চামড়ার বর্জ্য শোধনে আলাদা কোম্পানি

জমির মূল্য না দিলে ট্যানারি মালিকদের পস্নট বাতিল

প্রকাশ | ২৪ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানের সঙ্গে চামড়াশিল্প সংশ্লিষ্ট সংগঠন ও স্টেকহোল্ডারদের সাভার চামড়া শিল্পনগরীর সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হয়
সাভার চামড়া শিল্পনগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) পরিচালনার জন্য 'ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড' নামে আলাদা একটি কোম্পানি গঠন করা হচ্ছে। এটি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে ২৬ মে-এর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এ সময়ের মধ্যে যেসব ট্যানারি মালিক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠাবেন, তাদের সদস্য করে কোম্পানিটি গঠন করা হবে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানের সঙ্গে চামড়া শিল্প সংশ্লিষ্ট সংগঠন ও স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে সাভার চামড়া শিল্পনগরীর সার্বিক বিষয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্পসচিব আবদুল হালিম, অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগ, বিসিক চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান, এলএফএমইএবি'র চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, বিএফএলএলএফইএ'র চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিনসহ বুয়েট, বিসিক এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় সাভার চামড়া শিল্পনগরীর সার্বিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় ট্যানারি মালিকদের পক্ষ থেকে পস্নটের মূল্য কমানোর দাবি, সলিড বর্জ্য ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থাকরণ, ট্যানারি মালিকদের ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ এবং লেদার ওয়াকিং গ্রম্নপের কমপস্নায়েন্স অনুসরণের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়েও আলোচনা করা হয়। সভায় সালমান এফ রহমান আরো জানান, যেসব ট্যানারি মালিক সাভারে জমির নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করছে না, তাদের পস্নট বাতিল করা হবে। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব রয়েছে। যেসব ট্যানারি মালিক জমির নির্ধারিত মূল্য পরিশোধে আগ্রহী নন, তাদের পস্নট বাতিল করা হবে।' ইতোমধ্যে অনেক চামড়া শিল্প উদ্যোক্তা সরকার নির্ধারিত মূল্যেই পস্নটের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলেও জানান তিনি। শিল্পমন্ত্রী নরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, 'ব্যবসায়ী ও জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে সরকার ট্যানারি মালিকদের অনেক সুবিধা দিয়েছে। এ শিল্পের স্বার্থে আইনের আওতায় ভবিষ্যতেও যতটুকু সুবিধা দেয়া সম্ভব, তা দেয়া হবে।' তবে জমির মূল্য কোনোভাবেই কমানো হবে না বলেও উলেস্নখ করেন তিনি। শিল্পমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পসচিব আবদুল হালিম, অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগ, বিসিক চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান, এলএফএমইএবি'র চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, বিএফএলএলএফইএ'র চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিনসহ বুয়েট, বিসিক এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা। সভায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চামড়া শিল্পনগরীর প্রতি বর্গফুট জায়গা উন্নয়নের জন্য সরকারের ১ হাজার ৭০০ টাকা খরচ হলেও উদ্যোক্তাদের স্বার্থ বিবেচনা করে তা প্রতি বর্গফুট ৪৭১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় পস্নটের মূল্য কমানোর আর কোনো সুযোগ নেই। যেসব ট্যানারি মালিক স্থানান্তরের শর্ত পূরণ করেছেন, তাদের অনুকূলে শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ করেছে। জুলাইয়ের মধ্যে প্রত্যেক ট্যানারি মালিককে লেদার ওয়ার্কিং গ্রম্নপের মানদন্ড অনুযায়ী প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের নির্দেশনা দেয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে যন্ত্রপাতি স্থাপনে ব্যর্থ হলে, সংশ্লিষ্ট ট্যানারির উৎপাদন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় আরও জানানো হয়, সাভার চামড়া শিল্পনগরীর সিইটিপির অবশিষ্ট যন্ত্রপাতি শিডিউল অনুযায়ী প্রিশিপমেন্ট ইন্সপেকশন (পিএসআই) শেষে স্থাপন করা হবে। চীনা ঠিকাদার কোম্পানি আগামী চার মাসের মধ্যে সিইটিপি পুরোপুরি চালু এবং দেশীয় জনবলকে প্রশিক্ষিত করে কোম্পানির কাছে পরিচালনার দায়িত্বভার হস্তান্তর করবে। এ ছাড়া চামড়া শিল্পনগরীর সলিড বর্জ্য ডাম্পিংয়ের জন্য উপযুক্ত জায়গা খুঁজে বের করার বিষয়েও সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ট্যানারি মালিকরা লেদার ওয়ার্কিং গ্রম্নপের কমপস্নায়েন্স সনদ অর্জনের জন্য দ্রম্নত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারা বলেন, এটি দ্রম্নত না করা হলে, ২০২১ সাল নাগাদ চামড়া শিল্পখাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হবে।