এবার ১০ হাজার কোটি টাকা তারল্য সহায়তা চায় জনতা ব্যাংক

ব্যাংকের তারল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১০,০০০ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা চেয়ে চিঠি দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবুর রহমান

প্রকাশ | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
ব্যাংকের তারল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১০,০০০ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা চেয়ে চিঠি দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবুর রহমান। মজিবুর রহমান বলেন, 'আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ৪ শতাংশ সুদে ৫ বছরের জন্য ১০,০০০ কোটি টাকা ধার চেয়েছি। টাকাটা পেলে আমাদের তারল্য পরিস্থিতির উন্নতি হবে।' এই মুহূর্তে টাকা কেন চেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ব্যাংকের পরিস্থিতি সম্পর্কে সবাই অবগত আছেন। আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। অনেক গ্রাহক আমাদের কাছে টাকা তোলার জন্য আসছেন। ভবিষ্যতে টাকা তোলার চাপ বাড়লেও যেন সমস্যা না হয়, সেজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে এই ধার চাওয়া হয়েছে।' কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তা চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জানিয়েছেন, আমরা এখনও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি। এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি দুর্বল ব্যাংকগুলোর তালিকায় থাকা বেসরকারি পদ্মা ব্যাংক গ্রাহকদের আমানতের টাকা ফেরত দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ১,৩০০ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা চেয়েছিল। প্রসঙ্গত, নভেম্বরে সংকটে থাকা ন্যাশনাল, এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গেস্নাবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন্ত এই ছয় ব্যাংককে তারল্য সহায়তা হিসেবে ২২,৫০০ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, একদিকে যেমন টাকা ছাপানো হচ্ছ্তে তেমনি সেই টাকা বাজার থেকে তুলেও নেওয়া হবে। ফলে 'মূল্যস্ফীতিকে ঠিক রাখার প্রচেষ্টা থেকে পিছিয়ে যাওয়া হচ্ছে না' বলে জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। এদিকে গত সেপ্টেম্বরে জনতা ব্যাংকের আমানত দাঁড়ায় ১.১২ লাখ কোটি ও ঋণ ৯৮,৫৩৭ কোটি টাকায়। এরমধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ৬০,৪৮৯ কোটি টাকা্ত যা মোট ঋণের ৬১ শতাংশ। সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির নিট লোকসান দাঁড়িয়েছে ১,৫০৪ কোটি টাকায়। ফলে গত সেপ্টেম্বরে জনতা ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়ে ৩৩,৯২১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। জনতা ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শীর্ষ ১০ শিল্প গ্রম্নপের কাছে ব্যাংকটির ৫৫ শতাংশ ঋণ কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছে। প্রভাবশালী এসব গ্রাহক সময়মতো টাকা ফেরত না দেওয়ায় ব্যাংকটির তারল্য সংকট বাড়ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিদিন ১৮,০০০-২০,০০০ কোটি টাকা ধার করে ব্যাংকের নিয়মিত কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। সম্প্রতি সরকারের কাছে দেওয়া একটি চিঠিতে জনতার চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেছেন, 'জনতা ব্যাংকের ইতিহাসে এমন নাজুক অবস্থা আর কখনো হয়নি। ব্যাংকটি এখন গভীর সংকটে নিমজ্জিত। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে সম্প্রতি এক সভায়ও ব্যাংকের এমন নাজুক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরা হয়।