মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ

এশিয়ার শেয়ারবাজারে পতন অব্যাহত

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক গত চার মাসের মধ্যে গত শুক্রবার এশিয়ার শেয়ারবাজারে সবচেয়ে মন্থরগতি লক্ষ করা গেছে। গত বছর থেকে বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্যযুদ্ধ সাম্প্রতিক সময়ে কৌশলগতভাবে আরো তীব্র হওয়ায় এশিয়ার শেয়ারবাজারে মন্দাভাব বিরাজ করছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ থেকে বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা যাচ্ছে। খবর রয়টার্স। গতকাল জাপান বাদে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিস্তৃত এমএসসিআই সূচকে দশমিক ২ শতাংশ পতন দেখা গেছে, যা চার মাসের সর্বনিম্ন। এ নিয়ে টানা তিন সপ্তাহ সূচকটি নিম্নমুখী রয়েছে। চলতি সপ্তাহে সূচকটিতে ১ শতাংশ পতন ঘটেছে। তবে চীনা শেয়ারবাজারে সামান্য চাঙ্গাভাব দেখা গেছে। গতকাল সাংহাই কম্পোজিট ও বস্নু-চিপ সিএসআই-৩০০ যথাক্রমে দশমিক ২ শতাংশ ও দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে জাপানের নিক্কেই সূচকে দশমিক ৭ শতাংশ পতন দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিকে কোণঠাসা করে ফেলতে পারে বিনিয়োগকারীদের এ আশঙ্কার প্রভাব ওয়াল স্ট্রিটের ওপর পড়েছে। ওয়াল স্ট্রিটের প্রধান তিনটি সূচকের মধ্যে ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল, এসঅ্যান্ডপি-৫০০ ও নাসডাক কম্পোজিটে যথাক্রমে ১ দশমিক ১, ১ দশমিক ২ ও ১ দশমিক ৬ শতাংশ পতন দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের যে অভিযোগ রয়েছে তা মার্কিন-চীন বাণিজ্য চুক্তি কাঠামোর মধ্যেই সমাধান করা যেতে পারে। এ সময় তিনি চীনের এ টেলিকম কোম্পানিকে 'অত্যন্ত বিপজ্জনক' বলে উলেস্নখ করেন। উলেস্নখ্য, জাতীয় নিরাপত্তার অভিযোগে গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর হুয়াওয়ের সঙ্গে ব্যবসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। একই দিনে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, যেসব দেশ ডলারের বিপরীতে নিজেদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন করছে, সেসব দেশের পণ্যের ওপর অ্যান্টি-সাবসিডি শুল্ক আরোপের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হবে বলে জানিয়েছে। আইনটি কার্যকর হলে চীনা পণ্যের ওপর আরো উচ্চ শুল্ক আরোপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যেতে চাইলে, দেশটিকে আরো বেশি আন্তরিক এবং তাদের ভুল পদক্ষেপগুলো ঠিক করতে হবে। এদিকে ১০ বছর মেয়াদি মার্কিন সরকারি বন্ড ইল্ড হ্রাস পেয়ে ২ দশমিক ২৯২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০১৭ সালের মধ্য অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন। এশিয়ার বাজারে মার্কিন ক্রুডের দাম কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গতকাল তেলের দাম দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৫৮ ডলার ৪৬ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার তেলের দাম ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দুই মাসের সর্বনিম্নে দাঁড়ায়। পূর্ববর্তী সেশনে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ পতনের পর ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারসও ১ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৮ ডলার ৪৬ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির দ্বৈরথ প্রসঙ্গে টোকিওর নমুরা সিকিউরিটিজের ক্রস-অ্যাসেট বিশেষজ্ঞ মাসানারি তাকাদা বলেন, মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ এখনো বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা সম্পূর্ণ নষ্ট করতে পারেনি। ফলে আপাতত আতঙ্কিত হওয়ার কিছু না থাকলেও বিনিয়োগ আস্থা এখনো দুর্বল রয়েছে। এসএমবিসি নিক্কো সিকিউরিটিজের প্রধান ফিক্সড ইনকাম বিশেষজ্ঞ চোতারো মরিতা বলেন, মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে প্রত্যাশার কী পরিমাণ বা কত বড় পতন হয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক একটি ম্যানুফ্যাকচারিং জরিপে বেশ ভালোমতো উঠে এসেছে।