কভিড-পরবর্তী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চ্যালেঞ্জগুলো গত দুই-তিন বছরে কম-বেশি একই প্রকৃতিরই রয়েছে, তবে সময়ে সময়ে মাত্রাগত কিছু তারতম্য ঘটেছে। এসব বাধার অগ্রভাগে রয়েছে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতি। এমন প্রবণতার মধ্যে চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে জাতিসংঘ। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, ২০২৫ সালের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার হতে পারে ২ দশমিক ৮ শতাংশ। খবর এপি।
'ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক সিচুয়েশন অ্যান্ড প্রসপেক্টস ২০২৫' শিরোনামের প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয় গত বৃহস্পতিবার। এতে জাতিসংঘের অর্থনীতিবিদরা মন্তব্য করেছেন, ধীরগতির হলেও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি এবং ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার প্রত্যাশিত সবল পারফরম্যান্স এ ইতিবাচক পূর্বাভাসের প্রধান চালক। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), জাপান ও যুক্তরাজ্যে অর্থনীতি কিছুটা পুনরুদ্ধার হতে পারে।
গত বছরের জানুয়ারিতে জাতিসংঘ পূর্বাভাস দিয়েছিল, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতি ২ দশমিক ৪ শতাংশ সম্প্রসারণ হতে পারে। তবে হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুসারে, প্রবৃদ্ধির এ হার আরো বেশি ছিল, যা প্রায় ২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ চলতি বছরের জন্য একই হারে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, যা স্থিতিশীল অর্থনীতির আভাস দিচ্ছে। তবে এ পূর্বাভাস ২০২০ সাল অর্থাৎ প্রাক-মহামারী সময়ের ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় কম।
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ও নীতিমালা বিভাগের গেস্নাবাল ইকোনমিক মনিটরিং শাখার প্রধান শান্তনু মুখার্জি বলেন, 'স্থিতিশীল কিন্তু প্রত্যাশার তুলনায় নিম্ন প্রবৃদ্ধির সময়ে আছি আমরা।'
প্রাক-মহামারীর গড়ের তুলনায় কম প্রবৃদ্ধির প্রতিধ্বনিও পাওয়া যায় শান্তনু মুখার্জির মন্তব্যে। তিনি আরো বলেন, 'এটি হয়তো আগের বছরের মতো শোনাতে পারে। তবে প্রকৃতপক্ষে অর্থনীতির ইঞ্জিনের ভেতরে তাকালে দেখা যাবে যে অনেক কিছু সচল রয়েছে।'
প্রতিবেদনটি বলেছে, গত বছর ভোক্তা ও সরকারি খরচের কারণে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো পারফর্ম করেছিল শীর্ষ অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি ২০২৪ সালে ২ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। চলতি বছর তা কমে ১ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসতে পারে।