টানা সাত সপ্তাহ কমল ডিএসইর বাজার মূলধন

প্রকাশ | ১৮ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই দেশের শেয়ারবাজার দরপতন হয়েছে। এতে কমেছে অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা কমেছে। এ নিয়ে টানা সাত সপ্তাহ ডিএসইর বাজার মূলধন কমল। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৩ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা। বাজার মূলধন হারানোর পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনের অংশ নেয়া অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে ১২২টির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। অন্যদিকে দাম কমেছে ১৯৫টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টির। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৫ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ১০ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক ২১ শতাংশ। অপর দুটি মূল্যসূচকের মধ্যে গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ৩৩ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ১৯ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আর ডিএসই শরিয়াহ্‌ সূচক কমেছে ২২ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৪ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৮ শতাংশ। এদিকে সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৯২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪২৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৩৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বা ৩১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৬১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ১৪৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৬৮৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা বা ৩১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৮৪ দশমিক ২৩ শতাংশই ছিল 'এ' ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দখলে। এছাড়া বাকি ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ 'বি' ক্যাটাগরিভুক্ত, ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ 'এন' ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের এবং দশমিক ৮৯ শতাংশ 'জেড' ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৫ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। ৩৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন। লেনদেনে এরপর রয়েছে- পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, মুন্নু সিরামিক, এস্কয়ার নিট কম্পোজিট, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল, আইএফআইসি ব্যাংক এবং ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস। সপ্তাহ লেনদেন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহে টপটেন লুজার বা দর পতনের শীর্ষে রয়েছে এসএস স্টিল। সপ্তাহে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর কমেছে ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া যায়। তথ্য অনুযায়ী, শেয়ারটি সর্বশেষ ৩০ টাকা দরে লেনদেন হয়। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটি সর্বমোট ২০ কোটি ৫ লাখ ৭১ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ৪ কোটি ১ লাখ ১৪ হাজার ২০০ টাকা। লুজারের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং। সপ্তাহে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর কমেছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। কোম্পানিটি সর্বশেষ ২২ টাকা ৩০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটি সর্বমোট ১১ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ২ কোটি ২৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। দুলামিয়া কটন লুজারের তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সপ্তাহে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর কমেছে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। কোম্পানিটি সর্বশেষ ৫১ টাকা ৫০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটি সর্বমোট ৮৪ লাখ ১ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ১৬ লাখ ৮০ হাজার ২০০ টাকা। তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- স্কয়ার নিট, ইন্দো-বাংলা ফার্মা, নাভানা সিএনজি, আমান কটন, যমুনা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও মেঘনা পেট।