ দিয়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো জানায়, 'স্বর্ণ চোরাকারবারিরা চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে রুটে পরিণত করতে চাইছে। কাস্টমসসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা তৎপর থাকায় তা করতে পারছে না তারা। এ জন্য প্রায় সময় স্বর্ণের চালান ধরা পড়ছে। তবে স্বর্ণের বাহক ধরা পড়লেও ধরা যাচ্ছে না মূল হোতাদের।' পত্রিকা সূত্রে আরও জানা যায়, শুধু কাস্টমস চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ১২টি চালানে ২৫ কেজি ৭২১ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করেছেন। এ ছাড়া শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের হাতেও ধরা পড়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের বার। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় সমস্ত চোরাকারবারিরা ও সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশকে তাদের আখড়ায় পরিণত করে ফেলবে। আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ তামা হয়ে যাবে। স্বর্ণের পাশাপাশি মাদকের ট্রানজিট হিসেবেও বাংলাদেশকে ব্যবহার করবে। তখন আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমি হয়ে যাবে মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিদের অভয়ারণ্য। সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে দেশ। তখন আর কিছুই করার থাকবে না। সময় থাকতে সাবধান হওয়া অতিব জরুরি। লিখন রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ